West Medinipur News- মেয়ের স্মৃতি সবার মধ্যে বাঁচিয়ে রাখতে, স্কুল শিক্ষক বাবা স্কুল ভবন গড়লেন
- Published by:Samarpita Banerjee
Last Updated:
চোখে জল স্বপন বাবুর। প্রিয় শিক্ষককে জড়িয়ে ধরে তখন কাঁদছেন সকলেই
#পশ্চিম মেদিনীপুর- মেধাবী মেয়ে তখন বি.এসসি নার্সিং (B.Sc Nursing) এ পাঠরতা। মেয়েকে ছাড়তেই বাইকে করে স্থানীয় বাস স্টপেজে গিয়েছিলেন। মেয়েকে নামিয়ে, বাইক স্ট্যান্ড করার সময়ই ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। একটি কয়লা বোঝাই লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বছর ২৩ এর গার্গী-কে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর ২ নং ব্লকের দুবরাজপুর নেতাজি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৌমেন্দ্র চৌধুরী'র ছোট মেয়ে গার্গী'র! ২০১৯-এর ১৫ সেপ্টেম্বরের সেই ভয়াবহ স্মৃতি স্মরণ করলে, আজও কান্নায় ভেঙে পড়েন কন্যাহারা স্বপন বাবু। অন্তরে শোকের সাগর বয়ে বেড়াচ্ছেন সপরিবারে। চেয়েছিলেন আদরের ছোট মেয়েকে সকলের মাঝেই বাঁচিয়ে রাখবেন। সেই ইচ্ছে থেকেই মেয়ের নামে গড়ে দিলেন দু'টি স্কুল ভবন। নাম দিলেন, 'গার্গী ভবন'। অবসর গ্রহণের তিনমাস পর, তাঁর অবসরকালীন সংবর্ধনা উপলক্ষে, নিজের সেই প্রাণপ্রিয় দুবরাজপুর নেতাজি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোতলা'তে গড়ে দেওয়া দুটি ভবনের উদ্বোধন হল মঙ্গলবার (২২ মার্চ)। এই স্কুলেই বাবার হাত ধরে প্রাথমিকের পাঠ নিতে আসতো গার্গী। এদিন তাই ফের একবার শোকে, স্মৃতিতে, আবেগ আর অন্তরবেদনায় হাউহাউ করে কেঁদে উঠলেন স্বপন বাবু। সকলে জড়িয়ে ধরলেন তাঁদের প্রিয় শিক্ষক মশাইকে।
সন্তান হারানোর শোক বুকে লালন করলেও, আদরের কন্যার 'স্মৃতি' সকলের মাঝে উজ্জ্বল করে রাখতেই দুবরাজপুর নেতাজি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সৌমেন্দ্র চৌধুরী'র এই প্রয়াস। সাড়ে চার লক্ষ টাকা ব্যয়ে গড়ে দিয়েছেন স্কুলের দোতলার দু'টি ভবন। তাঁর এই মহান ভাবনা ও উদ্যোগ-কে সমর্থন জানিয়েছেন স্ত্রী শম্পা চৌধুরী এবং বড় মেয়ে কঙ্কনা চৌধুরী-ও। ফের একবার যা 'মহামনীষী' ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মেদিনীপুর-কে গর্বিত করলো।
advertisement
প্রসঙ্গত, ২০২১-এর ডিসেম্বর মাসে অবসর গ্রহণ করেছেন স্বপন বাবু। তবে, অতিমারী পরিস্থিতিতে তাঁর অবসরকালীন সংবর্ধনা স্থগিত রেখেছিলেন স্কুলের শিক্ষক মশাইরা। স্বপন বাবু-ও চেয়েছিলেন, তাঁর অন্তরের বাসনা আগে পূরণ হোক; তারপর তিনি সংবর্ধনা নেবেন। অবশেষে, ভবন উদ্বোধন আর সংবর্ধনা, একদিনেই সম্পন্ন হলো এক আবেগমথিত পরিবেশে। শোকে আর স্মৃতিতে ভেসে গিয়ে স্বপন বাবু বললেন, "নিজের হাতে খাইয়ে, মেয়েকে এই স্কুলে নিয়ে আসতাম। তারপর বড় হলো, নার্সিংয়ে সুযোগ পেল। নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাসে, হঠাৎ একদিন সব শেষ। তবে, সশরীরে ও হারিয়ে গেলেও, ওর স্মৃতি যাতে এই কচিকাঁচাদের মধ্যেই উজ্জ্বল হয়ে থাকে, সেজন্যই এই ভাবনা।" চোখে জল স্বপন বাবুর। প্রিয় শিক্ষককে জড়িয়ে ধরে তখন কাঁদছেন সকলেই।
advertisement
Location :
First Published :
March 24, 2022 2:22 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/পশ্চিম মেদিনীপুর/
West Medinipur News- মেয়ের স্মৃতি সবার মধ্যে বাঁচিয়ে রাখতে, স্কুল শিক্ষক বাবা স্কুল ভবন গড়লেন