শুশনিয়া পাহাড়ের পাদদেশে হাঁপানিয়া রামনাথপুর গ্রামে একটি ছোট্ট আশ্রম আছে, যার নাম মারাংবুরু চাচো মার্শাল আশ্রম। ২০০১-২ সালে এই আশ্রমের প্রতিষ্ঠা করেন বাবুনাথ টুডু। তিনি ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। আদিবাসী শিশুদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে অন্যতম অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় ভাষা। সেই প্রতিবন্ধকতা যাতে তাদের ক্ষতি না করে তার জন্য নিজের প্রতিষ্ঠিত আশ্রমে সাঁওতালি ভাষাতেই পড়াশোনার ব্যবস্থা গড়ে তোলেন বাবুনাথ টুডু। এই আশ্রম মানুষের কাছে ‘মানুষ গড়ার কারখানা’ নামে পরিচিত। ২০০৫ সালে বাবুনাথ টুডুর স্ত্রী লক্ষ্মী টুডু ‘গাইড মাদার’ হিসেবে যোগদান করেন এই আশ্রমে। ১০৭ জন আদিবাসী শিশুকে নিয়ে শুরু হয়েছিল পথ চলা।
advertisement
আরও পড়ুন: রক্তের সঙ্কটে আটকে গিয়েছিল তরুণীর চিকিৎসা, এগিয়ে এলেন সিভিক ভলেন্টিয়ার
শিক্ষার আলোর সংস্পর্শে এসে এই প্রান্তিক আদিবাসী শিশুরাও ডানা মেলার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। পড়াশোনার পাশাপাশি তারা খেলাধুলোও জোরকদমে অভ্যাস করে। ফুটবলার, ক্রিকেটার থেকে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার কোনও পেশাই আর অসম্ভব নয় তাদের কাছে। স্বল্প ক্ষমতার মধ্যেই খুব সুন্দর করে সাজানো এই ছোট্ট আশ্রম। ছাত্র-ছাত্রীদের থাকার জন্য রয়েছে আলাদা-আলাদা ঘর।
বাঁকুড়ার শীতের হাড়কাঁপানো ঠান্ডা হোক বা গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহ, সারা বছর এই আদিবাসী শিশুদের সঙ্গেই বসবাস করেন বাবুনাথ টুডু ও লক্ষ্মী টুডু। বাবুনাথ টুডুর এই প্রচেষ্টা আগেই বিভিন্ন জায়গায় স্বীকৃতি পেয়েছে। এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে তিনি পেতে চলেছেন সম্মান। ৪ মে ঝাড়গ্রামের দেবেন্দ্র মহান হলে সকাল ১১ টায় তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এই নিয়ে বাবুনাথ টুডু বলেন, আমার মায়ের আশীর্বাদ ও স্ত্রীর সহযোগিতা ছাড়াও বহু সহৃদয় ব্যক্তির ভালোবাসা নিয়ে তৈরি হয়েছে এই মারাং বুরু চাচো মার্শাল আশ্রম। কেবল আমি নয়, এই সম্মান আমাদের সকলের।
নীলাঞ্জন ব্যানার্জি