Khachaa: এবার সিনেমার পর্দায় ‘সিনেবাপ’ মৃন্ময়, সঙ্গে রজতাভ-মীরও, সামনে এল ‘খাঁচা’-র প্রথম ঝলক; থাকতে চলেছে একের পর এক চমক
- Published by:Siddhartha Sarkar
- trending desk
Last Updated:
আসছে স্বভূমি এন্টারটেইনমেন্ট ও ড: প্রবীর ভৌমিক প্রযোজিত এবং সিনেবাপ এন্টারটেইনমেন্ট সহ-প্রযোজিত অনির্বাণ চক্রবর্তী পরিচালিত ছবি ‘খাঁচা’। প্রকাশ্যে এল ছবির প্রথম ঝলক।
জাতীয় স্তরে পুরস্কারপ্রাপ্ত রফিয়াত রশিদ মিথিলা অভিনীত ‘ও অভাগী’ দর্শকদের ব্যাপক ভালবাসা কুড়িয়ে নিয়েছিল। এই ছবির সাফল্যের পর এবার নতুন একটি ছবির পরিচালনায় অনির্বাণ চক্রবর্তী। আসছে স্বভূমি এন্টারটেইনমেন্ট ও ড: প্রবীর ভৌমিক প্রযোজিত এবং সিনেবাপ এন্টারটেইনমেন্ট সহ-প্রযোজিত অনির্বাণ চক্রবর্তী পরিচালিত ছবি ‘খাঁচা’। প্রকাশ্যে এল ছবির প্রথম ঝলক।
advertisement
আর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ‘খাঁচা’ কোনও সাধারণ ছবি নয়। এই ছবির মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে মানব পাচার সংক্রান্ত বিষয়ক একটি সামাজিক বার্তা। বাস্তবে মানব পাচারের কবল থেকে যাঁরা মুক্তি পেয়েছেন, তাঁরা কীভাবে ‘খাঁচা’-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কিছু দৃষ্টান্তমূলক কার্যক্রম তৈরী করছেন, তা জানতে হলে দেখতেই হবে ছবিটি। এখানেই শেষ নয়, রয়েছে আরও চমক। এই ছবির হাত ধরে এবার সিনে-পর্দায় দেখা যাবে জনপ্রিয় ইউটিউবার ‘সিনেবাপ’ মৃন্ময়কে। সেই সঙ্গে এই ছবিতে অভিনয় করেছেন রজতাভ দত্ত, কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মীর। ফলে প্রায় এক দশক বাদে ‘খাঁচা’-য় যেন রিইউনিয়ন হবে মীরাক্কেল টিমের।
advertisement
চমক এখনও বাকি। কারণ সিধু এবং দুর্নিবার সাহার কণ্ঠে শোনা যাবে ছবির গান। ‘খাঁচা’-র কাহিনি, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন অনির্বাণ চক্রবর্তী। এই ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করছেন ‘সিনেবাপ’ মৃন্ময় দাস, রজতাভ দত্ত, মীর, প্রত্যুষা পাল, অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়, কাঞ্চনা মৈত্র, সোনালী চৌধুরী, কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ইমন চক্রবর্তী, অরুণাভ দত্ত, নবাগতা পূজা চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। ছবির চিত্রগ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন মলয় মণ্ডল। আর সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় এবং অমিত।
advertisement
ছবির গল্প আবর্তিত হয়েছে নুন আনতে পান্তা ফুরনো, হতদরিদ্র গ্রাম টিয়াবনকে কেন্দ্র করে। গ্রামটি দেখতে আপাত দৃষ্টিতে শান্ত। কিন্তু সেখানে অথবা তার আশপাশের কয়েকটি গ্রামে কান পাতলে শোনা যায় যে, জায়গাটি দেখতে শান্ত হলেও মোটেও শান্তি নেই সেখানে। এক বিরাট ষড়যন্ত্র চলছে গোটা এলাকা জুড়ে। গত তিরিশ বছর ধরে লেবার ট্রান্সপোর্টের ব্যবসার নামে এক বিরাট নারী পাচার চক্র চালায় বিশ্বম্ভর বিশ্বাস ওরফে মামা (রজতাভ দত্ত) এবং তার প্রথম স্ত্রী মীনাক্ষী দেবী ওরফে মামি (কাঞ্চনা মৈত্র)। কত ছোট্ট ছোট্ট নিষ্পাপ মেয়ের জীবন যে ওরা নষ্ট করে চলেছে, তার ইয়ত্তা নেই।
advertisement
টিয়াবন গ্রামেরই ছেলে কমলেশ (সিনেবাপ মৃন্ময়)। ছোটবেলায় দিদিকে তার সামনে থেকেই তুলে নিয়ে গিয়েছিল মামি এবং তার দলবল। কিন্তু সে তখন কিছুই করতে পারেনি। তার মা পুলিশে অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ কোনও অভিযোগই নেয় না। উল্টে কারা যেন কমলেশের মাকে পৃথিবী থেকেই সরিয়ে দেয়। দিদিকে সে আজও খুঁজে পায়নি। ফলে কমলেশের লড়াই এখন মামা-মামি এবং সেই সব অসাধু মানুষগুলির বিরুদ্ধে, যারা এই সমাজকে কলুষিত করেছে, যারা দরিদ্রদের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে নিজেদের মেয়ে-বউদের পাচার করে দিচ্ছে। গতিময় কাহিনির পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে রোমহর্ষক সব ঘটনা, টানটান চিত্রনাট্যে আলো আঁধারের হিসেব-নিকেশ। অবশেষে কীভাবে সত্যের জয় হচ্ছে, তা জানতে গেলে দেখতেই হবে ‘খাঁচা’।
advertisement
এই প্রসঙ্গে পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী বলেন যে, “আমার শেষ ফিচার ফিল্ম ছিল ‘ও অভাগী’। যা সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করেছিল এবং জাতীয় পর্যায়ে বেশ কিছু পুরস্কারও জিতেছিল। তবে আমি কখনও কোনও নির্দিষ্ট সীমায় আবদ্ধ থাকতে চাইনি। সিনেমা মানেই বিনোদন, তাই আমি সব সময় নতুন দর্শকদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করি। আমার প্রযোজককে ধন্যবাদ, যিনি আগের মতোই আমার উপর বিশ্বাস রেখেছেন। আমার প্রতিভাবান এবং উৎসাহী ইউনিটের সঙ্গে কাজ করতে সব সময় দারুণ আনন্দ পেয়েছি। তপ্ত গ্রীষ্মে আমরা বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় শ্যুটিং করেছি। আবার কনকনে ঠান্ডায় দার্জিলিংয়ে শ্যুটিং করেছি। কিন্তু কেউ কোনও অভিযোগ করেননি, কারণ পুরো ইউনিটটাই ছিল একটা বড় পরিবারের মতো। আর যখন রজতাভ দত্ত, মীর আফসার আলি, কাঞ্চনা, অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়, সোনালি, মৃন্ময়, প্রত্যুষা, কৃষ্ণার মতো শিল্পীরা সেটে থাকেন, তখন প্রতিটি মুহূর্তই স্মরণীয় হয়ে ওঠে।”
advertisement
শ্যুটিংয়ের এক রোমহর্ষক অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে পরিচালক আরও বলেন যে, “একটি বিশেষ রাতের কথা আমার স্পষ্ট মনে আছে। আমরা কালিম্পংয়ের একটি প্রত্যন্ত এলাকায় শ্যুটিং করছিলাম। হঠাৎ স্থানীয় ম্যানেজার আমার কাছে এসে একটি ভিডিও দেখালেন। তাতে দেখলাম, যেখানে আমি বসেছিলাম, কয়েক ঘণ্টা আগে ঠিক সেই জায়গাতেই একটি চিতা দেখা গিয়েছিল। এবং কাকতালীয় ভাবে ঠিক সেই সময় কোনও এক প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে সমস্ত আলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সম্পূর্ণ অন্ধকারে পাহাড়ি জঙ্গলের মধ্যে একমাত্র দৃশ্যমান ছিল মোবাইল স্ক্রিনে থাকা সেই চিতার চাহনি।আর তখন আমি বুঝতে পারলাম যে, আমি তার এলাকায় অনাহূত অতিথি, সে নয়।”
advertisement
বলে রাখা ভাল যে, একজন পরিচালক হিসেবে বিগত ১০ বছর ধরে কাজ করছেন অনির্বাণ চক্রবর্তী। গোড়ার দিকে তিনি বেশ কিছু প্রখ্যাত পরিচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন এবং সৃজনশীলতার ছাপ রেখে যাওয়ার আন্তরিক উদ্দেশ্যে তরুণ বয়সেই স্বাধীন ভাবে পরিচালনার কাজে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি বহু টেলিভিশন প্রোডাকশন (কল্পকাহিনি ও অ-কল্পকাহিনি), স্বল্পদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র, তথ্যচিত্র, বিজ্ঞাপন, কর্পোরেট ফিল্ম এবং ওয়েব সিরিজ নির্মাণ করেছেন। ‘মল্লিকবাড়ি’ ছিল তাঁর পরিচালিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যর চলচ্চিত্র। এর পর তিনি ‘পিকলুর জানালা’, ‘জাহ কালা’, ‘বনসুন্দরী’, ‘নন্টে ফন্টে’, এবং ‘ভাওয়েল’-এর মতো চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন।
advertisement
advertisement
আবার অভিনেতা ও সহ-প্রযোজক মৃন্ময় বলেন যে, “হিরো হওয়ার ইচ্ছা আমার বহু বছরের। এক দশকের উপর অভিজ্ঞতা... সেই ২০১২ সাল থেকে মিডিয়াতে কাজ শুরু করেছি, প্রথমে রিয়েলিটি শো, তারপর ইউটিউব। কিন্তু তারও আগে থেকে আমার স্বপ্ন হিরো হওয়ার। কিন্তু মেনস্ট্রিম কমার্শিয়াল সিনেমায় হিরো হওয়া মুখের কথা নয়। তার জন্য জরুরি সঠিক প্রস্তুতি, সঠিক মানুষদের সান্নিধ্যে আসা এবং সঠিক সময়। ইউটিউবটা আমার প্যাশন এবং পেশা, কিন্তু হিরো হওয়াটা আমার স্বপ্ন। এটা ২০২৫-এ পূরণ হতে চলেছে। পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী ও স্বভূমি প্রোডাকশন হাউজের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল অসাধারণ! অনেক কিছু শিখেছি তাঁর থেকে। অন-ক্যামেরায় উনি আমার ক্যাপ্টেন, কিন্তু অফ-ক্যামেরায় আমরা খুব ভাল বন্ধু। প্রযোজক ড. প্রবীর ভৌমিকবাবুকে আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ। হিরো হিসেবে নতুন ছেলেকে লঞ্চ করার ঝুঁকি সবাই নিতে চান না। সেখানে আমার মতো টলিউডের বহিরাগত, ইন্ডাস্ট্রিতে যাঁর কোনও ব্যাকগ্রাউন্ড নেই, সেই রকম একজনের উপর ভরসা উনি করেছেন। আর আমি এই ভরসার যোগ্য প্রতিদান দেবই, এই আত্মবিশ্বাস রয়েছে। আর একজনের কথা না বললেই নয়। এই প্রোডাকশনের একজিকিউটিভ প্রযোজক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। উনি ছাড়া ‘খাঁচা’ শুরুই হত না।”
advertisement
সিনেবাপ মৃন্ময় আরও বলেন যে, “কমলেশ চরিত্রের জন্য একটা মাস্কুলার ফিগারে ট্রান্সফর্মেশন প্রয়োজন ছিল। এর জন্য শ্যুটিংয়ের আগের ৬ মাস মেনস্ট্রিম স্পোর্টসম্যানদের মতো একটা কঠোর রুটিন আর কঠোর ডায়েটি মেনে চলতে হয়েছে। তবে এই ক্ষেত্রে আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল। কারণ আমি কলেজ জীবনে ডিস্ট্রিক্ট বডি বিল্ডিং চ্যাম্পিয়নশিপে মি. কোচবিহার হয়েছিলাম। আর মি. নর্থ বেঙ্গল প্রতিযোগিতাতেও জয়ী হয়েছিলাম। সেই অভিজ্ঞতাই খুব কাজে লেগেছে এই ট্রান্সফর্মেশন ট্রেনিংয়ে। আর হ্যাঁ, সেই টাফ রুটিনে আমাদের পরিচালক বিরিয়ানি দিয়ে লাঞ্চ করতে করতে ফোন করে খোঁজ নিতেন, আমি সেদ্ধ চিকেন খেয়েছি কি না! তবে এখন বাণিজ্যিক ছবিতে সেই অধ্যায় কিছুটা হারিয়ে গিয়েছে, যেখানে হিরোর লুক আর বিদেশে ২-৩টা ঝকঝকে গান হলেই সিনেমা হিট। এখন এগুলির পাশাপাশি অভিনয়ের প্রতিভাও খুব দরকার একটা ছাপ ফেলার জন্য। সেই ওয়ার্কশপও হয়েছে। পরিচালক আমাকে অনেক গাইড করেছেন।”
advertisement
advertisement
প্রযোজক ড: প্রবীর ভৌমিকের কথায়, “গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষ এখনও বাণিজ্যিক ফিচার ফিল্ম দেখতে খুবই ভালবাসেন। আর আমি মানুষের জন্য দারুণ সিনেমা বানাতে প্রস্তুত। যা শুধুমাত্র বাংলা সিনেমার উপরেই প্রভাব ফেলবে না, বিশ্ব চলচ্চিত্রেও এটি দাগ কাটবে। কারণ আজকের নতুন মুখেরাই আগামী দিনের বড় তারকা। এটা সবার ক্ষেত্রেই ঘটছে। তাঁরা নতুন সুযোগের সন্ধান করছেন। আমি তাঁদের মধ্যে থাকা সম্ভাবনাকে পছন্দ করি এবং শ্রদ্ধাও করি। আগামী দিনে প্রতিষ্ঠিত শিল্পী ও নতুন প্রজন্মের সঙ্গেও কাজ করতে হবে। আমার মনে হয়, তাতে নতুন কর্মসংস্থানই নয়, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিও আরও সমৃদ্ধ হবে।”
advertisement