ধর্মেন্দ্রর সম্পত্তিতে কি হেমা মালিনীরও আইনি অধিকার থাকবে? জেনে নিন কীভাবে তা ভাগ হতে পারে
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
সবে প্রয়াত অভিনেতা, এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার বা এমনকি উত্তর দেওয়ার জন্য এটি সঠিক সময় নাও হতে পারে, কিন্তু বাস্তবতা হল জনসাধারণের মধ্যে এই নিয়ে অবশ্যই কৌতূহল রয়েছে।
কিংবদন্তি বলিউড অভিনেতা ধর্মেন্দ্র ২৪ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে ৮৯ বছর বয়সে মুম্বইয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন। এখন তাঁর সম্পত্তি কীভাবে বন্টন করা হবে তা নিয়ে খুব স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠে আসছে। দুই পরিবারই কি তাঁর উত্তরাধিকারী হবেন? তিনি কি কোনও উইল লিখেছিলেন? এই রকমের প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনেই। সবে প্রয়াত অভিনেতা, এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার বা এমনকি উত্তর দেওয়ার জন্য এটি সঠিক সময় নাও হতে পারে, কিন্তু বাস্তবতা হল জনসাধারণের মধ্যে এই নিয়ে অবশ্যই কৌতূহল রয়েছে।
advertisement
সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ৩৩৫ কোটি থেকে ৪৫০ কোটি টাকার মধ্যে। এর মধ্যে রয়েছে মুম্বইয়ের বাইরে ১০০ একরের একটি খামারবাড়ি, রিয়েল এস্টেট, কৃষি ও অকৃষি জমি। তিনি বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল গাড়ির মালিক এবং চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁ পর্যন্ত নানা ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন।
advertisement
প্রথম স্ত্রীর আইনগত মর্যাদা কার? ধর্মেন্দ্র যখন চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন তখন তিনি বিবাহিত ছিলেন। তাঁর স্ত্রী হলেন প্রকাশ কৌর, এঁকেই তাঁর প্রথম এবং বৈধ স্ত্রী হিসেবে গণ্য করতে হবে। ধর্মেন্দ্র ১৯৭৯-৮০ সালে মুসলিম ধর্ম অনুসারে হেমা মালিনীকে বিয়ে করেন। বলা হয় যে, সেই বিয়ের জন্য দুজনেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু পরে আবার হিন্দু ধর্মে ফিরেও এসেছিলেন। এই দ্বিতীয় বিবাহের আইনি মর্যাদা নিয়ে অবশ্যই নানা প্রশ্ন রয়েছে।
advertisement
তাহলে, মথুরার প্রাক্তন সাংসদ এবং বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেত্রী হেমা মালিনী কি আইনত ধর্মেন্দ্রের সম্পত্তিতে কোনও অংশ পাওয়ার যোগ্য? অবশ্যই- আইন বিশেষজ্ঞরা একমত যে তাঁর প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌর, তাঁর প্রথম বিবাহের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে এবং তাঁর দ্বিতীয় বিবাহের দুই মেয়েও ধর্মেন্দ্রের সম্পত্তিতে অংশ পাওয়ার অধিকারী।
advertisement
সম্পত্তির অধিকার কীভাবে নির্ধারিত হয়: সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শৌর্য তিওয়ারি বলেন যে, কারও সম্পত্তির উপর অধিকার অনেকভাবেই নির্ধারিত হয়। এর মধ্যে ক্লেম, উইল, লিগাল ইন্টারপ্রিটেশন এবং উত্তরাধিকারের মতো বিষয়গুলি জড়িত। একটি ক্লেমে সাধারণত একটি দাবি দায়ের করা হয়, যেখানে যুক্তি দেওয়া হয় যে কেন তারা সম্পত্তিতে অংশ পাওয়ার যোগ্য। সম্পত্তির মালিক যদি উইল করেন, তাহলে অবশ্যই তাদের নাম এতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অন্যথায়, এটি চ্যালেঞ্জ করা যেতে পারে। ঠিক যেমনটা দিল্লির ব্যবসায়ী এবং শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুরের মৃত্যুতে হয়েছে, তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী, প্রথম স্ত্রী করিশমা কাপুরের দুই সন্তান আদালতে উইলটিকে চ্যালেঞ্জ করেছে।
advertisement
লিগাল ইন্টারপ্রিটেশন এবং উত্তরাধিকারের যোগ্যতার দিক: তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন যে প্রায়শই লিগাল ইন্টারপ্রিটেশন বা আইনি ব্যাখ্যা আদালতের গ্রহণযোগ্য হয়, যেমন সাম্প্রতিক কিছু ক্ষেত্রে, লিভ-ইন পার্টনারদেরও আদালত কর্তৃক এই ধরনের অধিকার মঞ্জুর করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মোদ্দা কথা হল সন্তানরা উত্তরাধিকারের জন্য যোগ্য কি না। যদি সন্তানের বার্থ সার্টিফিকেট এবং অন্যান্য আইনি নথিতে পিতার নাম থাকে, তাহলে সন্তানদের উত্তরাধিকারের অধিকার রয়েছে।
advertisement
কিন্তু ধর্মেন্দ্র নির্বাচনী মনোনয়নে কার নাম দিয়েছিলেন?: এবার ধর্মেন্দ্র এবং হেমা মালিনীর বিবাহ সম্পর্কিত নথি এবং আইনি দাবিগুলি পরীক্ষা করা যাক। আইনি নথি এবং রেকর্ডের দিক থেকে দেখলে জনসাধারণের কাছে কোনও নির্ভরযোগ্য আইনি নথিতে এমন কোনও স্পষ্ট প্রমাণ নেই যে ধর্মেন্দ্র হেমা মালিনীর সঙ্গে বৈধ স্ত্রী হিসাবে তাঁর বিবাহ আইনি তরফে রেজিস্টার করেছিলেন। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিকানের থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময়ে তিনি স্ত্রীর নামের কলামটি ফাঁকা রেখেছিলেন।
advertisement
আইনি বৈধতা: হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুসারে, কংগ্রেস নেতারা ইনদওরের একটি আদালতে একটি নিকাহনামা পেশ করে দাবি করেছেন যে ধর্মেন্দ্র এবং হেমা বিবাহিত ছিলেন। যদিও এই নিকাহনামা একটি ধর্মীয় দলিল হতে পারে, তবে হিন্দু বিবাহ আইনের অধীনে এটি আইনত বৈধ নয়, বিশেষ করে যদি প্রথম স্ত্রী জীবিত থাকেন এবং বিবাহবিচ্ছেদ না হয়ে থাকে। হেমা মালিনী নিজেও বলেছেন যে তিনি ধর্মেন্দ্রর প্রথম পরিবারকে মেনে নিয়েই বিয়ে করেছিলেন। তাঁরা দুজন সবসময় একসঙ্গে থাকতেনও না; তাঁরা আলাদা ঘর বজায় রেখেছিলেন।
advertisement
হিন্দু বিবাহ আইন কী বলে? আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে ১৯৫৫ সালের হিন্দু বিবাহ আইন বহুবিবাহকে স্বীকৃতি দেয় না। এই আইনের ১১ ধারায় বলা হয়েছে যে, যদি কোনও ব্যক্তি ইতিমধ্যেই বিবাহিত হন, তাহলে দ্বিতীয় বিবাহ শুরু থেকেই অবৈধ বলে বিবেচিত হবে। নতুন ভারতীয় দণ্ডবিধিতে ৮২ ধারা রয়েছে, যা দ্বিতীয় বিবাহকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে। তবে, আইনত একজন দ্বিতীয় স্ত্রী-র সম্পত্তিতে কিছু সীমিত অধিকার থাকতে পারে।
