কোথা থেকে যাত্রা শুরু আর কোথায় যাত্রা শেষ হবে, অর্থাৎ সেই স্টেশনগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত গবেষণা প্রয়োজন। তবেই টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। আগের তুলনায় ট্রেনের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। কিন্তু পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যাত্রী সংখ্যাও। ফলে ওয়েটিং লিস্ট আরও দীর্ঘ হয়েছে। এই অবস্থায় পছন্দমতো সময়ে ট্রেনের টিকিট পেতে যাত্রীকে সত্যিই স্মার্ট এবং ভাল ভাবে সমস্ত বিষয়ে অবহিত থাকতে হবে।
advertisement
পিএনআর স্টেটাস কী: পিএনআর হল সংখ্যা। দশ সংখ্যার একটি ইউনিক নম্বর। প্রতিটা বুক করা ট্রেনের টিকিটে এই সংখ্যাটা থাকে। অনলাইন বা অফলাইন যেভাবেই টিকিট কাটা হোক না কেন, টিকিটে অবশ্যই এই নম্বর থাকবে। তবে বুক করা টিকিটে শুধু পিএনআর নম্বর নয়, পিএনআর স্টেটাসও থাকে। যাত্রীর কাছে কনফার্ম টিকিট থাকলে এই স্টেটাসটা ‘সিএনএফ’ হিসেবে দেখানো হবে। ‘আরএসসি’ টিকিট থাকলেও একইভাবে উল্লেখ থাকবে। এখন যাত্রী টিকিট কাটার পর যদি পিএনআর স্টেটাস ওয়েটিং লিস্ট হয় তাহলে একটা নম্বর সহ সেটা ‘ডব্লিউএল’ স্টেটাস বোঝাবে।
‘রেল যাত্রী’-র মাধ্যমে পিএনআর স্টেটাস চেক: ‘রেল যাত্রী’ অ্যাপ, ওয়েবসাইট কিংবা মোবাইল সংস্করণের মাধ্যমে পিএনআর স্টেটাস চেক করা যায়। এ জন্য অন্য কাউকে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন নেই। দু-তিনটি ক্লিক করলে যাত্রী নিজেই পিএনআর স্টেটাস চেক করতে পারবেন। পিক সিজনে বেড়াতে গেলে কীভাবে কনফার্ম টিকিট হাতে পাওয়া যায় সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের কিছু টিপস এখানে রইল।
বিকল্প ট্রেন এবং সময় সম্পর্কে আপ টু ডেট থাকতে হবে: অনেকে ভাবেন তাঁর পছন্দের জায়গার স্টেশন এবং ট্রেন সম্পর্কে সব তথ্যই তাঁর হাতের মুঠোয়। ব্যাপারটা এত সোজা নয়। প্রতিদিন কিছু না কিছু পরিবর্তন হয়েই চলেছে। তাই সব তথ্য মুঠোয় ভরা কার্যত অসম্ভব। বরং আপ টু ডেট থাকতে হবে। জনপ্রিয় রুটে গড়ে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ ট্রেন চলে। কিন্তু সমস্যা হল, এই ট্রেনগুলো কবে ছাড়বে তার ঘোষণা হয় মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে। তাই আপ টু ডেট থাকা ছাড়া আর কোনও পথ নেই।
আরও পড়ুন: স্পোর্টি লুকের ছোঁয়া নিয়ে ভারতে আসছে মারুতির নতুন মিনি SUV, ২০২৩ মাতাবে কি এই গাড়ি-ই?
দিনের কোন সময় বা সপ্তাহের কোন দিন গুরুত্বপূর্ণ: ডেটা বলছে, শুক্রবার এবং রবিবারের ওয়েটিং লিস্ট সবচেয়ে বেশি হয়। সোমবার কম। তাই ভ্রমণের দিন অদলবদল সম্ভব কি না দেখতে হবে। একইভাবে সকালের ট্রেনের তুলনায় বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টায় ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলো ধরার ঝোঁক যাত্রীদের বেশি থাকে। ভ্রমণের সূচিতে এই বিষয়টাও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সকালের ট্রেনে টিকিট পাওয়া সহজ হলে সেই সুযোগ না নেওয়াই বোকামি। রেল যাত্রী অ্যাপ সহ বেশ কিছু অ্যাপ রয়েছে যেখানে ট্রেনের সময়সূচীর সঙ্গে টাইমিং প্যাটার্নও (দিন/সপ্তাহ অনুযায়ী) দিয়ে দেয়। সেটা দেখে নিলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
স্টেশনের জনপ্রিয় গন্তব্য কোনটি: মাল্টিপ্লেক্সে যাঁরা যান তাঁরা জানেন, জনপ্রিয় শোয়ের টিকিট পাওয়া মুশকিল। একটা নির্দিষ্ট স্টেশনের ক্ষেত্রেও এই কথাটা খাটে। অনেকেই মনে করেন, যে কোনও স্টেশন থেকেই সব জায়গায় যাওয়া যায়। কিন্তু বাস্তবে এমন কিছু স্টেশন আছে, তার ট্র্যাফিক দৃষ্টিকোণ আলাদা। সেখানকার টিকিটি পাওয়া শক্ত। যেমন নয়াদিল্লি স্টেশন থেকে পটনা জংশন। এই ট্রেনে সবসময়ই বিশাল ভিড় হয়। টিকিট পাওয়া খুব কঠিন।
যাত্রা পথের কোন স্টেশনে সবচেয়ে বেশি যাত্রী ওঠেন বা নামেন: ট্রেন যাত্রা বিমানের মতো নয়। স্টেশনে থামতে থামতে যায়। যাত্রীরা ওঠে নামে। কিন্তু সব স্টেশনে যাত্রী ওঠানামার বহর একই রকম থাকে না। কোনও স্টেশনে বেশি, কোনও স্টেশনে কম। তাই ট্রেন বেছে নেওয়ার সময় কোন স্টেশন থেকে উঠলে ভিড় কম হবে সেটা দেখাও গুরুত্বপূর্ণ।
এবং সবার শেষে, টিকিট এখনও যদি ওয়েটিং লিস্টে থাকে: আশাহত হওয়ার মতো কিছু হয়নি। রেল যাত্রীরা বেশিরভাগ সময়ই অনিশ্চিত পিএনআর স্টেটাস দেখে উদ্বেগে কাটান। যাত্রার সম্ভাবনাও অনিশ্চিত হয়ে যায়। তবে একটা প্যাটার্ন এবং অ্যালগরিদম অনুসরণ করলে পিএনআর নিশ্চিতকরণের নির্ভূল পূর্বাভাস দেওয়া যায়। রেল যাত্রী’ অ্যাপ ব্যবহার করে এই ধরনের সম্ভাবনা নিশ্চিত করা যায়।