মোবাইল নম্বর 'হ্যাক' করে অ্যাকাউন্ট 'ফাঁকা' করে দিচ্ছে হ্যাকাররা...! আপনিও হতে পারেন 'শিকার', কী ভাবে বাঁচবেন? নিয়ম বলে দিল RBI

আজকাল অনলাইন জালিয়াতি খুবই সাধারণ একটা সমস্যা হয়ে উঠেছে। প্রতারকরা বিভিন্ন উপায়ে মানুষকে প্রতারিত করার চেষ্টা করে চলেছে অবিরত। আপনিও নিশ্চয়ই এমন অনেক ঘটনা দেখেছেন বা শুনেছেন যেখানে স্ক্যামাররা মানুষের ফোন বা কম্পিউটার হ্যাক করে ব্যক্তিকে ফ্রড করছে?

সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে যা বেশ নাড়িয়ে দিয়েছে দেশের মানুষকে। এবার, প্রতারকরা একটি ব্যাঙ্ককে টার্গেট করেছে এবং ব্যাঙ্ক থেকেই মোট ১১ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছে জালিয়াত দলটি। আসুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে ঘটেছে এই ভয়ঙ্কর জালিয়াতির ঘটনাটি।

হিমাচল প্রদেশ রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কে একটি বড়সড় অনলাইন জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। প্রতারকরা খুব চালাকির সঙ্গে এই প্রতারণাটি করেছে। প্রতারকরা একজন গ্রাহকের মোবাইল ফোন হ্যাক করে ১১ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছে। কিন্তু জানেন কী এই জালিয়াতি কীভাবে ঘটল? শুনলে চমকে যাবেন।

এই জালিয়াতি চালানোর জন্য, প্রতারকরা চাম্বা জেলার হালতি শাখায় অ্যাকাউন্ট থাকা একজন ব্যক্তিকে ব্যবহার করেছিল। স্ক্যামাররা প্রথমে গ্রাহকদের একটি মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলে।

এই অ্যাপটি ডাউনলোড করার সঙ্গে সঙ্গেই স্ক্যামাররা গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস পেয়ে যায়। এই অ্যাক্সেস ব্যবহার করে, তারা চুরি যাওয়া টাকা NEFT এবং RTGS এর মাধ্যমে ২০টি ভিন্ন অ্যাকাউন্টে সুন্দর ভাবে স্থানান্তর করে নেয়।

সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ১১ থেকে ১২ মে-র মধ্যে জালিয়াতির ঘটনাটি ঘটে। কিন্তু ১৩ মে ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় ১৪ মে পর্যন্ত কাউকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়নি। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) থেকে লেনদেনের প্রতিবেদন পাওয়ার পরই ব্যাঙ্কটি জালিয়াতির বিষয়টি জানতে পারে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, স্ক্যামাররা 'হিমপাইসা' নামের একটি অ্যাপ ব্যবহার করে গ্রাহকের মোবাইল ফোন হ্যাক করে। এই ভুয়ো অ্যাপের মাধ্যমে তারা ব্যাঙ্কের ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং সিস্টেম হ্যাক করে অবৈধভাবে সব টাকা স্থানান্তর করে নেয়।

ব্যাঙ্ক কী করেছে?জালিয়াতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর, ব্যাঙ্কের প্রধান তথ্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা শিমলার সদর থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেন। সেই মোতাবেক সাইবার পুলিশ স্টেশন বিষয়টি তদন্ত করছে।

পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে চুরি যাওয়া অর্থ যে সকল অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়েছিল সেগুলি বন্ধ করে দিয়েছে। যাতে ওইসব অ্যাকাউন্ট থেকে আর কোনও লেনদেন না হয়। ইন্ডিয়ান কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (CERT-In)-এর একটি দলও ব্যাঙ্কের ডেটা সেন্টারের পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিদর্শন করার জন্য সিমলায় যাচ্ছে। হ্যাকাররা কীভাবে ব্যাঙ্কের ইন্টারনেট সিস্টেমে প্রবেশ করেছিল এবং ব্যাঙ্কের সিস্টেমে অন্য কোনও নিরাপত্তা দুর্বলতা আছে কিনা তাও তদন্ত করবে দলটি।

আরবিআইয়ের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:এই ধরণের জালিয়াতি থেকে গ্রাহকদের রক্ষা করার জন্য আরবিআই কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছে।

আপনার লগইন আইডি, পাসওয়ার্ড, ওটিপি বা কার্ডের বিবরণ কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না।কোনও অজানা লিঙ্কে ক্লিক করবেন না বা কোনও অজানা উৎস থেকে কোনও ফাইল ডাউনলোড করবেন না।

এমন কোনও অজানা অ্যাপ ইনস্টল করবেন না যা আপনার কাছ থেকে খুব বেশি অনুমতি চায়।তথ্যের জন্য সর্বদা ব্যাঙ্ক বা পরিষেবা প্রদানকারীর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের উপর নির্ভর করুন।