কর্মচারী নিজস্ব বেতনের ১২ শতাংশ ইপিএফ হিসাবে জমা করেন। আবার অন্য দিকে, ওই কর্মচারী যে সংস্থায় কাজ করেন, তারাও ওই একই পরিমাণ টাকা সংশ্লিষ্ট কর্মীর ইপিএফও অ্যাকাউন্টে জমা করে। আর এই পরিমাণের মাত্র ৮.৩৩ শতাংশই যায়। এই পরিস্থিতিতে যদি ১৫ হাজারের সীমা তুলে দেওয়া হয় এবং কারও মূল বেতন ২০ হাজার টাকা হয়ে যায়, তা-হলে পেনশনের পরিমাণও বেড়ে যাবে।
advertisement
আরও পড়ুন: এখানে বিনিয়োগ করুন, পড়াশোনা থেকে বিয়ে পর্যন্ত দুশ্চিন্তা থাকবে না!
এই মুহূর্তে কারা, কখন এবং কীভাবে এই সুবিধা নিতে পারবেন?
যদি কারওর বেসিক স্যালারি প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকার বেশি হয়, তা হলে তিনি নতুন পেনশন স্কিমের আওতায় আরও বেশি টাকা জমিয়ে রাখতে পারেন। তাই এখনও কেউ যদি নতুন পেনশন স্কিমে যোগ না দিয়ে থাকেন, তা-হলে হাতে আর মাত্র ৪ মাস সময় রয়েছে। অর্থাৎ নতুন পেনশন স্কিমে যোগদান করতে হলে পরবর্তী ৪ মাসের মধ্যেই তা করতে হবে। শুধুমাত্র যাঁরা ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইপিএফ-এর সদস্য হয়েছিলেন, তাঁরাই এই নতুন যোজনার আওতায় যোগ দিতে পারবেন।
এই নয়া স্কিমে যোগ দেওয়ার জন্য কি নিয়োগকারী কোম্পানির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে?
নতুন স্কিমে যোগ দিতে চাইলে কর্মী এবং নিয়োগকারী কোম্পানিকে একসঙ্গে যৌথ ভাবে ঘোষণা করতে হবে। অর্থাৎ কর্মীর পাশাপাশি কর্মী যে সংস্থায় কাজ করছেন, সেই সংস্থাকেও নয়া স্কিমে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করতে হবে। তবে যাঁরা ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বরের পরে ইপিএফ-এর সদস্য হয়েছেন, তাঁরা নতুন স্কিমে যোগ দিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: ফের বাড়ছে সোনা-রুপোর দাম ? দেখে নিন আজকে কত হল
এক জন কর্মী কি পেনশনের জন্য নিজের বেতনের অনেকটা অংশ জমিয়ে রাখতে পারেন?
অতিরিক্ত বেতনের জন্য ১.১৬ শতাংশ অতিরিক্ত টাকা দেওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অর্থাৎ বেতনের অতিরিক্ত অংশ রাখা অবৈধ। আর উপর আগামী ৬ মাসের মধ্যেই আইন করতে চলেছে সরকার। এখনও পর্যন্ত যাঁরা অতিরিক্ত টাকা দিয়েছেন, তাঁদের সেই পরিমাণের ভবিষ্যৎ কী হবে, সেই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
ব্যাপারটা ঠিক কী? সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করলে কী দাঁড়াবে?
২০ বা তার বেশি কর্মচারী রয়েছে, এমন কোম্পানির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য রয়েছে এই ইপিএফ আইনটি। আর এই আইন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক সুরক্ষার ৩টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়- এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ডস স্কিম, ১৯৫২ (ইপিএফ স্কিম), এমপ্লয়িজ পেনশন স্কিম ১৯৯৫ (ইপিএস স্কিম) এবং এমপ্লয়িজ ডিপোজিট লিঙ্কড ইনস্যুরেন্স স্কিম ১৯৭৬।
ইপিএফ স্কিমের অধীনে কর্মচারী এবং নিয়োগকর্তা বা নিয়োগকারী কোম্পানি প্রতি মাসে মূল বেতনের ১২ শতাংশ - ১২ শতাংশ জমা করে থাকে।
আরও পড়ুন: শিশুদিবসে এই ৬ খাতে বিনিয়োগ করুন, সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে হবে না!
নিয়োগকারী কোম্পানির ১২ শতাংশ শেয়ারের মধ্যে ৮.৩৩ শতাংশ ইপিএস স্কিমের অধীনে পেনশন তহবিলে চলে যায়। গোটা বিষয়টি এই ইপিএস স্কিমের অধীনে আসা পেনশন তহবিলের সঙ্গে যুক্ত।
২০১৪ সালে ইপিএস স্কিমে একটি বড় পরিবর্তন আনা হয়েছিল। সেটি হল - ইপিএস স্কিমে অবদানের জন্য সর্বোচ্চ বেসিক স্যালারি প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বরের পরে ইপিএফ-এর নতুন সদস্যরা শুধুমাত্র মাসিক ১৫ হাজার টাকার সর্বাধিক বেসিক স্যালারি অনুসারে ইপিএস স্কিমে নিজেদের অবদান রাখতে সক্ষম হবেন। আর যাঁরা ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইপিএফ-এর সদস্য হয়েছেন, তাঁরা নিজেদের বেতনের হিসেব অনুযায়ী বেশি টাকা ইপিএস-এ অবদান দিতে পারবেন।
উচ্চ বেতন অনুযায়ী, ইপিএস স্কিমে অবদানের ক্ষেত্রে কোনও বাধ্যবাধকতা থাকবে না। তবে কেউ চাইলে তা স্বেচ্ছায় করতেই পারবেন। ইপিএস স্কিমে টাকা রাখার জন্য এই সব সদস্যদের মাসিক ১৫ হাজার টাকার বেশি বেতনের অতিরিক্ত ১.১৬ শতাংশ অবদান হিসেবে দিতে হবে।
এই ফয়সালার বিরুদ্ধে বিভিন্ন হাই কোর্টে মামলা চলেছে। তিনটি হাই কোর্টে রায় স্থগিত রাখা হয়েছে। অবশ্য হাই কোর্টের রায়ে কিছুটা পরিবর্তন এনে সরকারের সিদ্ধান্তই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট।
এখন পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে?
ইপিএফও আধিকারিকেরা সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করছেন। শীঘ্রই ইপিএফও-র তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হতে পারে।