রাহুর গ্রাস থেকে 'ব্লাড মুন' পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ কখন শুরু কখন শেষ? কেন লাল হবে চাঁদ? কাদের দেখতে নেই? কী বলছে বিজ্ঞান? কী জানালেন জ্যোতির্বিদ সঞ্জীব সেন
- Published by:Soumendu Chakraborty
- news18 bangla
- Written by: EERON ROY BARMAN
Last Updated:
বিজ্ঞানের নজরে চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণ আদতে প্রাকৃতিক বা মহাজাগতিক ঘটনা ছাড়া কিছু নয়। তার মধ্যে চন্দ্রগ্রহণ সুদৃশ্য একটি বিষয়। তাই কুসংস্কারমুক্ত মনে এই প্রাকৃতিক ঘটনাকে প্রত্যক্ষ করা উচিত। এই প্রসঙ্গে পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টারের প্রাক্তন অধিকর্তা সঞ্জীব সেন কখন, কোথায়, কী ভাবে গ্রহণ দেখতে হবে তারই হদিস দিলেন।
গ্রহণ নিয়ে মানুষের মনে কৌতূহলের শেষ নেই। কিন্তু এই কৌতূহলের পাশাপাশি রয়েছে বেশ কিছু ভ্রান্তিও। সেই ভুল ধারণা থেকে জন্ম নিয়েছে কুসংস্কার। অনেকেই সেই কুসংস্কারকে মনে থেকে দূর করতে পারছেন না। যদিও বিজ্ঞানের নজরে চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণ আদতে প্রাকৃতিক বা মহাজাগতিক ঘটনা ছাড়া কিছু নয়। তার মধ্যে চন্দ্রগ্রহণ সুদৃশ্য একটি বিষয়। তাই কুসংস্কারমুক্ত মনে এই প্রাকৃতিক ঘটনাকে প্রত্যক্ষ করা উচিত। এই প্রসঙ্গে পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টারের প্রাক্তন অধিকর্তা সঞ্জীব সেন কখন, কোথায়, কী ভাবে গ্রহণ দেখতে হবে তারই হদিস দিলেন।
advertisement
advertisement
কবে এবং কখন দেখা যাবে গ্রহণ?
গ্রিনিচ মান মন্দির বা ইউনিভার্সাল টাইম কোঅর্ডিনেট (ইউটিসি) অনুসারে ৭ সেপ্টেম্বর, রবিবার বিকেল ৩টে ২৫ মিনিটে শুরু হবে চন্দ্রগ্রহণ।ভারতীয় সময় অনুযায়ী রবিবার রাত ৮টা ৫৮ মিনিট। অন্যদিকে, ইউটিসি অনুসারে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে শেষ হবে এই গ্রহণ। ভারতীয় সময় অনুযায়ী তখন ৮ সেপ্টেম্বর, সোমবার রাত ২টো বেজে ২৫ মিনিট। পূর্ণগ্রাস গ্রহণের সময়ে চাঁদের রং হয়ে উঠবে লাল। ভারতে সেই দৃশ্য দেখা যাবে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা থেকে ৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ২২ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৮২ মিনিট সময় ধরে।
গ্রিনিচ মান মন্দির বা ইউনিভার্সাল টাইম কোঅর্ডিনেট (ইউটিসি) অনুসারে ৭ সেপ্টেম্বর, রবিবার বিকেল ৩টে ২৫ মিনিটে শুরু হবে চন্দ্রগ্রহণ।ভারতীয় সময় অনুযায়ী রবিবার রাত ৮টা ৫৮ মিনিট। অন্যদিকে, ইউটিসি অনুসারে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে শেষ হবে এই গ্রহণ। ভারতীয় সময় অনুযায়ী তখন ৮ সেপ্টেম্বর, সোমবার রাত ২টো বেজে ২৫ মিনিট। পূর্ণগ্রাস গ্রহণের সময়ে চাঁদের রং হয়ে উঠবে লাল। ভারতে সেই দৃশ্য দেখা যাবে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা থেকে ৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ২২ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৮২ মিনিট সময় ধরে।
advertisement
কোথা থেকে দেখা যাবে?
এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা মহাদেশ থেকে দেখা যাবে এই চন্দ্রগ্রহণ। ভারতের প্রায় সব শহর থেকেই দেখা যাবে। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, পুণে, লখনউ, হায়দরাবাদ, চণ্ডীগড় থেকে এই গ্রহণ স্পষ্ট দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু, এইক্ষেত্রে অবশ্যই আবহাওয়া অনুকূল থাকতে হবে। আকাশে মেঘ থাকলে গ্রহণ দেখায় বিঘ্ন হতে পারে।
এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা মহাদেশ থেকে দেখা যাবে এই চন্দ্রগ্রহণ। ভারতের প্রায় সব শহর থেকেই দেখা যাবে। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, পুণে, লখনউ, হায়দরাবাদ, চণ্ডীগড় থেকে এই গ্রহণ স্পষ্ট দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু, এইক্ষেত্রে অবশ্যই আবহাওয়া অনুকূল থাকতে হবে। আকাশে মেঘ থাকলে গ্রহণ দেখায় বিঘ্ন হতে পারে।
advertisement
কী ভাবে দেখতে হবে?
সূর্যগ্রহণের ক্ষেত্রে যেমন বিশেষ চশমার প্রয়োজন হয়। চন্দ্রগ্রহণের ক্ষেত্রে কোনও বিশেষ চশমার প্রয়োজন হয় না। খালি চোখেই দেখা যায় গ্রহণ। গ্রহণের সময়ে চাঁদ থাকে ফ্যাকাশে। সরাসরি সূর্যের দিকে তাকালে চোখের সমস্যা হয়। কিন্তু চাঁদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। সূর্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে চাঁদে পড়ে। সেখান থেকে সেই আলো প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে পড়ে বলেই আমরা চাঁদকে দেখতে পাই। তাই চন্দ্রগ্রহণ দেখার ক্ষেত্রে চোখের কোনও সুরক্ষার প্রয়োজন নেই। রবিবার রাতে কোনও অন্ধকার জায়গায় দাঁড়িয়ে খালি চোখে আকাশে তাকালেই দেখা যাবে চন্দ্রগ্রহণ।
সূর্যগ্রহণের ক্ষেত্রে যেমন বিশেষ চশমার প্রয়োজন হয়। চন্দ্রগ্রহণের ক্ষেত্রে কোনও বিশেষ চশমার প্রয়োজন হয় না। খালি চোখেই দেখা যায় গ্রহণ। গ্রহণের সময়ে চাঁদ থাকে ফ্যাকাশে। সরাসরি সূর্যের দিকে তাকালে চোখের সমস্যা হয়। কিন্তু চাঁদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভিন্ন। সূর্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মধ্যে দিয়ে চাঁদে পড়ে। সেখান থেকে সেই আলো প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে পড়ে বলেই আমরা চাঁদকে দেখতে পাই। তাই চন্দ্রগ্রহণ দেখার ক্ষেত্রে চোখের কোনও সুরক্ষার প্রয়োজন নেই। রবিবার রাতে কোনও অন্ধকার জায়গায় দাঁড়িয়ে খালি চোখে আকাশে তাকালেই দেখা যাবে চন্দ্রগ্রহণ।
advertisement
advertisement
advertisement
গ্রহণের চাঁদ কখন সবচেয়ে লাল হয়?
চাঁদ উদয় বা অস্ত হচ্ছে (দিগন্তের কাছাকাছি থাকলে), এমন সময়ে গ্রহণ হলে তাকে সবচেয়ে বেশি লাল দেখায়। কারণ, সে সময় আবহাওয়া মণ্ডলের মধ্যে দিয়ে সূর্যের আলোকে অনেকটা ভ্রমণ করে চাঁদে পৌঁছোতে হয়। চাঁদ মাথার উপরে থাকার সময়ে গ্রহণ হলে তাকে ‘প্রকট’ লালচে কালো না-ও দেখা যেতে পারে। রবিবার যখন পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ চলবে, তখন ভারতে মধ্যরাত। ৭ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সময় রাত ১১টা থেকে ৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ২২ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৮২ মিনিট সময় ধরে চলবে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। সে সময় চাঁদ যেহেতু মধ্যগগনে থাকবে, তাই ভারত থেকে গ্রহণের চাঁদকে ততটা লাল না-ও দেখাতে পারে।
চাঁদ উদয় বা অস্ত হচ্ছে (দিগন্তের কাছাকাছি থাকলে), এমন সময়ে গ্রহণ হলে তাকে সবচেয়ে বেশি লাল দেখায়। কারণ, সে সময় আবহাওয়া মণ্ডলের মধ্যে দিয়ে সূর্যের আলোকে অনেকটা ভ্রমণ করে চাঁদে পৌঁছোতে হয়। চাঁদ মাথার উপরে থাকার সময়ে গ্রহণ হলে তাকে ‘প্রকট’ লালচে কালো না-ও দেখা যেতে পারে। রবিবার যখন পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ চলবে, তখন ভারতে মধ্যরাত। ৭ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সময় রাত ১১টা থেকে ৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২টা ২২ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৮২ মিনিট সময় ধরে চলবে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। সে সময় চাঁদ যেহেতু মধ্যগগনে থাকবে, তাই ভারত থেকে গ্রহণের চাঁদকে ততটা লাল না-ও দেখাতে পারে।
advertisement
রাহুর গ্রাস বলা হয় তা কি ঠিক?
অতীতে অনেকে মনে করতেন, ‘রাহু’ নামে এক রাক্ষস চাঁদ বা সূর্যকে গিলে খায়। তাই মাঝেমধ্যে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে ওঠে সূর্য এবং চাঁদ। কিন্তু সেই রাক্ষসের গলা কাটা বলে তারা আবার গ্রাস থেকে বেরিয়ে আসে। এ নিয়ে বিজ্ঞানীরা বার বার বুঝিয়েছেন। তবু বহু মানুষের মনে সংশয় রয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এক প্রবন্ধে আক্ষেপ করেছিলেন স্বয়ং আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়। তিনি আক্ষেপের সঙ্গেই লিখেছিলেন, গ্রহণ কেন হয়, তা ক্লাসে ছাত্রদের পড়িয়েছেন। ছাত্রেরা পড়ে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে। তার পরেও চন্দ্রগ্রহণ হলে সেই তারাই ঢাকঢোল বাজিয়েছে! কুসংস্কার সমস্ত পালন করেছে।
অতীতে অনেকে মনে করতেন, ‘রাহু’ নামে এক রাক্ষস চাঁদ বা সূর্যকে গিলে খায়। তাই মাঝেমধ্যে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে ওঠে সূর্য এবং চাঁদ। কিন্তু সেই রাক্ষসের গলা কাটা বলে তারা আবার গ্রাস থেকে বেরিয়ে আসে। এ নিয়ে বিজ্ঞানীরা বার বার বুঝিয়েছেন। তবু বহু মানুষের মনে সংশয় রয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এক প্রবন্ধে আক্ষেপ করেছিলেন স্বয়ং আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়। তিনি আক্ষেপের সঙ্গেই লিখেছিলেন, গ্রহণ কেন হয়, তা ক্লাসে ছাত্রদের পড়িয়েছেন। ছাত্রেরা পড়ে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে। তার পরেও চন্দ্রগ্রহণ হলে সেই তারাই ঢাকঢোল বাজিয়েছে! কুসংস্কার সমস্ত পালন করেছে।
advertisement
advertisement
advertisement
গ্রহণের সময় খেতে নেই?
সূর্য এবং চন্দ্রগ্রহণ মহাজাগতিক ঘটনা। তাকে কেন্দ্র করে কিছু চিন্তাভাবনা রয়েছে। কিন্তু সেই চিন্তাভাবনার সত্যতার প্রমাণ কেউ দিতে পারেননি। গ্রহণের সময়ে খাওয়াদাওয়া না করার যে যুক্তি দেওয়া হয়, তা বিজ্ঞানসম্মত নয়। সূর্যগ্রহণের ক্ষেত্রে বলা হয়, সূর্য ঢাকা পড়ে গেলে কিছু খেতে নেই। সন্ধ্যায় বা রাতে সকলেই খান। তখন সূর্য আকাশে থাকে না। একই ভাবে আকাশে চাঁদের অনুপস্থিতিতেও খাওয়া-দাওয়া করা হয়। গ্রহণের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করার কোনও সম্পর্ক নেই। এটা শুধুই কুসংস্কার।
সূর্য এবং চন্দ্রগ্রহণ মহাজাগতিক ঘটনা। তাকে কেন্দ্র করে কিছু চিন্তাভাবনা রয়েছে। কিন্তু সেই চিন্তাভাবনার সত্যতার প্রমাণ কেউ দিতে পারেননি। গ্রহণের সময়ে খাওয়াদাওয়া না করার যে যুক্তি দেওয়া হয়, তা বিজ্ঞানসম্মত নয়। সূর্যগ্রহণের ক্ষেত্রে বলা হয়, সূর্য ঢাকা পড়ে গেলে কিছু খেতে নেই। সন্ধ্যায় বা রাতে সকলেই খান। তখন সূর্য আকাশে থাকে না। একই ভাবে আকাশে চাঁদের অনুপস্থিতিতেও খাওয়া-দাওয়া করা হয়। গ্রহণের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করার কোনও সম্পর্ক নেই। এটা শুধুই কুসংস্কার।
advertisement