নিজের অবস্থার পরিবর্তন ঘটানোর ইচ্ছেটাই একদিন তাঁকে নতুন পথে হাঁটতে শেখায়। ২০২০ সালের লকডাউনের সময়, যখন গোটা দেশ থমকে গিয়েছিল, তখনই কাঞ্চন প্রামাণিক খুঁজে পান নতুন আশার দিশা। একদিন মোবাইল ফোনে ইউটিউবে মোমবাতি তৈরির ভিডিও দেখে তাঁর মাথায় আসে মোমবাতি তৈরির ব্যবসার কথা। সেই ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে শুরু করেন মোমবাতি তৈরির কাজ। হাতে-কলমে শেখেন কীভাবে গলানো মোমকে ছাঁচে ফেলে নানা আকারে রূপ দেওয়া যায়, কীভাবে রং ও সুগন্ধ মিশিয়ে আকর্ষণীয় পণ্য বানানো যায়।
advertisement
প্রথম দিকে সমস্ত কাজই করতেন একা, মোম কেনা, গলানো, রঙ মেশানো, ছাঁচে ফেলা, শুকানো, প্যাকেট করা সবই নিজে হাতে। কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁর মোমবাতির গুণমান এবং ডিজাইন জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে। চাহিদা বাড়ে বাজারে। ফলে আজ তাঁর কারখানায় ছয়জন কর্মচারী নিয়মিত কাজ করেন, যাঁদের জন্য এই উদ্যোগই এখন জীবিকার প্রধান উৎস। পূর্ব বর্ধমানের কাঞ্চন প্রামাণিক বলেন, “এভাবে এগোতে পারব ভাবিনি। প্রথমে আমি, আমার স্ত্রী এবং শ্বশুর মশাই মিলে শুরু করেছিলেন। এখন বেশ কিছুজন কাজ করে। আমার তৈরি মোমবাতি বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে। কালীপুজোর আগে ভাল চাহিদা রয়েছে।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
কালীপুজোর মরশুমে মোমবাতির চাহিদা থাকে তুঙ্গে। এই সময় তাঁর কারখানায় কাজ চলছে রমরমিয়ে। প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে প্রায় ২০০ কেজি মোমের মোমবাতি। দাম শুরু এক টাকা থেকে, আর সবচেয়ে বড় মোমবাতির দাম ৪০০ টাকা, যার ওজন প্রায় দুই কেজি। তাঁর তৈরি মোমবাতি আজ কাটোয়া শহর ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে ভিন জেলার দোকানেও। যেখানে একসময় জীবনে অন্ধকার ছিল, সেখানে আজ মোমবাতির আলোয় যেন সত্যিই উজ্জ্বল হয়েছে কাটোয়ার কাঞ্চন প্রামাণিকের জীবন।