ভারত-ব্রিটেন মৈত্রীর এক নব যুগ, স্যান্ড্রিংহাম হাউজ ঘুরে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, এই প্রথম কোনও ভারতীয় নেতার পায়ের ধুলো পড়ল সেখানে
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
এই প্রথম কোনও ভারতীয় নেতা আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিশেষ স্থানে পৌঁছেছেন এবং তাকে স্বাগত জানিয়েছেন কিং চার্লস নিজেই।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্রিটেন সফর অনেক দিক থেকেই ঐতিহাসিক ছিল। মেগা চুক্তি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, উভয় দেশই অনেক বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা করে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বিশেষ বিষয় ছিল প্রধানমন্ত্রী মোদির স্যান্ড্রিংহাম প্যালেসে আগমন, সেই রাজকীয় বাসভবন যেখানে ব্রিটেনের রাজা এবং তাঁর পরিবার ছুটি কাটান। এই প্রথম কোনও ভারতীয় নেতা আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিশেষ স্থানে পৌঁছেছেন এবং তাঁকে স্বাগত জানান কিং চার্লস নিজেই। (Photo: X)
advertisement
স্যান্ড্রিংহাম হাউজ (Sandringham House) কী? স্যান্ড্রিংহাম হাউজ হল ইংল্যান্ডের নরফোক কাউন্টিতে অবস্থিত একটি সুন্দর রাজকীয় সম্পত্তি। এটিকে ব্রিটিশ রাজপরিবারের ব্যক্তিগত আবাসস্থল বলা হয়। এটি উনিশ শতকে নির্মিত হয়েছিল এবং তখন থেকেই ব্রিটিশ শাসকদের ছুটির প্রাসাদে পরিণত হয়েছে। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথও তাঁর জীবনের অনেক ব্যক্তিগত মুহূর্ত এখানে কাটিয়েছেন। প্রতি বছর বড়দিন উপলক্ষে পুরো রাজপরিবার এখানে জড়ো হয়।
advertisement
প্রধানমন্ত্রী মোদির এখানে আসা কেন বিশেষ? স্যান্ড্রিংহাম কেবল একটি ভবন নয়, এটি ৮০০০ একরেরও বেশি জমির একটি সম্পত্তি। এর মধ্যে রয়েছে বন, হ্রদ, কৃষিজমি, এমনকি গির্জাও। স্যান্ড্রিংহাম হাউজ রাজপরিবারের ক্রিসমাস এবং নববর্ষের ছুটির ঐতিহ্যবাহী স্থান। প্রতি বছর বড়দিনের সকালে রাজপরিবার সেন্ট মেরি ম্যাগডালিন চার্চে উপস্থিত থাকে। সাধারণত, পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের এখানে আপ্যায়ণ করা হয়, রাজনীতিবিদদের নয়। অতএব, প্রধানমন্ত্রী মোদির সেখানে সফর সাফ প্রমাণ করে যে ব্রিটেন এখন ভারতকে কেবল কূটনৈতিকভাবে নয়, সাংস্কৃতিক এবং মানসিকভাবেও বিশেষ মর্যাদা দিচ্ছে। গ্রীষ্মকালে এই প্রাসাদটি পর্যটকদের জন্য আংশিকভাবে খোলা থাকে। এখানে জাদুঘরে রাজপরিবারের পুরনো গাড়ি, শিকারের স্মারক এবং ঐতিহাসিক নথি দেখা যায়। (Photo: X)
advertisement
এই জায়গার প্রতি রাজপরিবারের বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে: ১৮৬২ সালে প্রিন্স অ্যালবার্ট (এডওয়ার্ড সপ্তম)-এর জন্য স্যান্ড্রিংহাম হাউজ কেনা হয়। তখন থেকে এটি ব্রিটিশ রাজপরিবারের ব্যক্তিগত সম্পত্তি। অর্থাৎ, এটি বাকিংহাম প্যালেস বা উইন্ডসর ক্যাসেলের মতো কোনও রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি নয়, বরং রাজপরিবারের নিজস্ব সম্পদ। ১৯৫২ সালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বাবা রাজা ষষ্ঠ জর্জ এখানে মারা যান। এই জায়গাটি সাধারণত বিদেশি নেতাদের জন্য উন্মুক্ত থাকে না, তাই এখানে প্রধানমন্ত্রী মোদির উপস্থিতি ঐতিহাসিক বলেই বিবেচিত হবে।
advertisement
ভারতের সঙ্গে এর সম্পর্ক কী? এখনও পর্যন্ত ভারতের অনেক প্রধানমন্ত্রী বাকিংহাম প্যালেস বা উইন্ডসর ক্যাসেল পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদির স্যান্ড্রিংহাম সফর একটি নতুন সূচনা। এটি ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে একটি আবেগপূর্ণ সম্পর্ক প্রকাশ করে। এই ভ্রমণকালে কিং চার্লস 'এক পেড় মা কে নাম' প্রকল্পের আওতায় একটি গাছ দেওয়ার ঘোষণা করেন, যা এই বছর স্যান্ড্রিংহামে রোপণ করা হবে। এই কাজ কেবল বন্ধুত্ব নয়, ভারতের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি শ্রদ্ধাও প্রদর্শন করে। (Photo: PTI)