

দৈনন্দিন জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্রেডিট কার্ড। এই কার্ড আসার পর থেকে অনেক ক্ষেত্রেই কেনাকাটায় সুবিধা হয়েছে। হাতে টাকা না থাকলেও নানা দামি জিনিস কেনা সম্ভব হয়েছে। সঙ্গে একাধিক সুবিধাও রয়েছে। তবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের পাশাপাশি ক্রেডিট স্টেটমেন্ট সম্পর্কে বিশদে জেনে নিতে হবে। না হলে মোটা অঙ্কের লেট ফি বা সুদের মাশুল দিতে হবে।


ক্রেডিট কার্ড স্টেটমেন্ট আদতে কী? প্রতিটি বিলিং পিরিয়ডের শেষে গ্রাহকদের এই স্টেটমেন্ট পাঠায় সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলি। এখানে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্রেডিট কার্ডের যাবতীয় লেনদেনের খসড়া থাকে। আর ঠিক এখানেই এই স্টেটেমেন্টের খুঁটিনাটি দিকগুলি সম্পর্কে জানতে হবে। বিলিং এরর, ডিউ ডেট, লেট ফি-সহ একাধিক বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।


প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক লেট পেমেন্ট ফি। এক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ড বিলে উল্লিখিত স্টেটমেন্টের তারিখই লেট পেমেন্ট ফি হিসেব করার ক্ষেত্রে সাহায্য করে। সেই সূত্র ধরেই ক্রেডিট কার্ড বিলে ডিউ ডেটের প্রসঙ্গ উঠে আসে। সাধারণত ডিউ ডেট হল সেই তারিখ, যে সময়ের মধ্যে কোনও রকম অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া পেমেন্ট পাওয়ার আশা করে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলি। তবে ডিউ ডেট যাতে না পেরিয়ে যায়, সেই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। চেকের মাধ্যমে পেমেন্ট করলে, সপ্তাহখানেক আগে থেকেই পেমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে হবে। লক্ষ্য একটাই- যাতে দেরি না হয়ে যায়।


এবার জেনে নিতে হবে গ্রেস পিরিয়ড সম্পর্কে। ক্রেডিট কার্ডের ডিউ ক্লিয়ার করার জন্য একটি অতিরিক্ত সময় বা গ্রেস পিরিয়ড থাকে। সাধারণত তিন দিনের গ্রেস পিরিয়ড দেওয়া হয়। বিলিং সাইকেলের শেষ থেকে পরবর্তী বিলিংয়ের তারিখের মাঝেই এই গ্রেস পিরিয়ড দেওয়া হয়। RBI-এর নিয়ম অনুযায়ী, যদি সময় মতো পেমেন্ট না হয় অর্থাৎ তিন দিনের গ্রেস পিরিয়ডেও পেমেন্ট না হয়, তাহলে বড়সড় সুদের মাশুল গুনতে হবে। লেট পেমেন্ট চার্জও লাগু হয়। আর বারবার পেমেন্ট মিস হলে প্রভাব পড়বে ক্রেডিট রেটিংয়ের উপরে। যা ক্রেডিট স্কোরের পয়েন্ট কমিয়ে দেবে। এক্ষেত্রে বড় কোনও লোন বা অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা হবে।


বিলিং সাইকেলও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ কোন বিলিং সাইকেলের জন্য স্টেটমেন্ট জেনারেট হচ্ছে, তা জেনে নিতে হবে। সাধারণত পর পর দু'টি স্টেটমেন্ট পিরিয়ডের মাঝের সময়টি হল বিলিং সাইকেল। যার মেয়াদ ৩০ দিন। এই সময়কালের মধ্যে হওয়া যাবতীয় লেনদেন কিন্তু স্টেটমেন্টের আওতায় পড়ে।


বিলিং সাইকেল অ্যামাউন্ট নিয়েও পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে বিলিং সাইকেলে যে পরিমাণ অর্থ বা অ্যামাউন্ট দিতে হয়, সেটাই হল টোটাল অ্যামাউন্ট ডিউ। যদি কোনও লেট পেমেন্ট হয়, তাহলে সেই লেট পেমেন্ট চার্জের টাকাও যুক্ত হয় এখানে। এগুলির পাশাপাশি ক্রেডিট কার্ড বিলের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল মিনিমাম অ্যামাউন্ট ডিউ। লেট ফি-র ঝুঁকি থেকে বাঁচতে এই মিনিমাম অ্যামাউন্ট দিতে হয়। আউটস্ট্যান্ডিং অ্যামাউন্টের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ হিসেবে ধার্য করা হয় এই টাকা। যদি, কোনও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারী শুধুমাত্র মিনিমাম ডিউয়ের টাকা দেন, তাহলে পুরো টাকা জমা না হওয়া পর্যন্ত শুধুমাত্র আউটস্ট্যান্ডিং অ্যামাউন্টের উপরেই জমা হয় সুদের টাকা।