মাত্র ২৫,০০০ টাকা দিয়ে শুরু করেছিলেন ব্যবসা, বর্তমানে ৩০০০০০০০০০ টাকার সাম্রাজ্যের মালিক উত্তর প্রদেশের দুই ভাই ! শুনে নিন সাফল্যের সেই উপাখ্যান
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
তবে বাবার লড়াইয়ের দিনগুলির সাক্ষী ছিলেন তাঁরা। ফলে সব সময় বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখতেন। তাঁদের সাফল্যের সেই উপাখ্যানই শুনে নেওয়া যাক।
উত্তর প্রদেশের গুলাওথি শহরতলির বাসিন্দা দুই ভাই সঞ্জীব এবং রাজীব গুপ্তা। সেখানেই ছোট্ট একটি মুদির দোকান চালাতেন তাঁদের বাবা। তবে বাবার লড়াইয়ের দিনগুলির সাক্ষী ছিলেন তাঁরা। ফলে সব সময় বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখতেন। তাঁদের সাফল্যের সেই উপাখ্যানই শুনে নেওয়া যাক। আসলে এরপর গাজিয়াবাদে চলে যান সঞ্জীব এবং রাজীব। সেখানে গিয়ে প্রথমে ধারে হোলসেলারদের কাছ থেকে এয়ার কুলার কিনতেন। এরপর স্বল্প লাভ রেখে তা বিক্রি করে দিতেন। প্রথম দিকে স্কুটারে চেপে ফরিদাবাদে ডিলারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হত তাঁদের। ধীরে ধীরে ব্যবসা শাখাপ্রশাখা মেলতে শুরু করে।
advertisement
তখন একটি ভাল স্কুটার কেনেন তাঁরা। ১৯৯২ সাল নাগাদ নিজেদের কুলার তৈরি করতে শুরু করেন ব্যবসায়ী দুই ভাই। আর সেই ব্যবসা শুরু করার জন্য বন্ধুদের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। নিজেদের ব্র্যান্ড চালু করেন। নাম Summercool। মাত্র ১৬০০ টাকার কুলার বাজারে আনেন। তবে সবটা সহজ ছিল না। কারণ এই ব্যবসা দাঁড় করাতে বিশেষ করে গ্রাহকদের ভরসা জিততে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিল সঞ্জয় আর রাজীবকে।
advertisement
আসলে বড় বড় শোরুমে কিছুতেই Summercool-এর প্রোডাক্ট দেখানো হত না। যদিও সস্তা দাম, ভাল গুণমান এবং মুখে মুখে প্রচারের কারণে ওই ব্র্যান্ডের কুলারগুলি আলাদা ভাবেই গ্রাহকদের নজর কাড়ে। ফলে ধীরে ধীরে ভরসা বাড়তে থাকে গ্রাহকদের। আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। আড়েবহরে বেড়ে ওঠে ব্যবসা। প্রথম ১০ বছরে বার্ষিক ৫০ গুণ হারে সম্প্রসারিত হয় সেই ব্যবসা। তাঁদের সংস্থার পণ্যের গুণমান এবং গ্রাহক পরিষেবার কারণেই উন্নতি হয়। ২০০৫ সালে সঞ্জীব এবং রাজীবের সংস্থার একটি ইউনিটে আগুন লেগে গিয়েছিল। বড়সড় ক্ষতির মুখে দাঁড়ায় ব্যবসা। তবে মার্কেটে ভাল খ্যাতিই বাঁচিয়ে দেয় দুই ভাইকে। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ডিলার এবং সাপ্লায়াররা। ধারেই সাপ্লায়াররা কাঁচামাল সরবরাহ করে দেন। শুধু তা-ই নয়, অ্যাডভান্স বা অগ্রিমও দেন ডিস্ট্রিবিউটররা।
advertisement
ভরসা এবং সাহায্যের বলে বলীয়ান হয়ে নিজেদের ব্যবসাকে ঘুরে দাঁড় করান সঞ্জীব এবং রাজীব। বর্তমানে প্রতি মাসে ১ লক্ষ টাকারও বেশি দামের প্রোডাক্ট তৈরি করছে তাঁদের সংস্থা। এই সংস্থার অফলাইন রিটেল স্টোর থেকেই ৯০ শতাংশ বিক্রিবাটা হয়। আর ওই সংস্থার বেশিরভাগ বা ৮০ শতাংশ প্রোডাক্টই (এলইডি টিভি এবং ওয়াশিং মেশিন ছাড়া) ইন-হাউজ তৈরি করা হয়। বছরের পর বছর ধরে এয়ার কুলার ছাড়াও অন্যান্য প্রোডাক্ট তৈরি করতে শুরু করে সঞ্জীব এবং রাজীবের সংস্থা। এর মধ্যে অন্যত হল - সিলিং ফ্যান, একজস্ট ফ্যান, রুম হিটার, এলইডি টিভি, কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সেস ইত্যাদি।
advertisement
Summercool কোম্পানি রয়েছে গাজিয়াবাদে। আজ এই সংস্থার চারটি আধুনিক ফ্যাক্টরি রয়েছে। সেই সঙ্গে এখানে কাজ করেন ২০০ জন কর্মচারী। দেশের ১৭টি রাজ্যে রয়েছে তাঁদের ২৫০টি ডিস্ট্রিবিউটর। আর গোটা ভারতের প্রায় ৪০০০টি স্টোরে পাওয়া যায় তাঁদের প্রোডাক্ট। শুধু তা-ই নয়, Amazon এবং Flipkart-এর মতো অনলাইন মার্কেটপ্লেসেও মেলে এই সংস্থার প্রোডাক্ট। সেখান থেকে ১০ শতাংশ মুনাফা আসে এই ব্যবসায়।