বলিউডের ৮ ছবি, খলনায়করা ছাপিয়ে গিয়েছেন নায়কদের, সবকটিই ব্লকবাস্টার, আপনি কতগুলো দেখেছেন?
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
5 Bollywood Superstars Who turned Villains : অনেক নায়ক খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের আনন্দ দিয়েছিলেন। তাঁদের এই ছবিগুলোও বক্স অফিসে উল্লেখযোগ্য আয় করেছে।
হিন্দি সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় যাঁরা দেখা দেন, সাধারণত সেই সব অভিনেতারাই সব সময়ে দর্শকদের ভালবাসায় ভরে ওঠেন। এই কারণেই উচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতারা নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করা থেকে বিরত থাকেন। তবে, এমন কিছু বলিউড ছবি আছে যেখানে নায়কেরা নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এই ছবিগুলোয় খলনায়কেরাই বরং নায়কের চেয়ে বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন। অনেক বিখ্যাত নায়কের কেরিয়ারও শুরু হয়েছে নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় দিয়ে। অভিনেতা বিনোদ খান্না এবং শত্রুঘ্ন সিনহা তাঁদের বলিউড কেরিয়ার শুরু করেছিলেন খলনায়ক হিসেবে। পরবর্তীতে দুজনেই নায়ক হিসেবে কেরিয়ার গড়তে শুরু করেন এবং বলিউডে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে শাহরুখ খানও অনেক ছবিতে নেতিবাচক ভূমিকায় দেখা দেন। বাজিগর, ডর এবং আনজাম-এর মতো ছবিতে শাহরুখের নেতিবাচক ভূমিকায় দুর্ধর্ষ অভিনয় কে ভুলতে পারেন?
advertisement
২০০০ সালের পর অনেক নায়ক খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের আনন্দ দিয়েছিলেন। তাঁদের এই ছবিগুলোও বক্স অফিসে উল্লেখযোগ্য আয় করেছে। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে, যখন শাহরুখ খান বলিউডে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছিলেন, তখন ১৯৯৩ সালে সুভাষ ঘাইয়ের ‘খলনায়ক’ ছবিটি মুক্তি পায়, যেখানে সঞ্জয় দত্ত বল্লু চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। দর্শকরা এই চরিত্রটি পছন্দ করেছিলেন এবং সঞ্জয় দত্তকে নিয়েই আলোচনা হত সবচেয়ে বেশি, যতই ছবিতে জ্যাকি শ্রফ থাকুন না কেন! ছবির গানগুলো খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। চোলি কে পিছে কেয়া হ্যায়, নায়ক নেহি খলনায়ক হুঁ ম্যায়, পালকি মে হোকে সওয়ার চলি রে পাড়ায় পাড়ায়, দেশের সর্বত্র শোনা যেত। নায়ক নেহি খলনায়ক হুঁ ম্যায় গানটি তো সঞ্জয় দত্তের ট্রেডমার্ক হয়ে ওঠে। ছবির এক কোটিরও বেশি অডিও ক্যাসেট বিক্রি হয়েছিল। চোলি কে পিছে কেয়া হ্যায় গানটি যথেষ্ট বিতর্কেরও সৃষ্টি করে। ১৯৯২ সালের মুম্বই বোমা হামলার জন্য সঞ্জয় দত্তকে ১৯৯৩ সালে জেলে পাঠানো হয়েছিল। দত্ত ছবিটি ডাবিং করার জন্য জেল থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। এই ছবিটি ব্লকবাস্টার হিট হয়েছিল।
advertisement
১৯৯৪ সালে একটি অ্যাকশন ছবি মুক্তি পায় যেখানে গুরুগম্ভীর অভিনয়ের জন্য পরিচিত একজন নায়ক খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিলেন। এই ছবিটি ছিল ‘মোহরা’। রাজীব রাই পরিচালিত এই ছবিতে নাসিরুদ্দিন শাহ মিস্টার জিন্দলের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। নাসিরুদ্দিনের অভিনয় এতটাই আশ্চর্যজনক ছিল যে তা দর্শকদের হতবাক করে দিয়েছিল। সুনীল শেঠি এবং অক্ষয় কুমারের অ্যাকশন দৃশ্যগুলিও দুর্দান্ত ছিল। রবিনা ট্যান্ডনের জাদুও ছিল সেই সময়ে তুঙ্গে। প্রায় ৩ কোটি টাকা বাজেটে নির্মিত ছবিটি ২৩ কোটি টাকা আয় করেছিল। এটি ব্লকবাস্টার হিট হয়েছিল। ছোট শহর হোক বা বড় শহর- সর্বত্রই মোহরা চিত্রনাট্য, গানে সবার মন জয় করেছিল।
advertisement
২০০৪ সালে রাজকুমার সন্তোষীর ‘খাকি’ ছবিতে অজয় দেবগণ খলনায়কের চরিত্রটিকে জীবন্ত করে তুলেছিলেন। খাকি এই সময়ে এসে বলিউডের একটি কাল্ট ফিল্ম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ছবিতে ঐশ্বর্য রাই বচ্চনও নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। অমিতাভ বচ্চন, অক্ষয় কুমার, তুষার কাপুর এবং অতুল কুলকার্নিও এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। ১৯৭৩ সালের জঞ্জির ছবির পর এটি ছিল দ্বিতীয়বারের মতো অমিতাভ বচ্চনের অ্যাংরি ম্যান অভিনয়। অজয় দেবগণের শাশুড়ি তনুজাও এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন, যদিও তাঁদের একসঙ্গে কোনও দৃশ্য ছিল না। সেবার অজয় দেবগণ এই খলনায়ক চরিত্রের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরষ্কারও পেয়েছিলেন।
advertisement
২০০৪ সালে যশ রাজ ফিল্ম সের ব্যানারে একটি ছবি মুক্তি পায় যার ফ্র্যাঞ্চাইজিতে আজও বড় বড় তারকারা নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করতে আগ্রহী। এই ছবির তিনটি সিক্যুয়েল মুক্তি পেয়েছে। মজার বিষয় হল, তিনটি সিক্যুয়েলেই খলনায়ক সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল। ২০০৪ সালের ২৭ অগাস্ট মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবির নাম ‘ধুম’। আদিত্য চোপড়া প্রযোজিত এবং সঞ্জয় গাধবি পরিচালিত ছবিতে জন আব্রাহাম একজন সুপারথিফের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ধুমের হাইলাইট ছিল এর বাইক। ছবিতে অভিষেক বচ্চন, উদয় চোপড়া, জন আব্রাহাম, এষা দেওল এবং রিমি সেন ছিলেন। ছবিটির বাজেট ছিল প্রায় ১১ কোটি টাকা এবং এটি ৭৭ কোটি টাকারও বেশি আয় করে। এটি সুপারহিট হয়।
advertisement
advertisement
২০০৬ সালে হৃতিক রোশনের কৃষ ছবিটি বক্স অফিসে আলোড়ন তুলেছিল। এটি ছিল ২০০৩ সালের কোই মিল গয়া ছবির সিক্যুয়েল। ছবিটিতে অভিনয় করেছিলেন রেখা, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, পুনিত ইসার, কিরণ জুনেজা, অর্চনা পুরন সিং, শরৎ সাক্সেনা এবং নাসিরুদ্দিন শাহ। নাসিরুদ্দিনের খলনায়ক চরিত্রটি ছবিতে এক রোমাঞ্চকর মাত্রা যোগ করেছিল। খলনায়ক হিসেবেও ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছিলেন অভিনেতা। ডক্টর আর্যের চরিত্রে প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ।
advertisement
২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অগ্নিপথ’ ছবিতে সঞ্জয় দত্ত কাঞ্চা চিনার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, যা ১৯৯০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত অমিতাভ বচ্চন অভিনীত অগ্নিপথের রিমেক। ধর্মা প্রোডাকশনস ২০১২ সালে ছবিটি পুনর্নির্মাণ করে। সঞ্জয় দত্ত বলিউডের অন্যতম ভয়ঙ্কর খলনায়ক, এক মাদক চোরাচালান চক্রের হোতার ভূমিকায় শক্তিশালী ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। সঞ্জয় দত্ত এই অভিনয়ের জন্য ব্যাপক প্রশংসাও পেয়েছিলেন। ছবিটি বক্স অফিসে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করে।
advertisement
২০১৮ সালের ‘পদ্মাবত’ ছবিতে রণবীর সিং আলাউদ্দিন খিলজির চরিত্রে অভিনয় করে তাঁর সিগনেচার স্টাইল ছবির পর্দায় অমর করে দিয়েছেন। এই পিরিয়ড ড্রামাটি পরিচালনা করেছিলেন সঞ্জয় লীলা বনশালি। ছবিটির গল্প আবর্তিত হয়েছে রানি পদ্মাবতীকে ঘিরে, যিনি তাঁর অত্যাশ্চর্য সৌন্দর্য এবং দৃঢ় ন্যায়বিচারের বোধের জন্য বিখ্যাত। তিনি ছিলেন চিতোরের রাজা মহারাওয়াল রতন সিংয়ের স্ত্রী।