শিলিগুড়ি: চরম রক্ত সংকটে ভুগছে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। 'এ' থেকে 'ও' এমনকি পজিটিভ নেগেটিভ কোনও গ্রুপের রক্ত এই মেডিকেল কলেজের আঞ্চলিক ব্লাড ব্যাংকে মজুদ নেই। ফলে মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রোগীদের প্রয়োজনে রক্তের দাবী মেটাতে একপ্রকার নাভিশ্বাস পরিস্থিতি সরকারী ব্লাড ব্যাংকগুলির।
উত্তরবঙ্গ মেডিকেলের আঞ্চলিক ব্লাড ব্যাংকের অধিকর্তা ডাক্তার মৃদুময় দাস জানান, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে রক্তদান শিবির করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। কিন্তু ভোটপর্ব চলাকালীন কেউই এগিয়ে আসেনি। ফলে রক্ত সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তিনি বলেন, 'রক্ত তো বাজারে পাওয়া কোন পণ্য না যে উৎপাদন করা সম্ভব। রক্তদান শিবির না হলে আমাদের হাত বেঁধে যায়। করার কিছুই থাকে না। ১ মে থেকে শুরু হচ্ছে ১৮ ঊর্ধ্ব বয়সীদের টিকাকরণ কর্মসূচি। ফলে আগামী দিন যে আরও দুর্বিষহ হতে চলেছে তা আশঙ্কা করলে ভুল হবে না।'
হাসপাতালে আঞ্চলিক ব্লাড ব্যাংকের প্রতিদিন গড়ে ৮০-১০০ ইউনিট রক্তের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে মেডিকেল কলেজের চিকিৎসাধীন রোগীদের যেমন রক্ত দিতে হয় তেমনই শিলিগুড়ি হাসপাতালসহ জেলার অন্যান্য হাসপাতাল এমনকি অন্য জেলাতেও বিশেষ প্রয়োজনে এখান থেকে রক্ত সরবরাহ করা হয়। কিন্তু গত করোনা আবহ থেকেই রক্তের এক বিকট সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এর কারণ স্বরূপ যেমন একুশে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে, তেমনই রয়েছে রক্তদান শিবির আয়োজনের উদ্যোক্তাদের ইচ্ছা।
মৃদুময়বাবুর কথায়, মাঝে একবার রক্ত সংকট মেটাতে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কে নিয়ে বৈঠক ও করেছিল স্বাস্থ্য দপ্তর। তারপরে দু-তিনটি শিবিরের আয়োজন করে কিছু রক্ত পাওয়া গিয়েছিল বটে কিন্তু সেই রক্তের জোগানও ক্রমশ শেষ হওয়ার পথে। ইতিমধ্যে অষ্টম দফার নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ভোট উৎসবের সমাপন হয়েছে। তবে নির্বাচনী বিধিনিষেধের ফলে সেই অর্থে রক্তদান শিবির হচ্ছে না; ফলে রক্তও আসছে না।
যদিও উত্তরবঙ্গ মেডিকেলের আঞ্চলিক ব্লাড ব্যাংকের অধিকর্তার মতে, করোনা ভ্যাকসিনে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ৩০-৪৫ দিন পর সকলেই রক্তদান করতে পারেন। মৃদুময়বাবু অনুরোধ করেন, 'যারা ইতিমধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে ফেলেছেন, তাঁরা রক্তদান করুন। এগিয়ে এসে সমাজকে রক্ষা করুন।'