১২০০০ কিমি স্ট্রাইক রেঞ্জ, রিফুয়েলিং ছাড়াই আমেরিকা পর্যন্ত আক্রমণ করতে পারে ! ভারতের নতুন ‘স্ট্র্যাটেজিক বম্বার’ বিশ্বকে ধসিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা ধরে
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
India Ultra Long-Range Strike Aircraft: রাশিয়ান TU-160 ব্ল্যাকজ্যাক এবং আমেরিকান বি-২১ রেইডারের মতো বোমারু বিমান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে ভারত এবার সামরিক ক্ষমতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগী হয়েছে।
Story-Deepak Verma: সংঘর্ষ শেষ হলেও উত্তেজনা হয়নি। পাকিস্তান এবং তার মিত্রপক্ষ চিন এখনও ভারতের জন্য শঙ্কার কারণ তৈরি করতে পারে। ফলে, দেশকে নিজ অস্ত্রে বলীয়ান হওয়া প্রয়োজন। চলছে তার নানাবিধ প্রস্তুতি। সেই লক্ষ্যেই এবার ভারতের প্রতিরক্ষা খাতে একটি বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি, যা এতদিন প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে স্বনির্ভরতা এবং আঞ্চলিক আধিপত্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, এখন আন্তঃমহাদেশীয় শক্তি প্রক্ষেপণের দিকে এগিয়ে চলেছে। এই পরিবর্তনের মুখ হতে চলেছে ভারতীয় বিমানবাহিনীর জন্য প্রস্তাবিত একটি অতি-দীর্ঘ-পাল্লার কৌশলগত বোমারু বিমান, যার স্ট্রাইক রেঞ্জ ১২০০০ কিলোমিটারেরও বেশি হবে। অর্থাৎ, এটি ভারত থেকে উড়ে আমেরিকার যে কোনও শহরকে কোনও বাধা ছাড়াই হিট করতে পারে। (Photo: AI/Representative Image)
advertisement
রাশিয়ান TU-160 ব্ল্যাকজ্যাক এবং আমেরিকান বি-২১ রেইডারের মতো বোমারু বিমান থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে ভারত এবার সামরিক ক্ষমতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগী হয়েছে। কেন এমন বোমারু বিমানের প্রয়োজন ছিল? এখন বিশ্বে যুদ্ধের ধরন বদলে গিয়েছে। এখন যুদ্ধ কেবল স্থলে মুখোমুখি নয়, সাইবার, মহাকাশ এবং দূরপাল্লার বিমান হামলার মাধ্যমেও সংঘটিত হচ্ছে। চিন H-20 কৌশলগত বোমারু বিমানে সমৃদ্ধ হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দীর্ঘ দিন ধরে বি-২ স্পিরিট ছিল আর এখন এটি বি-২১ রেইডারের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে শক্তি প্রদর্শন করছে। ভারতের পারমাণবিক ক্ষেত্র ইতিমধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্র এবং সাবমেরিনের সমৃদ্ধ ছিল। কিন্তু এখন প্রয়োজন একটি কৌশলগত বায়ুবাহিত প্ল্যাটফর্ম, অর্থাৎ একটি বোমারু বিমান, যা যে কোনও সময়ে, যে কোনও দূরত্ব থেকে ক্ষেপণাস্ত্র বা পারমাণবিক হামলার মাধ্যমে শত্রুকে ধ্বংস করতে পারে। এটি ভারতের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে একটি নতুন মাত্রা দেবে।
advertisement
রাশিয়ান TU-160 থেকে অনুপ্রেরণা রাশিয়ার: TU-160 ব্ল্যাকজ্যাক বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুততম এবং ভারী সুপারসনিক কৌশলগত বোমারু বিমান। এর স্ট্রাইক রেঞ্জ ১২,৩০০ কিলোমিটার পর্যন্ত এবং এটি ৪০ টন পর্যন্ত অস্ত্র বহন করতে পারে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক এবং ডিআরডিও ইঞ্জিনিয়াররা এটিকে একটি মডেল হিসেবে বিবেচনা করছেন, যেখানে ভারতের ভূ-রাজনৈতিক লক্ষ্য অনুসারে একই রকম নকশা, প্রযুক্তি এবং পরিসর অভিযোজিত হবে। এই ভারতীয় বোমারু বিমানে পরিবর্তনশীল সুইং উইং নকশাও থাকতে পারে, যা মাটিতে নামার সময়ে প্রসারিত হয় এবং উড়ানের সময় পিছনে সরে যায়। এটি জ্বালানি দক্ষতা এবং গতির দিক থেকেও উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত।
advertisement
আমেরিকান বি-২১ রেইডারের চেয়েও বেশি পরিসর: আমেরিকান বি-২১ রেইডার এখনও উন্নয়নের পর্যায়ে রয়েছে, তবে এর পাল্লা প্রায় ৯৩০০ কিলোমিটার বলে জানা গিয়েছে। ভারতের বোমারু বিমানটির পাল্লা আরও দীর্ঘ হতে পারে, যার ফলে এটি আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া এবং আফ্রিকার যে কোনও স্থানে সরাসরি অভিযান চালাতে পারবে। স্টিলথ ডিজাইন, রাডার এড়িয়ে চলা এবং স্বয়ংক্রিয় নেভিগেশন সিস্টেম- এই সবই এই বোমারু বিমানটিকে বিশ্বমানের করে তুলবে। এর পাশাপাশি, এটিকে Brahmos-এনজির মতো সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
advertisement
ব্রহ্মোস-এনজি: বাতাসে চলবে ধ্বংসযজ্ঞ এই বোমারু বিমানের সবচেয়ে বিশেষ দিক হলো এর অস্ত্র লোডিংয়ের ক্ষমতা। বর্তমান পরিকল্পনা অনুসারে, এতে একসঙ্গে চারটি ইউনিট পর্যন্ত Brahmos-এনজি লাগানো যেতে পারে। অর্থাৎ থাকবে ২৯০-৪৫০ কিলোমিটার পাল্লার সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, যা আকাশ থেকে উৎক্ষেপণ করা যেতে পারে এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে শত্রু বিমানঘাঁটি, রাডার, কমান্ড সেন্টার বা পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করতে পারে। এছাড়াও, অগ্নি-১পি, লেজার গাইডেড বোমা এবং অ্যান্টি-রেডিয়েশন মিসাইলের মতো স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক অস্ত্রও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
advertisement
প্রযুক্তিগত অংশীদার কে? এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের জন্য DRDO, HAL এবং ADA-এর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে, একই সঙ্গে ভারত সরকার প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য কিছু বিদেশি প্রতিরক্ষা সংস্থার সঙ্গেও আলোচনা করছে। রাশিয়া এবং ফ্রান্স সেই তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এই বোমারু বিমানের জন্য একটি বিশেষ টার্বোফ্যান ইঞ্জিনের প্রয়োজন হবে, যা ভারত GE-414 ইঞ্জিনের পরিবর্তিত সংস্করণ বা রাশিয়ার NK-32 ইঞ্জিনের অনুরূপ একটি শ্রেণী ব্যবহার করে তৈরি করতে পারে। কৌশলগত সুবিধা কী হবে? বিশ্বব্যাপী আঘাত করার ক্ষমতা: ভারত এখন কেবল এশিয়াতেই নয়, বিশ্বের যে কোনও কোণে আঘাত করতে সক্ষম হবে। প্রত্যাঘাতের নিশ্চয়তা: ভারত শত্রুর দিক থেকে প্রথম আক্রমণের পর প্রতিশোধ নিতে সক্ষম হবে, যা পারমাণবিক প্রতিরোধের ভিত্তি হয়ে উঠবে।
advertisement
বল প্রক্ষেপণ: ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন এবং রাশিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ভারতের একটি বায়ুবাহিত শক্তি থাকবে।নীরব প্রস্তুতি চলছে- প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিমানবাহিনী এই প্রকল্পের নাম দিয়েছে 'আল্ট্রা লং-রেঞ্জ স্ট্রাইক এয়ারক্রাফট' বা ULRA। বর্তমানে এটি ধারণা এবং নকশার পর্যায়ে রয়েছে, তবে প্রাথমিক গবেষণা এবং ডামি মডেলের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে যে এর প্রথম প্রোটোটাইপ ২০৩২-২০৩৫ সালের মধ্যে উড়তে পারে।