চিকিৎসার বিল এল ৮২ লক্ষ টাকারও বেশি ! কানাডায় ছেলে-মেয়ের কাছে গিয়ে আর্থিক সঙ্কটে ভারতীয় বৃদ্ধা
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
Rs 82 Lakh Medical Bill: বিদেশে চিকিৎসা পরিষেবার খরচ এই দেশের তুলনায় অনেকটাই বেশি। তা বলে, মায়ের চিকিৎসার খরচ পৌঁছবে ৮২ লক্ষ টাকারও উপরে, এ কথা দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি জোসেফ ক্রিস্টি। কিন্তু, বাস্তবেই তা-ই হল। সেই সঙ্গে, বিমা সংস্থাও এই খরচ দিতে অস্বীকার করল।
বিমা সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে সব সময়েই এই অভিযোগ থাকে যে তারা ক্লেমের টাকা নানা কারণ দর্শিয়ে দিতে চায় না। কথাটা একেবারে মিথ্যাও নয়। অনেক হাসপাতালই মুখের উপরে বলে দেয় যে সদ্য চিকিৎসা বিমা কেনা হলে বিমা সংস্থা তা কভার নাও করতে পারে। আবার, অনেক সময়ে শর্তাবলীতে এমন কিছু সূক্ষ্ম কারণ থাকে যা বোঝা সাধারণ নাগরিকের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। সেই সমস্ত ক্ষেত্রেও চিকিৎসার খরচ বিমা সংস্থা দেয় না, পরিবারকে আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়তে হয়। (Representative Image)
advertisement
advertisement
জানা গিয়েছে যে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য ৮৮ বছর বয়সী এক ভারতীয় মহিলা কানাডায় গিয়েছিলেন। তাঁর নাম অ্যালিস জন। তিনি ভারত থেকে ব্রাম্পটন এবং হ্যামিল্টনে তাঁর সন্তানদের দেখতে এসেছিলেন। আসার মাত্র কয়েকদিন পরেই তাঁর স্বাস্থ্যগত সমস্যা শুরু হয় এবং তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। সিটিভি নিউজ জানিয়েছে, চিকিৎসার জন্য পরিবারের খরচ হয়েছে ৯৬,০০০ ডলারেরও বেশি (৮২ লক্ষ টাকারও বেশি)। অ্যালিস জন ছয় মাসের জন্য কানাডায় ছিলেন একটি সুপার ভিসা নিয়ে। এই ভিসা কানাডিয়ান নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দাদের বাবা-মা এবং ঠাকুর্দা-ঠাকুমাদের টানা দুই বছর পর্যন্ত সে দেশে থাকার অনুমতি দেয়। এই ভিসা ১০ বছরের জন্য বৈধ। যদিও ভ্রমণকারীদের তাঁদের থাকার সময় ব্যক্তিগত চিকিৎসা বিমা থাকা বাধ্যতামূলক। (Representative Image)
advertisement
সেই বিমা অবশ্য অ্যালিসেরও ছিল। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তিনি কানাডায় আসেন এবং শীঘ্রই কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং জ্বরে ভুগতে শুরু করেন। তাঁর ছেলে জোসেফ ক্রিস্টি জানান, অ্যালিস হ্যামিল্টনে তাঁর মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন, সেখানে তাঁর অবস্থা আরও খারাপ হয়। তাঁকে হ্যামিল্টন জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে হাইপোক্সিক রেসপিরেটরি ফেলিওরের চিকিৎসা চলে। "মায়ের কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং জ্বরের লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে", জোসেফ বলেন। (Representative Image)
advertisement
অ্যালিসকে প্রায় তিন সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল। সেই সময় তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। পরিবারটি ইতিমধ্যেই ম্যানুলাইফের মাধ্যমে একটি বেসিক ভ্রমণ বিমা পলিসি কিনেছিল যা ১০০,০০০ ডলার (প্রায় ৮৫.৬ লক্ষ টাকা) পর্যন্ত কভারেজ অফার করেছিল। তবে, ক্লেম দাখিল করার পরে বিমা কোম্পানি দাবি করে যে অ্যালিস আগে থেকেই রোগে ভুগছেন, ফলে কভারেজ দেওয়া যাবে না। পলিসি অনুসারে, কনজেস্টিভ হার্ট ফেলিওরে আক্রান্ত ব্যক্তিরা কভারেজের জন্য যোগ্য নন। "যদি কারও কনজেস্টিভ হার্ট ফেলিওর ধরা পড়ে, তাহলে তিনি এই পলিসির অধীনে কভারেজের জন্য যোগ্য নন," আউটলেটের উদ্ধৃতি অনুসারে পরিবারকে বলা হয়েছিল। (Representative Image)
advertisement
advertisement
পরিবার যে বেসিক সুপার ভিসা বিমা প্ল্যান কিনেছিল, তাতে কেনার সময় কোনও মেডিকেল চেক আপের প্রয়োজন হয়নি। ভ্রমণ বিমা বিশেষজ্ঞ মার্টিন ফায়ারস্টোন বলেন যে এই ধরনের কেসে সাধারণত ক্লেম দাখিল করার পরেই মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়। "যদি বিমা বলে যে তা কোনও পূর্ব-বিদ্যমান অবস্থার আওতাভুক্ত নয়, তাহলে তাদের রেকর্ডে যা পাওয়া যাবে তা শেষ পর্যন্ত কানাডায় কভার করা হবে না," ফায়ারস্টোন সিটিভি নিউজকে বলেন। (Representative Image)
advertisement
পরিবারটি জানিয়েছে যে অ্যালিসের পূর্বে কোনও হৃদরোগের সমস্যা ছিল না। ফলে, তারা বিমা সংস্থার সিদ্ধান্ত রিভিউয়ের দাবি তোলে। সিটিভি নিউজ যখন ম্যানুলাইফের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তখন বিমা কোম্পানি মামলাটি ফের খতিয়ে দেখে। এক বিবৃতিতে, একজন মুখপাত্র বলেন, ‘‘কখনও কখনও, এমন অভূতপূর্ব পরিস্থিতি দেখা দেয় যেখানে মেডিকেল ফাইলের ব্যাখ্যা চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় না। আমরা বিষয়টি রিভিউ করেছি এবং পরিস্থিতি বিবেচনা করে ক্লেমের টাকা প্রদান করব।’’ প্রাথমিকভাবে দাবি প্রত্যাখ্যান করার পরে ম্যানুলাইফ চিকিৎসা বিলের সম্পূর্ণ খরচ বহন করতে সম্মত হয়। "আমরা পরিবারকে বিষয়টি জানিয়েছি এবং এখন অর্থপ্রদান প্রক্রিয়া শুরু করছি," মুখপাত্র বলেন। (Representative Image)