আসলে এর কোনও সহজ উত্তর হয় না। কারণ পরিস্থিতি এক একজনের ক্ষেত্রে এক একরকম হতে পারে। সেক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা দরকার।
আরও পড়ুন: কেরিয়ার বদলাতে চান? রইল কিছু জরুরি টিপস!
১. স্বচ্ছলতা এখানে একটা বড় বিষয়। কারও অর্থনৈতিক দায়ের থেকে যদি তাঁর সম্পদ বেশি হয়, তবে তিনি স্বচ্ছল। ধরা যাক কারও ৩০ লক্ষ টাকার গৃহঋণ রয়েছে। এদিকে তাঁর হাতে রয়েছে ৫০ লক্ষ টাকা। তাহলে তিনি যে কোনও সময় ঋণ মিটিয়ে দিতে পারেন। জরুরি পরিস্থিতিতে চাকরি হারালেও সমস্যা নেই। সেক্ষেত্রে তিনি বিনিয়োগেই উৎসাহী হবেন।
advertisement
কিন্তু যদি অধিত সম্পদের থেকে অর্থনৈতিক দায় বড় হয়, তাহলে ঋণ পরিশোধের দিকেই নজর দেওয়া উচিত। বিশেষত উচ্চ-সুদের ঋণ, যেমন ক্রেডিট কার্ড, গৃহঋণ ইত্যাদি অগ্রাধিকার পাবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ এটা করে থাকেন।
আবার যদি সুবিধা অসুবিধার কথা বিবেচনা করা হয়, তাহলে বিষয়টা অন্যরকম হতে পারে। ধরা যাক, ২০ বছরের জন্য ৭ শতাংশ হারে ৫০ লক্ষ টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। যদি কেউ শুরুর দিকে সিঙ্গল ইএমআই (৩৮,৭৬৫ টাকা) প্রি-পেমেন্ট করেন, তাহলে ঋণের মেয়াদ তিন মাস কমে যাবে, প্রায় ১.৫ লক্ষ টাকা সুদ কমবে। কিন্তু যদি একই টাকা ইনডেক্স ফান্ডে বিনিয়োগ করা হয় এবং তা যদি ২০ বছরের জন্য ১২ শতাংশ রিটার্ন দেয়, তাহলে ৩.৭৩ লক্ষ টাকা সাশ্রয় করা যাবে।
আরও পড়ুন: SBI vs Post Office Term Deposit - কোনটায় কেমন সুদের হার? কোথায় বিনিয়োগ করলে লাভ
সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে কোনটা ভাল তা নির্ভর করছে কোনও ব্যক্তি ঠিক কতটা অর্জন করতে চান তার উপর।
২. নিজের অগ্রাধিকার বুঝতে হবে। জরুরি তহবিলের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার হল পর্যাপ্ত সঞ্চয়, স্বাস্থ্য ও জীবন বিমা এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ। এসব চাহিদাগুলি পূরণ হওয়ার পরই ঋণ পরিশোধের দিকে নজর দিতে হবে।
৩. গৃহ ঋণের উপর আয়কর ছাড় পাওয়া যায় ঠিকই। কিন্তু সেদিকে নজর দেওয়া ঠিক নয়। সুদের হার বেশি হলে অবশ্যই ঋণ পরিশোধ করে দেওয়া প্রয়োজন। ঋণের প্রাথমিক পর্যায়ে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইএমআই-এর পিছনে টাকা খরচ করার চেয়ে পিএফ-এর মতো জায়গায় বিনিয়োগ করাই ভাল।
৪. নগদ জোগান যদি সীমিত হয়, এবং তারপরেও যদি কেউ ঋণ পরিশোধ করে দিতে চান, তাহলে ইএমআই-এর ক্ষেত্রে কয়েক হাজার টাকা বাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। এটি ‘মাইক্রো প্রি-পেমেন্ট’ হিসাবে কাজ করে। ভবিষ্যতে সঞ্চয় বাড়বে। যা বিনিয়োগ করলে আর্থিক পরিস্থিতি শক্তিশালী হবে। ‘মাইক্রো প্রি-পেমেন্ট’ দ্রুত ঋণ পরিশোধে সাহায্য করবে।
৫. নিজের জীবন এবং প্রয়োজনীয় অর্থ কী ভাবে পরিচালনা করবেন তার পরিকল্পনা আগে থেকেই করে নিতে হবে। যদি কারও অবসর আসন্ন হয়, তবে প্রি-পেমেন্ট করাই ভাল। এমনকী চাইলে যে কোনও মানুষ অবসরের আগে গৃহঋণ ‘প্রি-ক্লোজ’ও করে দিতে পারেন।