পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাটের এক যুবক সৌম্যদীপ দাস। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। প্রথাগত শিল্পের প্রশিক্ষণ না থাকলেও ছোটবেলা থেকেই শিল্পমন সবকিছু নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ভালবাসত। আর সেই পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রথম আসে বাড়ির দাদা দিদিদের বিয়ের কার্ড নিজের হাতে বানানো। তারপর তার ভাবনায় আসে আয়ের মাধ্যম হতে পারে এসব। তারপর থেকেই শুরু বিয়ে বা বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র হাতে বানানোর। বিবাহ-সহ বিভিন্ন ধরণের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র তৈরি করে সাফল্য পেয়েছেন। তাঁর বানানো বিয়ে বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র রীতিমতো অবাক করছে সকলকেই। তাঁর বানানো বিয়ের আমন্ত্রণপত্র দেখে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত ভারতের জাতীয় পুরুষ দলের ক্রিকেটাররা।
advertisement
আরও পড়ুন: ৬ মাসেই ফলবে গাদা গাদা কলা! আয় হবে অঢেল, চাষিদের জীবন বদলাতে পারে ‘এই’ বিশেষ চারা, বিতরণ করছে দফতর
এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের যুবক সৌম্যদীপ দাস জানান, “প্রথম প্রথম বাড়ির দাদা দিদিদের বিয়ের কার্ড-সহ মেনু কার্ড বানিয়েছিলাম। সেইসব কার্ডে ছিল সাহিত্য ও সিনেমার প্রিয় সংলাপ। আমন্ত্রণপত্র বা কার্ডগুলিতে বাঙালিয়ানার ছোঁয়া ছিল ষোলআনা। সেই থেকে শুরু তারপর সেই হাতে বানানো কার্ড যে রোজগারের মাধ্যম হয়ে দাঁড়াবে ভাবতে পারিনি। আমার বানানো প্রতিটা আমন্ত্রণপত্রে ষোলআনা বাঙালি আনার ছোঁয়া থাকে। বাঙালির শুভ অনুষ্ঠানের নানা জিনিসপত্র হয়ে ওঠে আমন্ত্রণপত্র তৈরির মূল উপকরণ। কড়ি থেকে গোটা হলুদ, সুতো থেকে শাঁখা পলা, বিয়ের মুকুট, মাদুর চুমকি সাহ আরও উপকরণ দিয়েই কার্ড বানানো হয়। মানুষের চাহিদা অনুযায়ী কার্ড বানিয়ে দেওয়া হয়।” বর্তমানে এলাকার রনিতা সঞ্জনার মতো আরও কয়েকজন সৌম্যদীপের সঙ্গে কাজ করছেন।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদা আমন্ত্রণপত্র বানান। একজন কেউ কার্ড বানাতে দিলে, সেই কার্ডটা শুধুমাত্র তার অনুষ্ঠানের জন্য বানানো হয়। পরবর্তীতে সেই একই ডিজাইন রিপিট করা হয় না। প্রতিদিন হাতে তৈরি এই স্পেশ্যাল বিয়ে বা নানা অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র বানানোর অর্ডার আসছে। কিন্তু হাতে বানানো ষোলআনা বাঙালিয়ানার এই আমন্ত্রণপত্র তৈরি করা রীতিমতো সময় সাপেক্ষ। তাই চাইলেও খুব বেশি অর্ডার নিতে পারছে না। বাঙালিয়ানায় মোড়া বিয়ের কার্ড কিংবা আমন্ত্রণপত্র সর্বনিম্ন দাম ২০০ টাকা। প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে কখনওই হস্তশিল্প শেখেনি, তবু তার হাতে বানানো কাজের প্রশংসা করেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। তার বানানো বিয়ের কার্ড পৌঁছেছে আন্তর্জাতিক মানুষের কাছে। সৌম্যদীপের শিল্প মনন, খুঁজে নিয়েছে বিকল্প পেশা।





