Knowledge Story: ফলের 'রাজা' তো আম, কিন্তু ফলের 'রানি'-র নাম কি বলুন তো? ৯৯% মানুষই উত্তর দিতে গিয়ে হিমশিম! আপনি জানেন?

ফল তো সকলেই কম-বেশি খান৷ কিন্তু ফলের রাজা ও রানি-কে কি চেনেন৷ এই উত্তরটা দিতে গিয়েই বেশিরভাগ লোক হিমশিম খেয়েছেন৷

ফলের রাজা যেমন আছে, তেমনি আছে ফলের রানিও। মজার ব্যাপার হল,ফলের রাজা-কে তাও অনেকেই চেনেন৷ কিন্তু ফলের রানি কে? তা জানলে চমকে যাবেন৷ ফলের রাজার মতোই পুষ্টিগুণে ভরপুর ফলের রানিও৷

ফলের রাজা হল সুস্বাদু রসালো আম৷ আর যা কিনা প্রত্যেকেরই ভীষণ পছন্দের৷ আর কিছুদিন পর থেকে বাজারে ভরে যাবে আম৷ তেমনই ফলের রানি হল ম্যাঙ্গোস্টিন৷ রাজার নামের সঙ্গে এর মিলও রয়েছে৷

ম্যাঙ্গোস্টিন নামের গাব জাতীয় ফলকেই বলা হয় ফলের রানি৷ এটি একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ফল যার স্বাদ কিছুটা টক-মিষ্টি। এই ফলটি মূলত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার হলেও বিশ্বের বিভিন্ন গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়।

রঙের দিক থেকে পুরোটাই অমিল৷ আমের রং উজ্জ্বল হলুদ হলেও, ম্যাঙ্গোস্টিন বাইরের দিকের রং বেগুনি এবং ভিতরে সম্পূর্ণ সাদা। বেগুনি খোসার কারণে এটিকে কিছু জায়গায় বেগুনি ম্যাঙ্গোস্টিন বলা হয়। এটি খেতেও সুস্বাদু৷

হেলথলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ম্যাঙ্গোস্টিন ফল শুধু স্বাদের দিক থেকেই সুস্বাদু নয়, বরং স্বাস্থ্যের দিক থেকেও দারুণ উপকারী। ম্যাঙ্গোস্টিন একটি কম-ক্যালোরিযুক্ত ফল, এতে অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি রয়েছে।

ম্যাঙ্গোস্টিনে প্রোটিন, ভিটামিন সি, বি১, বি২, বি৯, কপার এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এই ফলটিতে ৩.৫ গ্রাম ফাইবার এবং ১ গ্রাম ফ্যাট রয়েছে।

ম্যাঙ্গোস্টিনে উপস্থিত ভিটামিন এবং খনিজগুলি ডিএনএ গঠন, পেশী সংকোচন, ক্ষত নিরাময়- সহ অনেক শারীরিক ক্রিয়াকলাপ বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য।

এটি একটি অনন্য ধরনের উদ্ভিদ যৌগ যা শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। গবেষণায় প্রমাণিত ম্যাঙ্গোস্টিনে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টি-ক্যান্সার, অ্যান্টি-এজিং এবং অ্যান্টি-ডায়াবেটিক প্রভাব বাড়াতে পারে। কিছু গবেষণায় আরও দাবি করা হয়েছে যে এই ফল ওজন কমাতেও সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস রোগীদের থেকে আমকে দূরে রাখার পরামর্শ দেওয়া হলেও, এই 'ফলের রানি'র মধ্যে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করারও বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিরাট উপকারী৷

গাব জাতীয় ফল ম্যাঙ্গোস্টিনকে ফলের রানি উপাধি দিয়েছেন আমেরিকান প্ল্যান্ট এক্সপ্লোরার এবং উদ্ভিদবিদ ডেভিড ফেয়ারচাইল্ড। লেখক তাঁর বই এক্সপ্লোরিং ফর প্ল্যান্টস-এ ১৯০৩ সালে এই আখ্যা দিয়েছিলেন ম্যাঙ্গোস্টিনকে।

এক সময় ফলের রানিকে আমেরিকায় নিষিদ্ধ করা হয়েছিল৷ শোনা যায়, সেই সময় আমেরিকায় এশিয়ান মাছির সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল। এই কারণেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। যদিও ২০০৭ সালে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছিল।