West Medinipur News: মেদিনীপুরের মূক ও বধির ভাইবোনের 'দুয়ারে' পৌঁছয়নি সরকার! প্রতিবন্ধী হয়েও জোটেনি 'মানবিক' ভাতা, আশ্বাস বিডিও'র
- Published by:Samarpita Banerjee
Last Updated:
বর্তমান বিডিও সুদেষ্ণা দে মৈত্র জানিয়েছেন, "দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে"। আপাতত, তাঁর আশ্বাসই ভরসা। যদি একটু অন্তত 'আলো' আসে অজিত-ঊষার জীবনে!
#পশ্চিম মেদিনীপুর- মেদিনীপুরের এক মূক ও বধির (বোবা ও কালার) ভাইবোনের জীবন কাটছে চরম অসহায়তার মধ্যে (West Medinipur News)। গত ৪০ বছর ধরে মেলেনি কোন সরকারি সাহায্য বা প্রকল্পের সুবিধা। তাই, জেলা শহরের অদূরে বসবাস করলেও, জীবনজুড়ে তাদের শুধুই অন্ধকার। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর সদর ব্লকের কালগাং মালিয়াড়ার বাসিন্দা ভাই অজিত রানা (৪২) ও দিদি ঊষা রানা (৪৫)। ভাই অজিত বিবাহিত। দিদিও তাঁর কাছেই থাকেন। ভিক্ষাবৃত্তি করে 'সংসার' চালান অজিত। তাঁর স্ত্রী অবশ্য লোকের বাড়ি বাড়ি কাজ করেন। আর, ঊষা সারাদিন বাড়িতেই শুয়ে থাকেন। কখনও কখনও আশেপাশের নালা-নর্দমাতেও পড়ে যান। স্থানীয়রা কিংবা পরিবারের সদস্যরা সেখানে থেকে তুলে নিয়ে আসেন। তাঁদের এই মর্মান্তিক কাহিনীতে শহরবাসী তথা জেলাবাসী ব্যথিত হলেও, এই কাহিনী নাকি এতদিন অবধি প্রশাসনের কর্ণকুহরে প্রবেশ করেনি! হয়নি সরকারি 'মানবিক' কার্ড। পাননা কোনো প্রকল্প বা ভাতা। এমনকি, দুজনের ভোটার কার্ডও হয়নি। অজিতের শুধুমাত্র আধার কার্ড হয়েছে, কিন্তু দিদি ঊষার তাও হয়নি। এই বিষয়ে মেদিনীপুর সদরের বিডিও সুদেষ্ণা দে মৈত্র-কে অবগত করা মাত্র তিনি অবশ্য জানিয়েছেন, "এক মাসের মধ্যে ওঁদের দু'জনকে মানবিক প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। ভোটার কার্ডের বিষয়টাও দেখে নেওয়া হবে, কেন এতদিন হয়নি"। তবে, সদর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও, তিনি ফোনে সাড়া দেননি।
প্রসঙ্গত, প্রতিবন্ধী বা বিশেষভাবে সক্ষম মানুষের জন্য নির্দিষ্ট সরকারি প্রকল্প রয়েছে। হচ্ছে 'পাড়ার সমাধান' কিংবা 'দুয়ারে সরকার'। তবুও, গত প্রায় ৪০ বছর ধরে কিভাবে তাঁরা ন্যূনতম সরকারি সাহায্য বা প্রকল্পের বাইরে রয়ে গেলেন তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন! অজিতের দাদা তরুণ রানা জানান, "ভাই অজিত ও বোন ঊষা ছোট থেকে মূক ও বধির। এছাড়াও, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ নয়৷ ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারে না (West Medinipur News)। ভাই অজিতের ভিক্ষের রোজগারে কোনওক্রমে পেট চলে এই পাঁচজনের"। এও বলেন, "আমি লেবারের কাজ করি এবং আমারও পরিবার রয়েছে৷ তাই আমিও তাদের সাহায্য করে উঠতে পারিনি। বহুবার নেতা, মন্ত্রী ও সরকারি আবেদন-নিবেদন করেছি ৷ কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও সরকারি প্রকল্পে ওদের নাম ওঠেনি"।
advertisement
জানা গিয়েছে, কালগাঙ মালিয়াড়ার বাসিন্দা আকলু রানা'র ১২ টি ছেলে-মেয়ে। এদের মধ্যে ৬ জন ছেলে, ৬ জন মেয়ে। তাঁদের মধ্যে দুই ভাই-বোন মূক, বধির আর বিশেষ ভাবে সক্ষম। বাবা-মা মারা গেলে আরও কয়েকজন বোনের মৃত্যু হয়। তখন বাকিরা শারীরিক ও মানসিকভাবে সক্ষম থাকায়, যে যার মতো নিজের পরিবার নিয়ে এঁদের থেকে আলাদা হয়ে যায়৷ পাশের বুথের পঞ্চায়েত সদস্য নিরঞ্জন হালদার বলেন, "এর আগে ওই পরিবার খেতে পেত না। রাস্তার ধারে পড়ে পড়ে দিন কাটে। ওর বাবা বহুবার ভাতার আবেদন করেছিল৷ কিন্তু, শেষ পর্যন্ত হয়নি নানা কারণে। অকালে মারা যান ঊষা-অজিতের বাবা। এই অভিযোগ আমরা অনেকবার শুনেছি। আমরা বিষয়টা উপরমহলে জানিয়ে ব্যবস্থা নেব দ্রুত"। তবে, বর্তমান বিডিও সুদেষ্ণা দে মৈত্র জানিয়েছেন, "দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে"। আপাতত, তাঁর আশ্বাসই ভরসা। যদি একটু অন্তত 'আলো' আসে অজিত-ঊষার জীবনে! (West Medinipur News)
advertisement
advertisement
Partha Mukherjee
Location :
First Published :
December 31, 2021 10:24 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/পশ্চিম মেদিনীপুর/
West Medinipur News: মেদিনীপুরের মূক ও বধির ভাইবোনের 'দুয়ারে' পৌঁছয়নি সরকার! প্রতিবন্ধী হয়েও জোটেনি 'মানবিক' ভাতা, আশ্বাস বিডিও'র