

নিজের প্রাইভেসি পলিসিতে পরিবর্তন করতে চলেছে হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp)। প্রথমে বলা হয়েছিল, ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে অ্যাপটির আপডেটেড ভার্সন ব্যবহার করতে গেলে প্রত্যেককে agree and accept অপশনে ক্লিক করতে হবে। না হলে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যাবে এই অ্যাপ। এবং এই আপডেটেড ভার্সন ব্যবহার করলে ব্যবহারকারীর তথ্য সংস্থার অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে শেয়ার করা হতে পারে। এই বিষয়টি জানার পর থেকেই হোয়াটসঅ্যাপ ছেড়ে অন্যান্য অ্যাপ ব্যবহার করার প্রবণতা বেড়েছে মানুষের। যার ফল ভারতে ৩৫ শতাংশ ডাউনলোড কমেছে হোয়াটসঅ্যাপের


যদিও শোনা যাচ্ছে, নতুন পলিসি লাগু করার সময়কাল পিছিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে পরিস্থিতির সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে হোয়াটসঅ্যাপ। এক্ষেত্রে তিন মাস পর্যন্ত পিছিয়ে যেতে পারে নতুন পলিসি লাগু হওয়ার সময়। ৮ ফেব্রুয়ারি হয় তো হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করতে হবে না। পলিসি লাগু হওয়ার নতুন তারিখ হল ১৫ মে।


তথ্য বলছে, জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে ভারতে এই অ্যাপ ডাউনলোড হয়েছে ২ মিলিয়ন। যা কমে জানুয়ারি ৬ থেকে ১০ তারিখে দাঁড়িয়েছে ১.৩ মিলিয়ন। এদিকে যখন হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার কমছে, তখন অন্যদিকে বেড়েছে সিগন্যাল (Signal) অ্যাপ বা টেলিগ্রাম (Telegram) ব্যবহার।


হোয়াটসঅ্যাপের তরফে কিছুদিন আগে জানানো হয় ব্যবহারকারীর তথ্য তাদের অধীনস্থ যে কোনও সংস্থা এমনকি ফেসবুক (Facebook)-এও শেয়ার হতে পারে। এর পাশাপাশি সব সময়ে ব্যবহারকারীর লোকেশন ডেটাও ট্র্যাক করতে পারবে অ্যাপটি। তার পরই ঘটে বিপত্তি। এই অতি জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ ছেড়ে বের হতে শুরু করে মানুষজন। এমনকি বর্তমানে ভারতের মতো দেশে মাত্র ১৮ শতাংশ মানুষ এই অ্যাপ ব্যবহার করতে রাজি। ৩৬ শতাংশ মানুষ এই অ্যাপের ব্যবহার ইতিমধ্যেই কমিয়ে দিয়েছে ও ১৫ শতাংশ মানুষ এই অ্যাপ ব্যবহার করা বন্ধ করে দেবে বলে ঠিক করেছে।


LocalCircles নামের একটি সংস্থা সম্প্রতি ৮ হাজার ৯৭৭ জনের উপর একটি সমীক্ষা করে। যাতে প্রশ্ন করা হয়, যদি ফেসবুক এই নতুন প্রাইভেসি পলিসি চালু করে, যা ফেব্রুয়ারি থেকে মে'তে পিছোনো হয়েছে, তা হলে কত জন এই অ্যাপ ব্যবহার করবে? উত্তরে, ২৪ শতাংশ মানুষ বলেছে তারা অন্য প্ল্যাটফর্ম বেছে নেবে। তাতে টেলিগ্রাম, সিগন্যালেরই নাম উঠে এসেছে। ৯২ শতাংশ হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারী জানিয়েছে, তারা এই অ্যাপের পেমেন্ট অপশন ব্যবহার করবে না কারণ সংস্থা যখন বলছে তারা তথ্য শেয়ার করবে, তা হলে ফেসবুক বা অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে পেমেন্ট ডিটেলসও শেয়ার করতে পারে।


ভারতে হোয়াটসঅ্যাপ ডাউনলোডের হার কমেছে ৩৫ শতাংশ। এদিকে সিগন্যাল অ্যাপ ব্যবহার বেড়েছে অনেকটাই। ২৪ হাজার ভারতীয় এই অ্যাপ ব্যবহার শুরু করেছে। ব্যবহার বেড়েছে টেলিগ্রামেরও। ১.৩ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ১.৫ মিলিয়ন ডাউনলোড এই ক'দিনে হয়েছে টেলিগ্রামের। LocalCircles-এর সমীক্ষা বলছে, বর্তমানে ৪০০ মিলিয়ন ভারতীয়ের স্মার্টফোনে এই অ্যাপ রয়েছে। যা মধ্যে ৬০ মিলিয়নের কাছাকাছি মানুষ এই অ্যাপ ব্যবহার বন্ধ করে দিতে পারে।


তবে, এই ঘোষণা করার পর সম্প্রতি আবার সংস্থার তরফে কার্যত সাফাই দেওয়া হচ্ছে, তারা কারও কোনও তথ্য কোথাও পাঠাবে না। কারও সঙ্গে শেয়ার করবে না ও নতুন আপডেটের ফলে কারও প্রাইভেসিতে কোনও সমস্যা হবে না। গতকালই হোয়াটসঅ্যাপের তরফে স্টেটাসেও বিষয়টি দেওয়া হয় ও সকলকে এই বিষয়ে আশ্বস্ত করা হয়। পাশাপাশি জানানো হয়, কোনও গ্রুপের কোনও তথ্যও কারও সঙ্গে তারা শেয়ার করবে না।