হাইপারসনিক মিসাইল প্রতিরোধের ক্ষমতা কারও নেই ! এমনকি ইজরায়েলের শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স ব্যবস্থাও এক্ষেত্রে অক্ষম, কেন জানেন?
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
HYPERSONIC WARFARE: গত বছরের অক্টোবরে প্রথমবারের মতো ইরান প্রায় ২০০টি ব্যালিস্টিক এবং হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল। এখন প্রশ্ন উঠছে যে এই হাইপারসনিক মিসাইল আক্রমণের কোনও সমাধান বা সহজ করে বললে তা প্রতিরোধের উপায় কোনও দেশের কাছেই আছে কি না।
Author- Sandeep Bol: যুগ যেমন প্রযুক্তির, ঠিক তেমনই আধুনিক যুদ্ধও পুরোপুরি প্রযুক্তিনির্ভর। পারমাণবিক অস্ত্রে শক্তিধর নয়, এমন প্রায় কোনও দেশই বোধহয় নেই। আধুনিক এই যুদ্ধব্যবস্থায় শত্রু বিধ্বংস করার প্রধান সহায় হল ক্ষেপণাস্ত্র। আর ঠিক সে কারণেই বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করে তোলা অতীব প্রয়োজনীয়।
advertisement
সত্যি বলতে কী, ইজরায়েলের যুদ্ধ সমগ্র বিশ্বকে বিমান প্রতিরক্ষার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে সাহায্য করেছে। আয়রন ডোম বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হামাস-হিজবুল্লাহ এবং ইরানের আক্রমণ থেকে ইজরায়েলকে রক্ষা করেছে। যত দিন রকেট এবং সাধারণ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হচ্ছিল, তত দিন ইজরায়েলের মাটিতে একটিও আঁচড় পড়েনি। কিন্তু এই আক্রমণে ধীরে ধীরে হাইপারসনিক এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইজরায়েলি আয়রন ডোম, অ্যারো এবং অন্যান্য সিস্টেমগুলো ভালমতোই সমস্যায় পড়ছে। (Photo: AP)
advertisement
গত বছরের অক্টোবরে প্রথমবারের মতো ইরান প্রায় ২০০টি ব্যালিস্টিক এবং হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল। এখন প্রশ্ন উঠছে যে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণের কোনও সমাধান বা সহজ করে বললে তা প্রতিরোধের উপায় কোনও দেশের কাছেই আছে কি না। ডিআরডিওর বিজ্ঞানী এবং প্রাক্তন মুখপাত্র রবি গুপ্তা (অবসরপ্রাপ্ত) বলেছেন যে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সনাক্ত করা যেতে পারে এবং বাধাও দেওয়া যেতে পারে, কারণ উৎক্ষেপণের পরে এটি দীর্ঘ সময় ধরে বাতাসে থাকে। কিন্তু একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা বায়ুমণ্ডলে তার সর্বনিম্ন ম্যাক ৫ গতিতে উড়ে যায়, তাকে ট্র্যাক করা এবং তার পরে এর বিরুদ্ধে একটি বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা খুব কঠিন। (Photo: AP)
advertisement
হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া কঠিন: ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ইজরায়েলের অনেক জায়গায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র বর্তমান যুগে সবচেয়ে মারাত্মক অস্ত্র। প্রাণঘাতী তো বটেই, কারণ এটি সনাক্ত করা এবং তার পরে এটি প্রতিরোধ করা খুব কঠিন। সবচেয়ে ধীর হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটিরও গতি ৫ ম্যাক, যদি আমরা কিলোমিটারে বোঝার চেষ্টা করি, তবে এটি এক ঘন্টায় প্রায় ৬১৭৩ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। এবার ইজরায়েল এবং ইরানের মধ্যে আকাশপথের দূরত্ব প্রায় ২০০০ কিলোমিটার। এটি শব্দের গতির চেয়ে ৫ গুণ দ্রুত ভ্রমণ করে এবং সর্বোচ্চ গতি ১০ ম্যাক পর্যন্ত হতে পারে। ফলে, ইজরায়েল যেমন মুশকিলে পড়েছে, তেমনই অন্য দেশও অসহায়। (Photo: AP)
advertisement
তবে, ডিআরডিওর প্রাক্তন মুখপাত্র রবি গুপ্তা (অবসরপ্রাপ্ত) বলছেন যে, একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রকে বাধা দেওয়ার জন্য হয় একটি হাইপারসনিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন অথবা একটি দ্রুততর হাই-হাইপারসনিক ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োজন, যার গতি প্রায় ১০ থেকে ২৫ ম্যাক হবে। সমস্যা এই যে বর্তমানে বিশ্বের কোনও দেশেই এমন ইন্টারসেপ্টর নেই। আবার কেবল একটি সুপারসনিক গতির ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েও লড়াই করা অসম্ভব। যদি একসঙ্গে বেশ কয়েকটি সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়, তাহলে একটি বা দুটির বিপক্ষকের ক্ষেপণাস্ত্রকে আঘাত করার সম্ভাবনা থাকে! (Photo: AP)
advertisement
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা যেতে পারে: ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বিভিন্ন রেঞ্জের হয়। সকলের নীতি একই। উৎক্ষেপণের পর এটি মহাকাশে পৌঁছয় এবং তার পর পদার্থবিদ্যার প্যারাবোলিক নীতি অনুসারে এটি বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে এবং তার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। মহাকাশ থেকে নেমে আসার সময়ে এর গতি থাকে ২৫ ম্যাক অর্থাৎ উচ্চ হাইপারসনিক গতি। এখন প্রশ্ন হল ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে কি আরেক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ করা যাবে? (Photo: AP)
advertisement
উত্তর হল- হ্যাঁ। এটি দীর্ঘ সময় ধরে বাতাসে ভ্রমণ করে এবং রাডার যে কোনও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ সনাক্ত করে। অতএব, ক্ষেপণাস্ত্রটি কোথায় পড়বে তা গণনা করা যেতে পারে। এই সময়ে অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। রবি গুপ্তার মতে, যখন একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়, তখন মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে এটি পাথরের মতো পড়ে যায়। এই সময়ে মোটর ইঞ্জিন চালনা করার জন্য এর কোনও রকেটই সক্রিয় থাকে না। পাশাপাশি, একে ফাঁকি দেওয়াও অসম্ভব। এটি একটি অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে নিক্ষেপ করা যেতে পারে। (Photo: AP)
advertisement
ইজরায়েলের কাছে তাই একটি মাত্র সমাধান আছে: এটি ইজরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সবচেয়ে শক্তিশালী লিঙ্ক। এটি স্বল্প পাল্লার রকেট, ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে খুবই কার্যকর। স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য, এটিতে ডেভিড'স স্লিং, অ্যারো-২ এবং অ্যারো-৩-এর মতো অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ইন্টারসেপ্টর রয়েছে। এছাড়াও, গত বছর আমেরিকা THAAD অর্থাৎ টার্মিনাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স সিস্টেম দিয়েছে। এই সিস্টেমগুলি ইরান থেকে ছোড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে মোকাবিলা করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি বায়ুমণ্ডল এবং মহাকাশে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও বন্ধ করতে পারে। কিন্তু হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র আটকানোর জন্য কারও কাছে কোনও সুনির্দিষ্ট সমাধান নেই। (Photo: AP)
