স্বল্প রোজগারে কৃষ্ণা এবং রিক্তা দুই মেয়েকে কোনরকমে সামান্য পড়াশোনা শিখিয়ে বিয়ে দিতে সমর্থ্য হয়েছিলেন বড় মেয়ে রিক্তাকে। এরপর তিনি গত হন, প্রায় ২৫-৩০ বছর আগে। স্ত্রী হেনা সরকারও মারা যান। এরপর থেকে কৃষ্ণা দেবী একাই থাকেন পৈত্রিক ভিটাতে। উপার্জন বলতে দু’চারটে ছাগল প্রতিপালন, আর বর্তমানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ভাতা হিসেবে প্রতি মাসে এক হাজার টাকা আর বিনামূল্যের সামান্য রেশন সামগ্রী।
advertisement
এই দিয়েই কোনও মতে চলে একার সংসার, বাড়িঘর ভেঙে পড়ার উপক্রম হলেও সারানোর অর্থ নেই, শৌচালয়ের নেই দরজা। তবে সম্প্রতি শান্তিপুর পৌরসভার বিনামূল্যে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছানোর প্রকল্প পৌঁছেছে তাঁর বাড়ি। কিন্তু বিদ্যুতের আবেদন করলেই তো আর হল না দরকার সরঞ্জাম কেনা এবং সামান্য নগদ অর্থ জমা দেওয়া।
বাড়ির পাশেই তৃণমূল কংগ্রেস নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক জয়ন্ত ঘোষ থাকেন। তিনি ওই এলাকাতে গত ২৮ জানুয়ারি ওরিয়ান্টাল অ্যাকাডেমিতে বসা দুয়ারে সরকারে ওই বৃদ্ধার বিদ্যুৎ সংযোগের আবেদন করিয়ে দেন। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকেও বৃদ্ধার পরিস্থিতি খোঁজখবর নিয়ে খুশির আলোক প্রকল্পে তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করিয়ে মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
এর মধ্যেই জয়ন্ত বাবু নগদ অর্থ জমা দিয়ে সরঞ্জাম কিনে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে কর্মীরা এসে বৈদ্যুতিক সংযোগ করে দেন। অন্ধকার ঘুচে তাদের ছোটবেলার বর্তমানে বোনের ঘরে এই প্রথম জ্বলা আলো দেখতে হবিবপুরে বিবাহ হওয়া দিদি রিক্তা সেনও উপস্থিত হন। দিদি এবং বোন দুজনেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দুয়ারে সরকার বিদ্যুৎ বিভাগ এবং তৃণমূল নেতৃত্ব জয়ন্ত বাবুর কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন। তবে তাঁরা শৌচাগার এবং একটি সরকারি আবাস যোজনার ঘর পাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সকালে ঘুম থেকে উঠেই এই ‘কাজটি’ করছেন না তো…? বিপজ্জনক! জীবনে চরম ‘বিপদ’ ডেকে আনতে পারে
প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা জয়ন্ত ঘোষ জানান, বর্তমানে কাউন্সিলার পম্পা বিশ্বাস রাজবংশী এখনো তার ওয়ার্ডের জন্য ঘরের বরাত পাইনি পৌরসভা থেকে,, তবে তাঁর আগে কেন সম্ভব হয়নি? সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন হয়তো নগদ অর্থ জমা দেওয়ার সহযোগিতার লোক পাওয়া যায়নি তবে আগামীতে নিশ্চয়ই চেষ্টা করা হবে। আজকে শুধু বিদ্যুৎ পাওয়ার ডিপোজিট করা নগদ অর্থ কিংবা সরঞ্জাম কিনে দেওয়া নয় গরম পড়ার আগেই একটি পাখার ব্যবস্থা করবেন।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে সংযোগ দেওয়া কর্মী অরিজিৎ বিশ্বাস জানান, বৃদ্ধার পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে একটি আলো এবং একটি ফ্যানের সংযোগ ছাড়া আর কিছুতেই হয়তো বিদ্যুৎ খরচ হবে না তাই ৭৫ ইউনিটের কম বিদ্যুৎ খরচ হওয়ার কারণে তাকে বিদ্যুৎ বিল বাবদ কিছুই দিতে হবে না।
Mainak Debnath