Israel iran War role China: চিন ঢুকলে বদলে যাবে যুদ্ধ..‘বন্ধু’ ইরানকে কী জোগাচ্ছে বেজিং? শুধুই হাতিয়ার নয় কিন্তু...
- Published by:Satabdi Adhikary
- news18 bangla
Last Updated:
চিন হয়ত এখনও ইজরায়েল-ইরান যুদ্ধে সরাসরি জড়িত নয়৷ কিন্তু তার অস্ত্র, প্রযুক্তি এবং কৌশলগত সহায়তা ইরানকে এই সংঘাতে টিকে থাকার শক্তি দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই গোটা সংঘাতে চিন 'নীরব কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়'।
তপ্ত তাওয়া হয়েছে রয়েছে মিডল ইস্ট৷ গত ১৩ জুন শুক্রবার ভোররাতে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র-সহ, ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র এবং তেহরানের সামরিক শীর্ষকর্তা-সহ ২০০ টিরও বেশি জায়গাকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছিল ইজরায়েল৷ তার পাল্টা জবাবে ১৩-১৪ জুনের গোটা রাত ধরেই তার শোধ তুলল ইরান৷ ইজরায়েলের বিশ্বখ্যাত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম আয়রন ডোমকে ভেঙে ১০০টা ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা চলল তেল আভিভে৷ এবার প্রশ্ন উঠছে, ইরানের পিছনে কি প্রচ্ছন্ন সাহায্য রয়েছে অন্য কোনও দেশের? আর সেই দেশটা কি চিন?
advertisement
অন্য দিকে, ইজরায়েলের বন্ধু রাষ্ট্র আমেরিকা অবশ্য দাবি করছে ইরান-ইজরায়েলের যুদ্ধে তাদের কোনও ভূমিকা নেই৷ তবে পাশাপাশি, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হুঁশিয়ারির ঢঙে ইরানকে ‘পরামর্শ’ দিতেও শোনা গেছে৷ ট্রাম্প বলেছে, ‘‘ওরা সবাই মরে গেছে, খুব দেরি করলে আর কিছুই বেঁচে থাকবে না৷ সব শেষ হয়ে যাওয়ার আগে ওদের উচিত (পরমাণু) চুক্তি সই করে নেওয়া৷ সব শান্ত হয়ে যাবে৷’’ এদিকে শোনা যাচ্ছে, ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইরানকে একাধিক অস্ত্র সাপ্লাই করছে চিন৷ জানেন সেগুলো কী কী, কীভাবে তা আমেরিকার ‘বন্ধু’ ইজরায়েলকে পর্যুদস্ত করতে পারে?
advertisement
এই যুদ্ধে আমেরিকা, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স ইজরায়েলের সমর্থনে দাঁড়িয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রপতি রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সাথেও কথা বলছে। নজর রয়েছে চিনের দিকেও। মনে করা হচ্ছে, চিন এবং রাশিয়া যদি ইরানকে সমর্থন করে, তাহলে ইজরায়েলের সঙ্গে এই যুদ্ধের পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। প্রশ্ন হল ইরানের সাথে চিনের কী ধরনের সম্পর্ক রয়েছে। পাকিস্তানের মতো ইরানকেও কি অস্ত্র সরবরাহ করে চিন? যদি করে, সেগুলো কী কী?
advertisement
ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় শুরু৷ চিন ও ইরানের মধ্যে সামরিক ও কৌশলগত সহযোগিতা নতুন নয়। ১৯৮০-এর দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় চিন ইরানকে অস্ত্র সরবরাহ শুরু করে। সেই সময়, চিন এবং উত্তর কোরিয়ার মতো দেশগুলি পশ্চিমি দেশগুলির সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া ইরানের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী হয়ে ওঠে। তারপর থেকে, প্রতিরক্ষা, তেল এবং প্রযুক্তি খাতে দুই দেশের মধ্যে ‘বন্ধুত্ব’ ক্রমেই বেড়েছে।
advertisement
১৯৮০-এর দশকে যখন ইরান ও ইরাকের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়, তখন পশ্চিমি দেশ ইরানের উপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সেই সময় ইরানকে অস্ত্রের জোগান দিয়েছিল চিন? সেই সময় চিন ইরানকে HY-2 (সিল্কওয়ার্ম) অ্যান্টি-শিপ মিসাইল সরবরাহ করে। আমেরিকা যখন প্রমাণ দিয়ে চিনকে কোণঠাসা করে, তখন চিন বলে, 'এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি উত্তর কোরিয়া সরবরাহ করেছে!' কিন্তু গোয়েন্দা সূত্র নিশ্চিত করে যে, কিছু ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি চিন থেকে ইরানে গিয়েছিল।
advertisement
advertisement
চিন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র জ্বালানি অর্ডার করেছে ইরান৷ গত সপ্তাহেই খবর আসে যে, ইরান চিন থেকে হাজার হাজার টন ক্ষেপণাস্ত্র জ্বালানি অর্ডার করেছে। এই জ্বালানি দিয়ে হাজার হাজার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করা যেতে পারে। আসলে, ইরান অনেক দিন ধরেই ইসরায়েলি আক্রমণের আশঙ্কা করছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে জোড়া হুমকিকে সতর্ক ছিল ইরান।
advertisement
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এক বছরের মধ্যে এটি দ্বিতীয়বার চিন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র জ্বালানি কিনেছে ইরান। চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে, দু’টি ইরানি জাহাজ, গোলবন এবং জাইরান, চিন থেকে ১,০০০ টন সোডিয়াম পারক্লোরেট লোড করেছিল, যা এই জ্বালানির কাঁচামাল। এটি থেকে ২৬০টি ছোট ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করা যেতে পারে।
advertisement
ইরানকে চিন কোন কোন অস্ত্র সাপ্লাই করে? চিন বিভিন্ন সময়ে ইরানকে বিভিন্ন ধরনের সামরিক সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে৷ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি: ১৯৯০-এর দশকে, চিন ইরানকে সিল্কওয়ার্ম অ্যান্টি-শিপ মিসাইল সরবরাহ করেছিল বলে জানা গেছে, যা পরে ইরান নিজের দেশে তৈরি করেছিল।ড্রোন প্রযুক্তি: বিশেষজ্ঞরা শাহিদ সিরিজের মতো ইরানের সশস্ত্র ড্রোনের পিছনে চিনা নকশা এবং কম্পোনেন্টস ছিল?
advertisement
সাইবার প্রযুক্তি: চিন ইরানকে নজরদারি অর্থাৎ, সার্ভিলিয়েন্স এবং সাইবার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সাহায্য করে৷এছাড়াও রয়েছে, গোপন অস্ত্রের খেলা৷ চিনের অস্ত্র সরবরাহ কখনও সরাসরি হয় না৷ বরং 'দ্বৈত' ব্যবহারের প্রযুক্তির আকারে তা দেওয়া হয়ে থাকে৷ অর্থাৎ, বেসামরিক এবং সামরিক উভয় উদ্দেশ্যেই ব্যবহার করা যেতে পারে এমন পণ্য। কখনও কখনও এই প্রযুক্তি পাকিস্তান বা উত্তর কোরিয়ার মাধ্যমে ইরানে স্থানান্তরিত হয়, যাতে চিনের দিকে সরাসরি আঙুল না তোলা হয়।
advertisement
বর্তমান যুদ্ধে চিনের ভূমিকা: ইজরায়েল-ইরান সংঘাত প্রকাশ্যে আসার পর থেকে বিশ্লেষকরা এতে চিনের ভূমিকার বোঝার চেষ্টা করছেন। ইজরায়েলে আক্রমণ করার জন্য ইরান যে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ব্যবহার করেছে তার বিশ্লেষণে স্পষ্টতই চিনের সহায়তা পাওয়া গিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ইরানের ব্যবহৃত স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের কিছু অংশে চিনা প্রযুক্তি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া, ড্রোনে ব্যবহৃত নেভিগেশন সিস্টেম এবং যোগাযোগ মডিউলের উৎস অনুসন্ধান করার সময়, প্রায়শই চিনা সংস্থাগুলির সংযোগ পাওয়া গেছে।
advertisement