

♦ প্যাচপেচে ভ্যাপসা গরম, লু হাওয়া, শুষ্কতা, চাঁদিফাটা রোদ্দুর- গরমকালের এই বিষয়গুলো যতই অসহনীয় হোক না কেন, আমের কথা মনে পড়লেই এসব মাফ হয়ে যায়। গরমের এই ফলটি এই জন্যই বোধহয় ফল বংশের রাজা। কাঁচা হোক, পাকা হোক ভারতীয়রা সব রকমভাবেই এই ফল ব্যবহার করতে জানে। রান্নায় হোক, চাটনিতে, আচারে, শরবতে- সবেতেই আমের একচ্ছত্র আধিপত্য। স্বাদের কথা ছেড়েই দিলাম, স্বাস্থ্যেও আমের ভূমিকা একাধিক।


♦ জানলে অবাকই হবেন, ফল হিসেবে শরীরে আমের গুরুত্ব তো আছেই, আমপাতাও কিন্তু স্বাস্থ্যের পক্ষে ভীষণ প্রয়োজনীয়। বহুকাল ধরেই নানান শারীরিক সমস্যায় আমপাতা ব্যবহার হয়ে আসছে ঘরোয়া টোটকা হিসেবে। যেমন বলা যাক, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আমপাতার ভূমিকা যথেষ্ট।


♦ কচি অবস্থায় আমের পাতাগুলি সাধারণত লালচে বা বেগুনি রঙের হয়। যত বড় হয় গাঢ় সবুজ হয় আমের পাতা। এই পাতায় রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফ্লাভনয়েডস ও ফেনল। পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে বা গরম জলে আমপাতা ফুটিয়ে ক্বাথ বানিয়ে খাওয়া যায় এটি।


♦ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বহু জায়গাতেই আমপাতা রান্না করেও খাওয়া হয়। এই পাতায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান রয়েছে যার ফলে এর ঔষধিগুণও অনেক বেশি ৷


♦ ব্লাড সুগার ও ডায়াবেটিস রুখতে আম পাতা ব্যবহার করবেন কীভাবে? চিনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন ওষুধে আমপাতা ব্যবহার করা হয়। আমপাতার নির্যাস ডায়াবেটিস এবং হাঁপানির রোগে উপকারে আসে। তবে, 2010 সালে ইঁদুরের উপর এক বিশেষ বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা যেসব ইঁদুরকে আমপাতার নির্যাস দেওয়া হয়েছিল তাঁদের শরীরে গ্লুকোজ শোষণের পরিমাণ কম।


♦ এর কারণ হল, আমপাতার নির্যাস শরীরের ইনসুলিন উৎপাদন বৃদ্ধি করে এবং এতে ভিটামিন সি, পেক্টিন ও ফাইবার থাকার ফলে রক্তে কোলেস্টেরলের বিরুদ্ধেও লড়াই করে। এছাড়া, অন্যান্য ডায়াবেটিক উপসর্গ যেমন, ঘন ঘন প্রস্রাব, দৃষ্টিশক্তির ঝাপসা হওয়া থেকেও আমাদের রক্ষা করে আমপাতা।


♦ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে দশ থেকে পনেরোটি কচি আমপাতা জলে দিয়ে ফোটাতে হবে। সেই জল এক রাত রেখে খেলে উপকারে আসে। তবু, ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে কোনও ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহারের আগে ডায়েটিশিয়ান বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ অবশ্যই নিন।