গত কয়েকদিন ধরেই মাদারিহাটের জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে একটি 'খুনে' হাতি। ওই বুনো হাতির আক্রমণে ইতিমধ্যেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক যে বন দফতরের পক্ষ থেকে মাইকিং করে এলাকার মানুষকে সন্ধের পর বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই মত্ত হাতিটি রাতের অন্ধকার নামলেই সঙ্গী সাথীদের নিয়ে জঙ্গল লাগোয়া চাষের খেতে হানা দিয়ে বেগুন, আলু খেয়ে ছড়িয়ে নষ্ট করছে। এরপর গ্রামে ঢুকে বাড়িঘর ভেঙে আবার জঙ্গলে ফিরে যাচ্ছে।
advertisement
এই পরিস্থিতিতে ব্যাপক আতঙ্কে ভুগছেন মাদারিহাটের মানুষ। সেই সঙ্গে বন দফতরের ভূমিকা নিয়েও তাঁদের মধ্যে অসন্তোষ আছে। কেন ওই 'খুনে' হাতিকে ধরা হচ্ছে না তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছেঋ তবে এইসব বিতর্কের থেকেও এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে চাষি রতন দাসের দাবি ঘিরে। এই ব্যক্তি দাবি করেছেন, জমিতে আলু, বেগুনের পরিবর্তে আপেল কুল চাষ করলে হাতির দৌরাত্ম থেকে রক্ষা পাবে এলাকার মানুষ।
আরও পড়ুন: কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে ঢুকল ১০ জন! গভীর রাতে এরপর কী হল মাছ ব্যবসায়ীর বাড়িতে
রতন দাস-ও মাদারিহাটে থাকেন। অন্যান্য চাষিদের মত আগে তিনিও আলু, বেগুন ফলাতেন। তবে এই বছর এক বিঘা জমিতে আপেল কুল চাষ করেছেন। সেই ফসল বাজারে বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা আয়ও করেছেন এই চাষি। অন্যান্য কৃষকদের জমিতে যখন বেগুন, আলু খাওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ছে হাতির দল, সেই সময় রতন দাসের আপেল কুল ক্ষেতের ধারে কাছেও ঘেঁষেনি তারা। এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে রতন দাস দাবি করেন, কাঁটা গাছের ঝোপকে ভয় পায় হাতি। কাঁটা ঝোপ থাকলে সেই জায়গায় এড়িয়ে চলে। এদিকে কুল গাছ মানেই কাঁটা থাকবে। তাই হাতি হানা দেয়নি তাঁর চাষের জমিতে।
মাদারিহাটের বাকি চাষিদেরও আপেল কুল ফলিয়ে লাভের মুখ দেখার পরামর্শ দিয়েছেন রতন দাস। এতে একদিকে যেমন তাঁদের ক্ষেতের ফসল রক্ষা পাবে ও তা বিক্রি করে চাষি দুটো পয়সার মুখ দেখতে পারবেন, তেমনই হাতির হানা থেকেও রক্ষা পাবে গ্রাম।
এখন দেখা যাক আপেল কুলের এই ফর্মুলা হাতির পালকে লোকালয় থেকে দূরে ঠেকিয়ে রাখতে পারে কিনা।
অনন্যা দে