Mobile Number Recycling Risk: সাবধান! পুরনো মোবাইল নম্বর এখন আপনার জন্য বিপদ, নতুন ইউজার পেলেই হ্যাক হতে পারে ব্যাঙ্ক ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট

প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, তত তা ইউজারের জন্য বিপদের আশঙ্কাও তৈরি করছে। মোবাইল নম্বরের কথাই যেমন ধরা যাক! ল্যান্ডলাইনের যুগেও এক নম্বর দুই ব্যক্তিকে বরাদ্দ করার মতো ভুল ঘটত, টেলিফোন এক্সচেঞ্জে আবেদন করে তা শুধরে নেওয়া যেত। মোবাইল নম্বরের ক্ষেত্রে কিন্তু বিপদ আরও গুরুতর। কেন না, এর সঙ্গে এখন ইউজারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লিঙ্ক করা থাকে।

বর্তমান ডিজিটাল যুগে কেউ কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে নিজেদের পুরনো মোবাইল নম্বর যদি কোনও অজানা ব্যক্তির হাতে পড়ে যায় তবে তা কতটা বিপজ্জনক হতে পারে? রেডিটে একটি পোস্ট ভাইরাল হচ্ছে, যেখানে একজন ইউজার এই সংক্রান্ত বিপদগুলি তুলে ধরেছেন। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে, একটি নতুন সিম নেওয়ার পর তিনি অপরিচিতদের কাছ থেকে কল পেতে শুরু করেছিলেন। Truecaller চেক করার সময় জানা গিয়েছে যে নম্বরটি পূর্বে কিরণ নামে একজন ব্যক্তির ছিল, যিনি Zomato, Swiggy, Uber এবং Facebook সহ বেশ কয়েকটি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

ওই ইউজার লিখেছেন, "আমি কিরণের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লগ ইন করতে পারি এবং তাঁর ব্যক্তিগত বিবরণ দেখতে পাই। Zomato-তে নতুন ইউজার অফার পাইনি, Uber-এ খারাপ রেটিং... সবই পূর্ববর্তী মালিকের কারণে। ব্যাঙ্কগুলো ঋণ পরিশোধের দাবি করছে, যদিও নম্বরটি সরকারি পোর্টালে রেজিস্টার বলে মনে হচ্ছে।"

অতএব, কেউ যদি কখনও কোনও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, Facebook, Instagram, Ola, Uber অথবা Zomato-তে লগ ইন করে থাকেন এবং এখন সেই নম্বরটি নিষ্ক্রিয় করে অন্য কাউকে বরাদ্দ করা হয়, তাহলে সাবধান থাকতে হবে। এই পরিস্থিতি নিজের ব্যক্তিগত তথ্য এবং অর্থ উভয়ের জন্যই বিপজ্জনক প্রমাণিত হতে পারে। সম্প্রতি, বেশ কয়েকটি ঘটনা সামনে এসেছে যেখানে নতুন ইউজাররা পুরনো মোবাইল নম্বর পেয়েছেন এবং সেই নম্বরগুলি দিয়ে লগ ইন করে পূর্ববর্তী মালিকের অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করেছেন।

কেন এটি ঘটে:টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার (TRAI) নিয়ম অনুসারে যদি কোনও ইউজার ৯০ দিন ধরে কোনও নম্বর রিচার্জ না করেন, তাহলে কোম্পানিটি এটিকে নিষ্ক্রিয় বলে বিবেচনা করতে পারে এবং পুনরায় ইস্যু করতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট ২০২৩ সালে একটি আবেদনের শুনানি করার সময় বলেছিল যে কোম্পানিগুলিকে নম্বর পুনরায় ইস্যু করা থেকে বিরত রাখা যাবে না। তবে, এটি ইউজারের ডেটার অপব্যবহারের ঝুঁকি বাড়ায়।

এই পরিস্থিতিতে কী করতে হবে:অন্য কেউ এখন পুরনো মোবাইল নম্বরটি নিতে পারেন এটা ধরে নিয়ে প্রথমেই নিজের সমস্ত অনলাইন অ্যাকাউন্ট থেকে সেই নম্বরটি পরিবর্তন করতে হবে।

এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ দেওয়া হল...১. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং UPI অ্যাপ (Paytm, Google Pay, PhonePe):ব্যাঙ্ক শাখায় গিয়ে বা গ্রাহক পরিষেবায় কল করে নিজের নতুন মোবাইল নম্বর আপডেট করতে হবে। বেশিরভাগ অ্যাপে সেটিংস → প্রোফাইল → আপডেট মোবাইল নম্বরে গিয়ে পরিবর্তন করা যেতে পারে।

২. সোশ্যাল মিডিয়া (ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স):নিজের অ্যাকাউন্ট সেটিংসে যেতে হবে → পার্সোনাল ইনফরমেশন অথবা অ্যাকাউন্ট সেটিংস ওপেন করতে হবে, এর পর ফোন নম্বর”ৃ বিভাগে নতুন নম্বর যোগ করতে হবে এবং পুরনোটি ডিলিট করতে হবে। 

৩. ই-কমার্স এবং ডেলিভারি অ্যাপ (জোমাটো, সুইগি, ওলা, উবের):এই অ্যাপগুলিতেও প্রোফাইল বা অ্যাকাউন্ট সেটিংসের মধ্যে গিয়ে মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করা যেতে পারে। পরিবর্তন করার পরে একটি OTP দিয়ে আবার যাচাই করতে ভোলা উচিত নয়।

৪. ই-মেল এবং টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন:যে সব অ্যাকাউন্টে টু-ফ্যাক্টর সিকিউরিটি (2FA) এনেবল করা আছে, সেখানে ই-মেল আইডি এবং নতুন নম্বর অবিলম্বে আপডেট করতে হবে যাতে অন্য কেউ লগ ইন করার চেষ্টা করতে না পারেন।

সর্বশেষ টিপস: এই পরিস্থিতি এড়ানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হল নিজেদের পুরনো নম্বরটি দীর্ঘ সময়ের জন্য নিষ্ক্রিয় না রাখা। কেউ যদি নিজের নম্বর পরিবর্তন করেন, তাহলে প্রথমে এটি সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সাইট এবং অ্যাপে আপডেট করতে হবে। এছাড়াও, নিজেদের ই-মেল অ্যাকাউন্ট থেকে আসা লগ ইন অ্যালার্ট এবং সুরক্ষা বিজ্ঞপ্তিগুলিতে মনোযোগ দিতে হবে।

মনে রাখতে হবে যে, একটি পুরনো মোবাইল নম্বর যদি ভুল হাতে পড়ে, তাহলে তা নিজেদের ডিজিটাল পরিচয়ের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।