প্রাচীনকালে এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই বনভোজনের রীতি প্রচলিত রয়েছে। কালের নিয়মে সেই রাজাও নেই, রাজত্ব নেই। তবে থেকে গিয়েছে রীতিনীতি। যদিও রাজার পাঠ উঠে যাওয়ার পর এমন বনভোজন বন্ধ হয়ে যায়। পরে গৌরাঙ্গ মঠ এই মন্দিরের দায়িত্ব নেওয়ার পর ফের রীতি মেনে শুরু হয় বনভোজন অনুষ্ঠান। বর্তমানে তা আরও জাঁকজমকপূর্ণ হয়েছে। যোগ হয়েছে গৌড়ীয় রীতিনীতি। আর প্রাচীন সেই রীতি মেনেই ইংরেজি বছরের প্রথম দিন মন্দিরের পাশের জঙ্গলে ভগবানকে নিয়ে ভক্তদের হয় বনভোজন। এই দিন একেবারেই নির্দিষ্টভাবে ধার্য, তবে কোন কোন বছর একাদশী পড়লে দিনের পরিবর্তন হয়, সেক্ষেত্রে বনভোজন হয় ২ জানুয়ারি।
advertisement
আরও পড়ুন - নতুন বছরের শুরু হতেই ভিড় বাড়ছে তারাপীঠ, কঙ্কালীতলায়! সমস্যা এড়াতে আগেই সেরে ফেলুন এই কাজ
বছরের প্রথম দিনে বনভোজনের ক্ষেত্রে আরও এক প্রাসঙ্গিকতার কথা জানা গিয়েছে গৌড়ীয় মঠের অধ্যক্ষ শ্রী ভক্তি বারিদী ত্রিদন্ডী মহারাজ মুখ থেকে। জানা যায়, এই দিনেই ২০০৭ সালে হেতমপুরের রাজা মাধবী রঞ্জন চক্রবর্তী তাদের হাতে মন্দির ও দেবতাদের সেবার দায়িত্ব তুলে দেন। সে কারণেও এই দিনটাকে একটু আলাদা ভাবে উপভোগ করা হয়।
আরও পড়ুন - Weather Update: হু হু করে নামছে তাপমাত্রা! ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়া নবাবদের শহর
বনভোজনে মূল চার রকম পদ থাকলেও ভক্তদের দেওয়া নানান পদে ভোগের সংখ্যা বাড়তেই থাকে, তা দাঁড়ায় প্রায় ৫৫-৬০ ধরনের। মূল চার রকম পদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সাদা অন্ন, পুষ্পান্ন, খিচুড়ি অন্ন, পরমান্ন। এছাড়াও থাকে নানা ধরনের মিষ্টি বা মিষ্টান্ন। একেবারেই রাজকীয় ভাবে এদিন ভগবান জগন্নাথ, বলরাম, শুভদ্রা, শ্রীকৃষ্ণ, গোপালজি ও বনমালীকে ব্যান্ড, হরিনাম, সংকীর্তনের মধ্য দিয়ে জাঁকজমকভাবে মন্দির পরিক্রমা করার পর নিয়ে যাওয়া হয় জঙ্গলে। রীতি মেনে দিনভর চলে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান। আর বনভোজন শেষ হলে একইভাবে আবার ফিরিয়ে আনা হয় মূল মন্দির প্রাঙ্গনে। নতুন বছরের প্রথম দিন অন্যরকম বনভোজনের যোগ দিতে দুর-দুরন্ত থেকে ভক্তরা ছুটে আসেন।প্রসঙ্গত, গত দুবছর করোনার কারণে সরকারি বিধি-নিষেধ মেনে বনভোজন ও অন্যান্য অনুষ্ঠান বন্ধ রেখেছিল গৌড়ীয় মঠ কর্তৃপক্ষ।
Madhab Das