

গত ৭ মাস ধরে করোনা অতিমারির জেরে পিপিই কিট, N95 মাস্ক, গ্লভস, ফেস শিল্ড, শ্যু কভার-সহ নানা জিনিসের সঙ্গে আমরা এখন পরিচিত হয়ে গিয়েছি৷ ভাইরাস রুখতে গোটা বিশ্ব লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে৷ এ হেন অতিমারির আবহে চিনের উত্তরে একটি শহরে আবার ধরা পড়েছে বহু প্রাচীন বিউবনিক প্লেগ (Bubonic plague)৷ এই রোগের একসময়কে বিশ্বে কালো মৃত্যু, মহান মরণশীলতা ইত্যাদি নানা নাম ছিল৷


চিনের সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, উত্তর চিনের ওই শহরে অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে বিউবনিক প্লেগ নিয়ে৷ ইনার মঙ্গোলিয়া অটোনমাস রিজিয়নে বায়ানুরে লেভেল ৩ সতর্কতা জারি করেছে প্লেগ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল৷ স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এই সতর্কতা চলবে ২০২০ সালের শেষ পর্যন্ত৷


১৩৪৭ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে প্রথম বিউবনিক প্লেগ ধরা পড়ে৷ শুরু হয় মহামারি৷ ইউরেশিয়া ও উত্তর আমেরিকায় প্রায় ২০ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল এই ভয়াল অতিমারিতে৷ তখনকার দিনেও ডাক্তাররা বিউবনিক প্লেগের চিকিত্সা করতে মাস্ক ব্যবহার করতেন৷ কিন্তু সে মাস্ক দেখলে অবাক লাগে৷


কী রকম সেই মাস্ক? তখন পিপিই কিট ছিল না৷ তবে যে কস্টিউমটা ছিল, তা রীতিমতো ভয়াবহ৷ সত্যজিত্ রায়ের 'বৃহচ্চঞ্চু' গল্পটির সেই বিরাট ঠোঁটের পাখিটির কথা মনে পড়ায় এই মাস্ক৷ কালো মুখোশ৷ তার সঙ্গে বিরাট কালো ঠোঁট৷ সঙ্গে কালো টুপি৷ গ্লভস৷ সেই সময় ওই মাস্ক ফ্যাশন হয়ে গিয়েছিল৷


কেন এই রকম ভয়াবহ দেখতে মাস্ক? কারণ, এই ধরনের মাস্ক খারাপ বাতাস থেকে রক্ষা করত৷ সে যুগে চিকিত্সকরা এই বিরাট ঠোঁটের মুখোশের মধ্যে সাপের মাংস শুকিয়ে তৈরি পাউডার, দারুচিনি, সুগন্ধি ভেষজ রস, মধু ও ৫৫টি-রও বেশি ভেষজ মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে ওই মাস্কের ঠোঁটের মধ্যে রাখত৷ যাতে বাতাস ফিল্টার হয়ে নাকে ঢোকে৷ কারণ, ডাক্তাররা বিশ্বাস করতেন, দুষিত বাতাস থেকেই বিউবনিক প্লেগের জীবাণু শরীরে ঢুকছে৷