ওয়াজেদ আলি শাহ-র হাত ধরে কলকাতায় প্রথম বিরিয়ানির প্রবেশ আর একেবারেই ভিনদেশী এই পদটাকে মন-প্রাণ দিয়ে ভালবেসে ফেলল আপামর বাঙালি! লম্বা-লম্বা চালের ভাত, তুলতুলে মাংস আর নধর একখানা আলু... উফফ একেই কি কয় স্বর্গসুখ! বিরিয়ানির অন্যতম আকর্ষণ কিন্তু ওই নধর আলুখানাই! তবে, বিরিয়ানিতে আলু কিন্তু দেখা যায় শুধু বাংলায়! বাংলার বাইরে অন্য কোনও রাজ্যেই বিরিয়ানিতে আলু দেওয়া হয় না! জানেন কি, কেন কলকাতার বিরিয়ানিতে আলু থাকে?
আওয়াধি বিরিয়ানি আর আমাদের কলকাতার বিরিয়ানির মধ্যে তফাত একটাই, তা হল আলু। বলা হয়, ওয়াজেদ আলী শাহ যখন কলকাতায় আসেন তখন তাঁর হাতে তেমন অর্থ ছিল না! কিন্তু তিনি খেতে এবং খাওয়াতে ভালবাসতেন। পরিচিতদের দাওয়াত দিয়ে বিরিয়ানি খাওয়াতেন। কিন্তু মাংসের দাম এত বেশি ছিল যে, বিপুল পরিমাণে মাংস কিনে বিরিয়ানি তৈরি করার খরচ বাঁচাতে বিরিয়ানিতে আলুর ব্যবহার শুরু হয়। তবে সে-সময় আলু আজকের মতো এতটাও সস্তা ছিল না! পর্তুগিজরা এদেশে আলু নিয়ে আসেন।
আরেকটি গল্পও শোনা যায়! ইতিহাসবিদদের একাংশের মত, কলকাতায় বিরিয়ানি প্রথম তৈরি হয়েছিল গরিব শ্রমিকদের খাওয়ার জন্যই। তখন আওয়াধের নবাব আসফ-উদ-দৌলার রাজ, বড়া ইমামবড়া তৈরির কাজ চলছে। প্রায় হাজার কুড়ি নির্মাণ শ্রমিক কাজ করছিলেন সেখানে। তাঁদের ভরপেট খাবার চাই ! তাই এরকম একটি খাবারের পরিকল্পনা করা হল, যেখানে চাল মাংস সবজি সব একসঙ্গেই থাকবে, কাজেই আলাদা আলাদা রান্নার ঝামেলা নেই, অথচ শ্রমিকদের পেট-ও ভরবে, খরচা ও সময়, দুটোই বাঁচবে!