ভারতীয় জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী নব গ্রহের ভিন্ন ভিন্ন ও বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে বলে মনে করা হয়। এই ন’টি গ্রহের মধ্যে, শনিকে কর্ম অনুসারে ফল প্রদানকারী গ্রহ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। যে ব্যক্তি ভাল কাজ করেন তিনি ভাল ফল পান আবার খারাপ, অনৈতিক কাজ করলে শনিদেব সেই ব্যক্তিকে শাস্তিস্বরূপ খারাপ ফল প্রদান করেন বলে মনে করা হয়। জ্যোতিষ অনুযায়ী মনে করা হয়, কোনও ব্যক্তির কর্মই স্থির করে দিতে পারে তিনি ধনী হবেন না দরিদ্র এবং এটিও নির্ধারণ করে থাকেন স্বয়ং শনিদেব। জ্যোতিষশাস্ত্রে, শনির মহাদশা সম্পর্কে একটি বর্ণনা রয়েছে, যা ১৯ বছর স্থায়ী হয়। এই সময়ে, কোনও ব্যক্তি কৃত কর্ম অনুযায়ী ফল লাভ করে থাকেন তিনি। এ সময় সুফল পাওয়ার জন্য কী ব্যবস্থা করা যেতে পারে, তা জানাচ্ছেন ভোপালের বাসিন্দা জ্যোতিষী ও পণ্ডিত হিতেন্দ্র কুমার শর্মা।
অর্থিক ক্ষতির লক্ষণ কী?- জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে, যে ব্যক্তির জন্মছকে শনি অশুভ ঘরে বসে থাকেন, সেই ব্যক্তির অর্থহানি নিশ্চিত। অন্য দিকে, শনি যদি দুর্বল রাশিতে থাকেন বা সূর্যের সঙ্গে থাকেন তা হলেও জাতক-জাতিকার আর্থিক সঙ্কট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শনি প্রতিকূল হলে অর্ধশতক বা ঢাইয়ায় গেলেই আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এ সব ছাড়াও যদি কোনও ব্যক্তি উপদেশ ছাড়াই নীলা পরিধান করেন, অশুদ্ধ আচার-আচরণ করেন বা বয়স্কদের অপমান করেন, তা হলে তাঁকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
কখন একজন ধনী হয়ে উঠতে পারে?- শনি যদি ব্যক্তির জন্মছকে অনুকূল থাকেন— তৃতীয়, ষষ্ঠ বা একাদশ ঘরে থাকেন, তবে সেই ব্যক্তি আর্থিক ভাবে খুবই শক্তিশালী হয়ে থাকেন। আবার, শনি যদি কোনও ব্যক্তির জন্মছকে উচ্চপদস্থ থাকেন বা শনি যদি নিজের ঘরে থাকেন তবে জাতক ধনবান হয়ে থাকেন। এই সব ছাড়াও যদি শনি বিশেষ ভাবে অনুকূল হন, সেই সঙ্গে শনির মহাদশা, সাড়েসাতি বা ঢাইয়া না চলে, তা হলে সেই ব্যক্তির জীবনে কখনও অর্থের অভাব হয় না। এ সবের মাঝে বাবা-মায়ের আশীর্বাদ থাকাটাও খুব জরুরি।
শনিদেবকে খুশি করার উপায়- যে ব্যক্তি শনির মহাদশা, সাড়েসাতি বা ঢাইয়ায় শনির অশুভ প্রভাবের সম্মুখীন হন, সেই ব্যক্তিকে শনিবার অশ্বত্থ গাছের নিচে সরষের তেল দিয়ে চারমুখী প্রদীপ জ্বালাতে হবে। এর পর অশ্বত্থ গাছটি অন্তত তিনবার প্রদক্ষিণ করতে হবে। প্রদক্ষিণের পরে, শনিদেবের তান্ত্রিক মন্ত্রটি ১০৮ বার জপ করতে হবে। শেষে একজন গরিব বা অভাবী ব্যক্তিকে কিছু অর্থ দান করতে হবে।