সুন্দর পিচাইয়ের পুরো নাম পিচাই সুন্দররাজন। দক্ষিণ ভারতের তামিলানাড়ুর মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সুন্দর পিচাই শৈশবে সেরকম সুযোগ-সুবিধা পাননি। কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমেই এগোতে হয়েছে তাঁকে। তারপর ২০১৫ সালে তিনি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইটি কোম্পানি গুগল-এর সিইও (CEO) পদে আসীন হয়েছিলেন। আর সুন্দর পিচাই-ই ছিলেন প্রথম ভারতীয়, যিনি গুগলের মতো সংস্থার সবথেকে বড় দায়িত্বভার পেয়েছিলেন। তাঁর এই সাফল্যের যাত্রাপথ সহজ ছিল না, আর তাই তা অন্যদেরকে অনুপ্রেরণা জোগায়।
advertisement
আরও পড়ুন: উচ্চ মাধ্যমিক ২০২৩-এর পরীক্ষা শুরু কবে? জানুন বিস্তারিত দিনক্ষণ
স্কলারশিপেই বিদেশে পড়াশোনার সুযোগ:
১৯৭২ সালের ১০ জুন তামিলনাড়ুর রাজধানী শহর চেন্নাইতে জন্মগ্রহণ করেন সুন্দর পিচাই। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সুন্দর পিচাইয়ের বাবা একজন ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তবে ছেলের উচ্চশিক্ষার খরচ জোগানোর মতো আর্থিক সামর্থ্য তাঁর ছিল না। ১৯৯৩ সালে সুন্দর পিচাই সালে আইআইটি খড়গপুর থেকে বি-টেক করেন। এরপরেই উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি দেন সুন্দর পিচাই। সেখানে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে এমএস এবং ওয়ার্টন স্কুল থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। আর এই ওয়ার্টন স্কুলে পড়ার সময়ই দুটি বৃত্তি বা স্কলারশিপ পেয়েছিলেন সুন্দর।
আরও পড়ুন: নাতি ধরল ফোন, দাদুর অ্যাকাউন্ট থেকে নিমেষে উধাও হাজার হাজার টাকা!
২০১৫ সালে গুগলের সিইও:
২০০৪ সালে গুগলে যোগ দিয়েছিলেন সুন্দর পিচাই। এরপর সেখানে তিনি গুগল টুলবার ও ক্রোম-কে আরও উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। আর এর কয়েক বছরের মধ্যেই গুগল ক্রোম বিশ্বের দরবারে সবথেকে জনপ্রিয় ইন্টারনেট ব্রাউজার হয়ে ওঠে। এরপর ২০১৪ সালে গুগল-এর সমস্ত প্রোডাক্ট এবং প্ল্যাটফর্মের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তাঁর উপরেই সঁপে দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ গুগল টুলবার, ক্রোম, ডেস্কটপ সার্চ, গ্যাজেটস, গুগল প্যাক, গুগল গিয়ারস, ফায়ারফক্স এক্সটেনশন প্রভৃতির দায়িত্ব পড়েছিল এই ভারতীয় সন্তানের উপরেই। আর এর এক বছর পরেই তৈরি হয় ইতিহাস, সেই সময় গুগল-এর সিইও পদের দায়িত্বে আসেন সুন্দর পিচাই।
বাবার এক বছরের বেতন খরচ করে আমেরিকা পাড়ি:
২০২০ সালে ইউটিউব ডিয়ার ক্লাস ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সুন্দর পিচাই বলেছিলেন, "আমি ১০ বছর বয়স পর্যন্ত টেলিফোনের সুবিধা পাইনি। এমনকী আমেরিকায় না-আসা পর্যন্ত কম্পিউটারে নিয়মিত কাজ করার সুযোগও পেতাম না। আবার টিভিতে একটাই মাত্র চ্যানেল দেখার সুযোগ পেতাম।” এভাবে স্মৃতির পাতা হাতড়ে সুন্দর পিচাই এক বার বলেছিলেন, "আমি যখন আমেরিকায় আসি, তখন এখানে আসতে আমার বাবাকে তাঁর গোটা বছরের বেতনটাই খরচ করতে হয়েছিল। আর তার জন্যই আমি তখন আমি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমেরিকায় আসার সময়ই আমি প্রথম বার প্লেনে চড়ি।” মার্কিন মুলুকের প্রথম দিককার জীবনের স্মৃতিচারণ করে সুন্দর আরও বলেন, “আমেরিকায় সব কিছুর দাম বড্ড বেশি। ভারতে বাড়িতে ১ মিনিটের একটা ফোন কল করতেও আমাকে ২ মার্কিন ডলারের বেশি খরচ করতে হত।”