Dilip Kumar: স্যান্ডুইচের স্টল থেকে জীবন্ত কিংবদন্তী, সায়রা বানুর সঙ্গে সম্পর্কে থেকেও ফের বিয়ে করেছিলেন দিলীপ কুমার
- Published by:Simli Raha
- news18 bangla
Last Updated:
দিলীপ কুমার (Dilip Kumar) বেশিরভাগ ট্র্যাজেডি ছবিতেই নায়ক ছিলেন । তাঁর নামই হয়ে গিয়েছিল ‘ট্র্যাজিক কিং’ । এক সময় নিজেও অবসাদে ভুগতে শুরু করেন অভিনেতা।
• বহুদিন ধরেই ভুগছিলেন তিনি । শেষ পর্যন্ত আর ধরে রাখা গেল না ভারতীয় সিনেমার কিংবদন্তী দিলীপ কুমারকে (Dilip Kumar) । ৯৮ বছরে প্রয়াত হলেন তিনি । বহুদিন ধরেই বয়স সংক্রান্ত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি । দেশে করোনার বাড়বাড়ন্ত শুরু হওয়ার পর থেকে হোম আইসোলেশনে ছিলেন । এর মধ্যে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাঁকে । বহু বার তাঁর মৃত্যুর গুজবও রটেছিল । কিন্তু সমস্ত গুঞ্জনকে মিথ্যে প্রমাণ করে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি । এ বার আর তা হল না । মুম্বইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে গত ৩০ জুন থেকে ভর্তি ছিলেন তিনি । গতকালও তাঁর স্ত্রী সায়রা বানু জানান, দিলীপ সাহাবের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে । কিন্তু শেষরক্ষা হল না ।
advertisement
• চল্লিশের দশকে ভারতীয় সিনেমায় পা রেখেছিলেন দিলীপ কুমার । কী তাঁর অভিনয়, কী ক্যারিশ্মা.... একের পর এক নারী হৃদয় জয় করলেন । সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পেতেন সে সময় । অচিরেই হয়ে উঠলেন বলিউডের স্বপ্নের নায়ক । তাঁর ঝুলিতে সবচেয়ে বেশি অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার রেকর্ডও রয়েছে । তবে শুরুটা মসৃণ ছিল না মোটেই । ১৯২২ সালের ১১ ডিসেম্বর বর্তমান পাকিস্তানের পেসওয়ারে জন্মেছিলেন মহম্মদ ইউসুফ খান । বাবা লালা গুলাম আলি ছিলেন ফল ব্যবসায়ী । বাগান ও বেশ কিছু জমিও ছিল তাঁদের । মা আয়েশা বেগম ছিলেন গৃহবধূ ।
advertisement
• নাসিকের দেওলালির বার্নেস স্কুল থেকে পড়াশোনা করেন তিনি । রাজ কাপুর ছিলেন তাঁর ছোটবেলার বন্ধু । একসঙ্গে বেড়ে ওঠা তাঁদের । ১৯৪০ সালে বাবার সঙ্গে ঝামেলা করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান ইউসুফ । পুনেতে এসে এক পার্সি ক্যাফের মালিকের মাধ্যমে ক্যান্টিন কন্ট্রাক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাঁর । ইংরাজি ভাষায় তাঁর অসাধারণ দক্ষতা ছিল । লেখা ও কথা সবটাই ইংরাজিতে করতেন তিনি । এতেই মুগ্ধ হন ক্যান্টিন কন্ট্রাক্টর । আর্মি ক্যান্টিনে স্টান্ডুইচ স্টল বসানোর সুযোগ করে দেন । এই ভাবে ৫ হাজার টাকা জমান ইউসুফ ওরফে দিলীপ কুমার । সে সময় এই টাকার অনেক মূল্য । বাড়ি ফিরে যান ওই টাকা নিয়ে ।
advertisement
• এরপর ১৯৪২-এ তাঁর বাবার সহকারী ডঃ মাসানি দিলীপকে নিয়ে যান বম্বে টকিজে । সেখানে দেবিকা রানির সঙ্গে পরিচয় করান তাঁর । সে সময় বম্বে টকিজের মালকিন ছিলেন তিনি । ১২৫০ টাকায় কাজ শুরু করেন দিলীপ । উর্দু ভাষায় তাঁর দক্ষতার জন্য চিত্রনাট্য লেখার বিভাগে কাজ দেওয়া হয় তাঁকে । দেবিকার পরামর্শেই রাতারাতি ইউসুফ থেকে দিলীপ কুমার হয়ে যান তিনি । দেবিকা এরপর তাঁকে ১৯৪৪ সালে লিড রোলে চান্স দেন । ছবির নাম ছিল ‘জোয়ার ভাঁটা’ ।
advertisement
advertisement
• পঞ্চাশের দশকে ছিল তাঁরই রাজত্ব । ১৯৪৯-এ ‘আন্দাজ’, এই ছবিতে ছিলেন রাজ কাপুর আর নার্গিস । ৫০-এ তিনি করলেন ‘জোগান’, ‘হালচাল’, ‘বাবুল’, ‘দিদার’, ‘নয়া দৌড়’, ‘দেবদাস’, ‘দাগ’, ‘মধুমতী’ । সবগুলোই হিট । এরপর ১৯৬০-এ এল তাঁর সবচেয়ে সফল সিনেমা ‘মুঘল-ই-আজম’ । ১১ বছর ধরে এই ছবিই ছিল ভারতীয় সিনেমায় সর্বোচ্চ লাভদায়ী ছবি । এরপর ষাটের দশকে ‘গঙ্গা যমুনা’, ‘লিডার’, ‘দিল দিয়া, দর্দ লিয়া’, ‘রাম অউর শ্যাম’, ‘আদমি’ ছবি করেন তিনি ।
advertisement
• বেশিরভাগ ট্র্যাজেডি ছবিতেই নায়ক ছিলেন দিলীপ । তাঁর নামই হয়ে গিয়েছিল ‘ট্র্যাজিক কিং’ । এক সময় নিজেও অবসাদে ভুগতে শুরু করেন । এরপর মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শে একটু হালকা চালের চরিত্র শুরু করেন দিলীপ । যেমন, ‘আন’, ‘আজাদ’, ‘কহিনূর’ । তাঁর কাছে ব্রিটিশ পরিচালক ডেভিড লিনের অফারও এসেছিল ।‘লরেন্স অব অ্যারাবিয়া’ ছবিতে শেরিফ আলির রোলের জন্য তাঁকে বেছেছিলেন ডেভিড । কিন্তু সেই অফার ফিরিয়ে দেন দিলীপ সাহাব । তখন অফার যায় ইজিপ্সিয়ান অভিনেতা ওমর শরিফের কাছে । একবার এলিজাবেথ টেলরের বিপরীতেও কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন কুমার । কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর তা হয়নি ।
advertisement
advertisement
advertisement
advertisement
• তাঁর জীবনের প্রথম প্রেম মধুবালা । সাত বছর একসঙ্গে ছিলেন তাঁরা । তাঁদের বিচ্ছেদের পর ১৯৬৬ সালে নিজের থেকে ২২ বছরের ছোট সায়রা বানুকে বিয়ে করেন দিলীপ সাহাব । তাঁদের কোনও ছেলেমেয়ে নেই । সায়রা বানুর সঙ্গে সম্পর্ক থাকাকালীনই ১৯৮১ সালে হায়দরাবাদের বিশিষ্ট সমাজকর্মী আসমা সাহিবাকে বিয়ে করেছিলেন অভিনেতা । যদিও সেই সম্পর্ক টিকেছিল মাত্র ২ বছর ।