সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন ৷ অনবরত চলছে গোলাগুলি ৷ চলছে হেভি শেলিং ৷ বোমের তীব্র আওয়াজে রীতিমত কাঁপছে সীমান্ত ৷ এহেন পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণ রেখার বাসিন্দাদের বেঁচে থাকাই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে ৷ প্রতিদিন রাতের বেলা ঘুমের পর আদৌ কি তাঁরা পরের দিন সকালটা দেখতে পাবেন ? সেটিও তাঁরা জানেন না ৷ এমন ভাবেই অনিশ্চিয়তার মধ্যে দিয়েই দিন কাটছে নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের ৷
রাখমাত ৷ তাঁর বয়স এখন ৫০-র কোঠায় ৷ এলওসি থেকে ১০ কিলোমিটার ভিতরে পুঞ্চে একটি মাটির বাড়িতে থাকেন রাখমাত ৷ বিগত চার পাঁচ দিনের গুলির লড়াইয়ের জেরে রোজই সতর্ক থাকেন তিনি ৷ শনিবার রাতে ঘরের লাইট বন্ধ করে ঘুমোতে যাওয়ার তোরজোড় করছিলেন তিনি ৷ আচমকাই প্রবল বিস্ফোরণ ৷ রাতের ঘন কালো অন্ধকার আকাশ ভেদ করে গুলির একটা অংশ এসে পড়ে রাখমাতের বাড়ির ছাদে ৷ শনিবার রাতের গুলির লড়াই প্রাণ কাড়ল পঞ্চাশোর্ধ রাখমাতের দুই নাতি-নাতনি এবং বৌমা ৷
গত শুক্রবার বিকেল থেকে সীমান্তের পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ৷ পরপর বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে সালত্রি গ্রাম ৷ ঠাকুরের নাম নিয়েই রাত কাটান রাখমাতের মত গ্রামের সকল বাসিন্দাই ৷ যেকোনও মুহূর্তে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে গোটা গ্রাম ৷ সেই আশঙ্কা নিয়ে দিন কাটে তাঁদের ৷ তাদের সকলের এখন একটাই প্রার্থনা ৷ দ্রুত ইন্দো-পাক সীমান্তের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক এবং দু’দেশের মধ্যে শান্তি ফিরে আসুক ৷
রাখমাতের ছেলে একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন ৷ সংসার সামলানোর জন্য রুজি-রুটি যোগাড় করার দায়িত্ব ছিল তাঁর উপরই ৷ কিন্তু গুলির লড়াইয়ে পা খুইয়ে আজ ঘরেতেই বন্দি রাখমাতের ছেলে ৷ শুধু রাখমাতের ছেলে নয় ৷ নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারাই এভাবেই অনিশ্চিয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন ৷