ভারতের মানচিত্রে ‘চিকেনস নেক’ বা মুরগির গলা কী? বুঝে নিন চিন সীমান্তের কাছে থাকা এই ‘দুর্বল’ যোগসূত্রটি কতটা প্রভাবশালী!
- Published by:Tias Banerjee
Last Updated:
Chicken Neck: সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান মোহাম্মদ ইউনুসের এক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এই চিকেনস নেক’ এলাকা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই মন্তব্যকে হালকাভাবে না নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
advertisement
advertisement
এটি বাংলার মাটি হলেও এই ভূখণ্ডেই নির্ভর করছে ভারতের আটটি উত্তর-পূর্ব রাজ্যের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা। ফলে বাংলার এই ভূখণ্ড কেবল ভৌগলিকভাবে নয়, জাতীয় নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও এক অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে চলেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান মোহাম্মদ ইউনুসের চিন সফরে গিয়ে দেওয়া এক মন্তব্যের পর ফের আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে এই করিডর।
advertisement
advertisement
সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান মোহাম্মদ ইউনুসের এক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এই এলাকা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই মন্তব্যকে হালকাভাবে না নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে, চলো জেনে নেওয়া যাক এই ‘চিকেন নেক’ বা শিলিগুড়ি করিডর সম্পর্কে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, যা বিভিন্ন পরীক্ষার ক্ষেত্রেও উপযোগী হতে পারে।
advertisement
'চিকেন নেক' কী? শিলিগুড়ি করিডর হল ভারতের একটি সরু ভূখণ্ড যা পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত। এটি দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে অরুণাচল প্রদেশ, অসম, মনিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম ও ত্রিপুরা — এই আটটি উত্তর-পূর্ব রাজ্যকে সংযুক্ত রাখে। ভৌগোলিকভাবে এই অঞ্চলটি এতটাই সরু যে সবচেয়ে সরু স্থানে এর প্রস্থ মাত্র ২২ কিলোমিটার। এই সরু গঠনই একে ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত করেছে।
advertisement
শিলিগুড়ি করিডর পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের অংশে, দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলার আশপাশে অবস্থিত। এটি হিমালয়ের পাদদেশে বিস্তৃত একটি এলাকা। প্রায় ৬০ কিলোমিটার লম্বা ও ২১ কিলোমিটার চওড়া এই করিডর একদিকে ভারতকে বাংলাদেশ ও নেপালের সঙ্গে সীমান্ত ভাগাভাগি করতে সাহায্য করে, অন্যদিকে এটি চিন ও ভুটানের সঙ্গেও ভৌগলিকভাবে কাছাকাছি।
advertisement
কেন এত সংবেদনশীল? এই অঞ্চল ভারতের জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল কারণ, যদি কোনওভাবে এই করিডর অবরুদ্ধ হয়ে যায়, তবে দেশের মূল ভূখণ্ড ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া এই অঞ্চলের পাশেই রয়েছে চিনের তিব্বতের চুম্বি ভ্যালি, সিকিম ও ভুটানের ডোকলাম ট্রাই-জাঙ্কশন। সেই কারণেই কৌশলগতভাবে এই করিডরের গুরুত্ব অপরিসীম।
advertisement
advertisement
বিকল্প ব্যবস্থা কী? ভারত সরকার ইতিমধ্যেই এর বিকল্প পথ তৈরির উপর কাজ শুরু করেছে। অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল সঞ্জয় কুলকর্ণী জানিয়েছেন, যদিও শিলিগুড়ি করিডর সংবেদনশীল, তবুও তেমন কোনও তৎক্ষণাৎ বিপদের আশঙ্কা নেই। বিকল্প হিসেবে ভাবা হচ্ছে কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট প্রোজেক্ট নিয়ে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কলকাতা বন্দর থেকে মায়ানমারের সিত্তে বন্দর হয়ে কালাদান নদী পেরিয়ে সড়কপথে মিজোরাম পর্যন্ত যাওয়া যাবে। এই পথে জল, নদী ও সড়ক—সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যবহার হবে। যদিও এই প্রকল্পের কাজ এখনও ধীরগতিতে চলছে।
advertisement
ইউনুসের মন্তব্য কেন বিতর্কিত? চিন সফরে গিয়ে মোহাম্মদ ইউনুস মন্তব্য করেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল 'ল্যান্ডলকড', অর্থাৎ সাগরের সঙ্গে সংযুক্ত নয়। তাই ওই অঞ্চল যদি চিনের বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে চায়, তবে বাংলাদেশের সহায়তা একান্ত প্রয়োজন। তাঁর এই বক্তব্যকে ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার পক্ষে স্পর্শকাতর ও কূটনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।