জীবনের ওঠা-পড়া যতই আমরা সহজ ভাবে নিই না কেন, মাঝেমধ্যে সেই ওঠা-পড়া একটু হলেও গায়ে লেগে যায়। স্কুলজীবন থেকে কলেজ হয়ে চাকরি বা সম্পর্কের টানাপোড়েন, মানসিক চাপ আর উত্তেজনা কখনও না কখনও আমাদের সামনে মূর্তিমান শয়তানের মতো এসে দাঁড়ায়। শারীরিক সমস্যা নিয়ে আমরা যতটা খোলাখুলি কথা বলতে স্বচ্ছন্দ বোধ করি, মানসিক অসুখ নিয়ে তার এক কণাও করি না। আমার মন, আমার ইচ্ছে- এই বলে ‘ইমোশনাল ইটিং’-এর দোহাই দিয়ে যা ইচ্ছে খেয়ে যাই। মনে করি এগুলো গপগপ করে খেলেই বোধ হয় মন শান্ত হবে।
সেটা তো হয়ই না, উল্টে সেই সব খাদ্যদ্রব্যের প্রভাবে স্ট্রেস আর উত্তেজনা দ্বিগুণ বেড়ে যায়। পুষ্টিবিদরা বলছেন, কয়েকটা খাবার শরীরে প্রবেশ করে অকারণে রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে দেয়, রক্তে চিনির মাত্রা দ্বিগুণ করে মানসিক দ্বন্দ্বের মুখে ফেলে দেয়। তাই এ বার থেকে একটু সাবধান হন! খাবার মনের অসুখ সারায় না, এটা ভেবে নিয়েই সচেতন ভাবে কয়েকটা খাবার এড়িয়ে চলুন।
দ্বিতীয় যে খাবারের দিকে আপনার ফিরেও তাকানো উচিৎ নয় সেটি হল প্রসেসড খাবার। সে আপনার মানসিক চাপ না থাকলেও তাকাবেন না, থাকলে তো একেবারেই তাকাবেন না। হ্যাঁ, খেতে ভারি ভালো লাগে সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে এই খাবার বদহজমের মূল কারণ। এতে কোনও ফাইবার থাকে না তাই শরীরও সঠিক ভাবে তার কাজ না করতে পেরে খামোখা উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
এক কাপ কফি খেলেই জীবনের সর্ব দুঃখ দূর হবে এই ফাঁদে ভুলেও পা দেবেন না। সকালে উঠে যদি বেজায় মন খারাপ লাগে তা হলে ছাদে গিয়ে মুক্ত বায়ু সেবন করুন। কিন্তু এক কাপ কফি নিয়ে বসে যাবেন না। কফি এবং অন্যান্য এনার্জি ড্রিঙ্কে যে গুচ্ছ গুচ্ছ ক্যাফিন থাকে তা আপনার স্নায়ুকে সাময়িক উত্তেজনা দেয় বটে কিন্তু এতে লাভের লাভ কিচ্ছু হয় না।
কেক, কুকি, একগাদা চিনি দেওয়া শরবত এগুলোও কিন্তু নৈব নৈব চ! এই সবগুলোতেই অনাবশ্যক চিনি থাকে যা রক্তে চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে অ্যাংজাইটিও বাড়িয়ে দেয়। এতেও অত্যন্ত কম ফাইবার থাকে যা মোটেও ভালো নয়। যদি কিছু পান করতেই হয় তা হলে সবজি বা ফলের স্মুদি (চিনি ছাড়া) তৈরি করে নিন। এইজাতীয় স্মুদিতে প্রোটিন আছে। কিন্তু ভুলেও কৃত্রিম স্মুদি যার কোনও পুষ্টিগুণ নেই সেটা পান করবেন না, এগুলো হয়তো আপনার রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দেবে বা কমিয়ে দেবে। দু'টোর কোনওটাই কিন্তু ভাল নয়। তা ছাড়া অকারণে ফল আর সবজিহীন স্মুদি পান করলে আপনার স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হবে।