দিন দশেক আগে কোচবিহারের বাসিন্দা আশরফ আলির স্ত্রী সাফিনা বিবি পেটের ডানদিকে প্রবল যন্ত্রণা নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের ইউরো সার্জেন ডাঃ পবিত্র রায়ের কাছে আসেন। আগেও বহু সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তারকে দেখিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। পুরনো সব রিপোর্ট চিকিৎসক পবিত্র রায়কে দেখানো হয়। তিনি ওই রোগীকে পরীক্ষা করে চমকে ওঠেন৷ জানা যায়, জন্ম থেকেই সাফিনা বিবির ডানদিকের কিডনির সঙ্গে মুত্রথলির সংযোগকারী টিউবটি অকেজো৷ ফলে ডানদিকের কিডনিতে উৎপাদিত মূত্র ঠিক করে নিঃসরণ হতে পারত না। জন্ম থেকেই এইভাবে চলতে চলতে ওই রোগীর ডানদিকের কিডনিতে প্রচুর পাথরও হয়ে যায়৷ তাকে বাঁচাতে হলে দ্রুত অস্ত্রোপচারের দরকার ছিল। কিন্তু আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে এই ধরনের ইউরো সার্জারি করার মত পরিকাঠামো নেই। সাধারণত মেডিকেল কলেজ ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালগুলোতে এই ধরনের জটিল অপারেশনের ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা হাল ছাড়েননি।
advertisement
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গকে কাছে আনবে ১১৬-এ জাতীয় সড়ক, মুর্শিদাবাদে জোর কদমে চলছে সম্প্রসারণের কাজ
চিকিৎসকরা আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারেই অস্থায়ীভাবে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করে সাফিনা বিবির অস্ত্রোপচার করেন। চিকিৎসক পবিত্র রায়ের নেতৃত্বে জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা সফলভাবে সাফিনা বিবির ডান কিডনির সঙ্গে মুত্রনালির টিউব সংযুক্ত করে দেন। এর ফলে আট দিন পর থেকে ওই রোগীর দুটো কিডনিই সমানভাবে কাজ করছে ৷ মূত্রত্যাগেও আর কোনও সমস্যা হচ্ছে না৷
পরিকাঠামো না থাকা সত্বেও চিকিৎসকদের এই হার না মানা মনোভাবকে স্যালুট জানিয়েছে সকলে। অনেকের মতে, যে সমস্ত সরকারি হাসপাতাল কথায় কথায় রেফার করে তারা এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিতে পারেন।
অনন্যা দে