তবে অনেকেই হয়তো জানেন না যে, উপহার কিন্তু ট্যাক্স পরিকল্পনা কিংবা কর ফাঁকিরও অংশ হতে পারে। যদি আইনের ঘেরাটোপ মেনে কর পরিকল্পনা করা হয়, তাহলে অসুবিধা নেই। কিন্তু ট্যাক্স ফাঁকি দিলে শাস্তিও হতে পারে। ১৯৫৮ সালের এপ্রিল মাসে সরকারের তরফে প্রথম উপহার কর আইন, ১৯৫৮ বা জিটিএ চালু করা হয়েছিল। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল, কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে উপহার দেওয়া এবং নেওয়ার উপর কর বসানো হয়। উপহার হিসেবে নগদ অর্থ, ডিমান্ড ড্রাফ্ট, ব্যাঙ্ক চেক অথবা যে কোনও মূল্যবান উপহারই এর আওতায় পড়বে।
advertisement
আরও পড়ুন: এই দশটি পথেই হতে পারে লক্ষ্মী লাভ, তাও কোনও বিনিয়োগ ছাড়াই!
যদিও ১৯৮৮ সালের অক্টোবরে জিটিএ বাতিল করা হয়েছিল এবং সমস্ত উপহার ট্যাক্স-ফ্রি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ২০০৪ সালের আয়কর বিধানে নতুন করে ফের উপহার কর চালু করা হয়েছিল। তাই ভারতের মতো দেশে উপহারের ক্ষেত্রে প্রাথমিক ট্যাক্সেশন সম্পর্কে বোঝা অত্যন্ত জরুরি। যাতে অপরিকল্পিত ট্যাক্স আউটফ্লো এড়ানো সম্ভব হয়।
আরও পড়ুন: শসা চাষের বিশেষ পদ্ধতি! রাজস্থানের কৃষক রাতারাতি ধনী হলে কপাল খুলবে সবারই!
ধরা যাক, কোনও এক বউমা নিজের শাশুড়ি মাকে কিছু সোনার গয়না উপহার দিতে চাইছেন। আর সেই গয়নাগুলি বংশপরম্পরায় পেয়েছিলেন সেই বউমা। তাহলে সেক্ষেত্রে কি কোনও কর ধার্য হবে? এই প্রসঙ্গেই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ। আয়কর আইনের আওতায় কিছু নির্দিষ্ট আত্মীয়-পরিজনকে অস্থাবর সম্পত্তি (এক্ষেত্রে সোনার গহনা) উপহার হিসেবে দেওয়ার উপর কর আরোপ করা হয় না। যার ফলে সেই বউমা নিজের শাশুড়িকে সোনার গয়না উপহার দিতে চাইলে কর সংক্রান্ত দায় তাঁর উপর চাপবে না। তবে যদি সেই শাশুড়ি বউমার থেকে পাওয়া উপহারের গয়না বিক্রি করতে যান, তাহলে তাঁকে কিন্তু ধার্য কর প্রদান করতে হবে।
আবার ২০১৭-র সংশোধিত আইন অনুযায়ী, কারও থেকে উপহার হিসেবে কোনও কিছু প্রাপকের হাতে এলে তা অন্যান্য উৎস থেকে আয় সংক্রান্ত শিরোনামের আওতায় সাধারণ কর হারেই করযোগ্য হবে। দেখে নেওয়া যাক, সেই সংক্রান্ত নিয়ম।
কোনও রকম গণনা ছাড়া যে কোনও পরিমাণ অর্থ উপহারে পেলে ৫০০০০-এর বেশি টাকার ক্ষেত্রে অর্থের পুরো পরিমাণের উপর কর দিতে হবে।
কোনও রকম গণনা ছাড়া যে কোনও স্থাবর সম্পত্তি (জমি, দালান প্রভৃতি)-র ক্ষেত্রে যদি স্ট্যাম্প ডিউটি মূল্য ৫০০০০-এর বেশি হয়, তা-হলে যে পরিমাণ অর্থ এসেছে, তার উপর কর ধার্য হবে।
অপর্যাপ্ত বিবেচনার জন্য যে কোনও পরিমাণ অস্থাবর সম্পত্তির স্ট্যাম্প ডিউটি মূল্য যদি ৫০০০০-এর বেশি হয়, তাহলে ট্যাক্সের হিসেব করতে হবে এই কায়দায়। স্ট্যাম্প ডিউটির মূল্য থেকে বাদ দিতে হবে বিবেচনার পরিমাণ।
গণনা বা বিবেচনা ছাড়া যে কোনও পরিমাণ সম্পত্তির এফএমভি যদি ৫০০০০-এর উর্ধ্বে হয়, তাহলে করযোগ্য পরিমাণ হবে এই ধরনের এফএমভি-ই।
গণনা বা বিবেচনার জন্য স্থাবর সম্পত্তি ব্যতীত অন্য সম্পত্তির ক্ষেত্রে যদি এফএমভি দ্বারা বিবেচনার ৫০০০০-এর উর্ধ্বে চলে যায়, তাহলে করযোগ্য পরিমাণের হিসেব করা হবে এই উপায়ে। এফএমভি থেকে বাদ দিতে হবে বিবেচনার পরিমাণ।