সূত্র মারফত জানা যায় সুরজিৎ শর্মা নামে ওই ব্যক্তি বেশ কয়েকদিন ধরেই বাঁকুড়া আদালতের আইনজীবীদের কাছে নিজেকে আইনজীবী বলে পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতেন। তাকে সন্দেহ হওয়ায় বাঁকুড়ার আদালতের আইনজীবীরা নজরে রাখছিলেন। জানা যায় তিনি শুধু বাঁকুড়া আদালতে নয় অন্যান্য আদালতেও নিজেকে তিনি আইনজীবী বলে পরিচয় দিতেন।
advertisement
বাহাদুর বাউরী নামে এক ব্যক্তি বলেন ১৮ই ফেব্রুয়ারি কমলপুর এলাকায় দুয়ারে সরকারে আসার সময় একটি প্রাইভেট গাড়িতে তার দিদিকে ধাক্কা মারলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। সেই খবর পেয়ে আইনজীবীর পরিচয় দিয়ে তার দিদির ছাতনা থানার একাচালি গ্রামের বাড়িতে যান সুরজিৎ শর্মা। গাড়িতে ফাস্ট পার্টি ইন্সুরেন্স থাকায় একটা মোটা অঙ্কের টাকা পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন সুরজিৎ। প্রথমে তিনি কাগজপত্র চান সেই পরিবারের সদস্যদের কাছে এবং সম্পূর্ণ ইন্সুরেন্স পাইয়ে দিলে সেখান থেকে ১৫ শতাংশ টাকারও দাবি করেন তিনি। সুরজিৎ এর কথায় অসঙ্গতি দেখে ওই পরিবারের সদস্যরা কোনও কাগজ সুরজিৎ এর কাছে দেননি। সুরজিৎ তার একটি নিজস্ব পরিচয়ের কার্ড তাদের কাছে দিয়ে আসেন এবং বলেন লিখিত নম্বরে যোগাযোগ করতে। সোমবার বাঁকুড়া জেলা আদালতে এসে জানতে পারেন সুরজিৎ আসলে ভুয়ো আইনজীবী।
বাঁকুড়া আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রুপক ভট্টাচার্য বলেন, সুরজিৎ শর্মা নামে ওই ব্যক্তি বেশ কয়েকদিন ধরেই বাঁকুড়া আদালতের আইনজীবীদের কাছে নিজেকে আইনজীবী বলে পরিচয় দিতেন। কথাবার্তায় অসঙ্গতি হওয়ায় বাঁকুড়া আদালতের আইনজীবীরা তাকে সন্দেহের নজরে রেখেছিলেন। সোমবার কোর্টে কাজ করতে করতে হঠাৎ জানতে পারি আমাদের বারের মধ্যে সেই ছেলেটিকে পাওয়া যায় যার নাম সুরজিৎ শর্মা । আজ প্রতারণার অভিযোগে তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে বাঁকুড়া আদালতের আইনজীবীরা। তিনি বাঁকুড়া আদালত ছাড়াও আরো বিভিন্ন আদালতে আইনজীবীর পরিচয় দিয়েছেন। এই ব্যক্তি কোনো জালিয়াতি চক্রের সাথে যুক্ত রয়েছেন কোন স্থানীয় সন্দেহের অবকাশ রাখেনা। তার বাড়ি কলকাতার কসবা এলাকায়। তিনি বাঁকুড়ার রামপুরে ভাড়া থাকেন। সেখান থেকেই বেশ কিছুদিন ধরে শুধু বাঁকুড়া আদালত নয় বিভিন্ন আদালতে গিয়ে জালিয়াতি কার্যকলাপ চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।সুরজিৎ এর কাছ থেকে একটি ভিজিটিং কার্ড উদ্ধার করা হয়। সেখানে মোটর এক্সিডেন্ট ক্লেম কেসের কনসালটেন্ট বলে লেখা রয়েছে । আজ হাতেনাতে ধরা পড়ে বাঁকুড়া আইনজীবীদের হাতে সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় তিনি আইনজীবী নন অথচ বহু জায়গায় নিজেকে আইনজীবীর পরিচয় দিয়ে আইনজীবীর পেশাকে আঘাত করার চেষ্টা করেন। আমরা মনে করি এনার সাথে আরো কেউ যুক্ত থাকতে পারে। আমরা প্রথমে বার অ্যাসোসিয়েশনে এই ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা করি। তারপর বাঁকুড়া সদর থানায় জানানো হয় পুরো বিষয়টি। তারপর বাঁকুড়া আদালত প্রাঙ্গণ থেকেই সুরজিৎ নামে ওই ব্যক্তিকে বাঁকুড়া আদালতের আইনজীবীরা তুলে দেন বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশের হাতে।
জয়জীবন গোস্বামী