কোরিয়ানদের মতো 'গ্লাস স্কিন' পাওয়া যায় এভাবেই? এত সহজ...!খালি পেটে শুধু এই জল...সত্যি না মিথ্যা জেনে নিন

কিশমিশ ভেজানো জল প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল ত্বক পাওয়ার একটি ঘরোয়া উপায় হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এক মুঠো কিশমিশ সারা রাত জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে সেই জল পান করার ফলে নাকি ত্বকের উপকারিতা পাওয়া যায়। এই তথ্য কতটা সত্যি? জানুন বিশদে।

কোরিয়ান গ্লাস স্কিন পাওয়ার জন্য এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে যুবসমাজ। ঝকঝকে দাগমুক্ত ত্বকের ঔজ্জ্বল্য দেখানো কি শুধুই টাকার খেল? একেবারেই না। পুষ্টিবিদরা বলছেন, ঘরেই রয়েছে উপায়। জেনে নিলে আপনিও পাবেন এই ত্বক। রোজ সকালে নাকি শুধু খেতে হবে এক বিশেষ জল।

এই টোটকায় প্রাকৃতিক ভাবেই কোরিয়ান গ্লাস স্কিন পাবেন। পার্লারে যেতে হবে না, কিংবা অস্ত্রোপচার-ইঞ্জেকশনও লাগবে না; অথচ ফল পাবেন চোখের সামনে। হাতে নিন একটু কিশমিশ ।

কিশমিশে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং পটাসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকে। এটি ত্বকের টেক্সচার উন্নত করতে, ত্বকের মলিনতা দূর করতে এবং ত্বকের আর্দ্রতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। আর কিশমিশ ভেজানো জলে এই উপকারিতাগুলো আরও বাড়ে বলে ধারণা।

এর পেছনে কী বিজ্ঞান কাজ করে? যদিও সরাসরি কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই যে কিশমিশ ভেজানো জল খেলে উজ্জ্বল ত্বক পাওয়া যায়, তবুও কিশমিশে থাকা পুষ্টিগুণ ত্বকের সামগ্রিক স্বাস্থ্যে ভূমিকা রাখে। চলুন জেনে নেওয়া যাক।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস: কিশমিশে পলিফেনল নামে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ফ্রি র‍্যাডিক্যালের সঙ্গে লড়াই করে। এটি বার্ধক্য এবং ত্বকের মলিনতা দূর করতে সহায়তা করে।

আয়রন: আয়রন ত্বকের কোষের অক্সিডেশনের জন্য প্রয়োজনীয়, যা একটি সুস্থ এবং উজ্জ্বল ত্বকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

আর্দ্রতা: কিশমিশ ভেজানো জল শরীরকে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা জোগায়, যা নরম এবং দীপ্তিময় ত্বক বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ।

ফাইবার: কিশমিশ ফাইবার সমৃদ্ধ, যা হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। হজম ভালো থাকলে ত্বকের স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

ব্রণ নিরাময়: কিশমিশ ভেজানো জলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ডিটক্সিফাইং বৈশিষ্ট্য ব্রণ কমাতে সহায়ক। কিশমিশে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র‍্যাডিক্যালের সঙ্গে লড়াই করে, যা প্রদাহ তৈরি করে এবং ব্রণকে তীব্র করে তোলে।

কিশমিশ ভেজানো জল পান করলে শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে এবং আর্দ্রতা বাড়ায়। এই দুটি বিষয় ত্বকের স্বাস্থ্যে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। তবে এটি ব্রণ নিরাময়ের নিশ্চয়তা দিতে পারে না, কারণ ব্রণ হওয়ার কারণ হতে পারে হরমোনজনিত সমস্যা, খাদ্যাভ্যাস, জেনেটিক্স, এবং ত্বকের যত্নের অভ্যাস। দীর্ঘস্থায়ী ব্রণের ক্ষেত্রে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

মিথ না সত্য? খালি পেটে কিশমিশ ভেজানো জল পান করলে ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত হতে পারে আর্দ্রতা এবং পুষ্টিগুণের মাধ্যমে। তবে এটি কোনো জাদুকরী সমাধান নয়। এর প্রভাব সূক্ষ্ম।

ত্বকের যত্নে একটি সমন্বিত পদ্ধতি প্রয়োজন, যার মধ্যে থাকবে পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং যথাযথ আর্দ্রতা বজায় রাখা। কিশমিশ ভেজানো জল পান করার উপকারিতা পুরোপুরি মিথ নয়। এর কিছু উপকারিতা রয়েছে, তবে এটি কোনও সম্পূর্ণ অলৌকিক সমাধান নয়। এটি আপনার সকালের রুটিনে একটি স্বাস্থ্যকর সংযোজন, যা সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে।

এনার্জি বুস্টার কিশমিশে উপস্থিত আরজিনিন নামক প্রোটিন শরীরে শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। (Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন)