মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতোই চাকরি পেয়েছেন রেনু খাতুন। হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার আগেই লড়াইয়ের সাফল্য ধরা দিয়েছে তার হাতে। জেলাশাসকের হাত থেকে নিয়োগপত্র নেওয়ার সময় কিছুটা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন রেনু। কি বলবেন, তার জন্য সম্ভবত ভাষা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। তবে তার ভঙ্গিমায় খুব স্পষ্ট হয়েছে, লড়াইয়ের সাফল্যে তিনি দারুণ খুশি।
কিন্তু একটি হাত চলে যাওয়ার ফলে রেনুর পক্ষে এই মুহূর্তে নার্সের কাজ করা সম্ভব নয়। সেজন্য তাকে নন নার্সিং স্টাফ হিসেবে নিয়োগ করা হচ্ছে। গ্রেড ২ নার্সিং বিভাগে পাস করেছিলেন রেনু খাতুন। ওই গ্রেডেই রাখা হচ্ছে তাকে। ওই বিভাগে নন নার্সিং স্টাফ হিসেবে তাকে রাখা হচ্ছে। ফলে গ্রেড ২ নার্সিং বিভাগের যে বেতন কাঠামো, সেই বেতন দেওয়া হবে রেনু খাতুনকে। সূত্রের খবর, মাসিক ২৯ হাজার ৮০০ টাকা বেতন পাবেন রেনু।
প্রসঙ্গত, রেনু খাতুন, হাত চলে যাওয়ার পরও সরকারি চাকরি করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। যে চাকরির জন্য তার হাত স্বামী হাত কেটে নিয়েছিলেন, সেই চাকরি করতে চেয়েছিলেন রেনু। বিষয়টিতে নজর দেওয়ার জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান সংবাদমাধ্যমে। তারপরেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, সরকারি চাকরি দেওয়া হবে তাকে। যোগ্যতা অনুযায়ী অবস্থা বুঝে চাকরি দেওয়া হবে।
তারপরেই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর তাকে নন নার্সিং স্টাফ হিসেবে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চাকরির জন্য সুপারিশ করেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ রেক্রুটমেন্ট বোর্ড। তারপরেই রেনু খাতুনের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছেন পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ। দুর্গাপুরে যে বেসরকারি হাসপাতালে রেনু চিকিৎসাধীন রয়েছেন, সেখানে গিয়েই তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছেন জেলাশাসক।
নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে ভীষণভাবে খুশি রেনু খাতুন। চাকরির জন্য তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তার পাশে থাকার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি চিকিৎসার জন্যও মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেজন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জেলা শাসককে। জেলাশাসক নিয়োগপত্র নিয়ে হাসপাতালে গেলে, তাকে দেখে আপ্লুত হয়ে যান রেনু। এছাড়াও চিকিৎসকদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। আপাতত রেনু খাতুন অপেক্ষা করছেন, হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য।