পশ্চিম মেদিনীপুর: বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বণের শুরুই হয় নববর্ষ বা পয়লা বৈশাখ দিয়ে। ফেলে আসা বছরের ধার বাকি চুকিয়ে এই দিন বেশিরভাগ বাঙালি দোকানে হিসেবের নতুন খাতা শুরু হয়। যাকে বলা হয় হালখাতা। এই উপলক্ষে পুজো পাঠও হয়। সিদ্ধিদাতা গণেশ এবং ধনদেবী লক্ষ্মী কাছে লাল আভরণে মোড়া খেরোর খাতা পুজোর মধ্য দিয়ে হালখাতার সূচনা হয়। কিন্তু প্রযুক্তির হাত ধরে ধীরে ধীরে বিদায় নিচ্ছে সেই লাল রঙের খেরোর খাতা। বদলে ডিজিটাল উপায়ে আয় ব্যয়ের হিসেব রাখছেন ব্যবসায়ীরা। তবে পয়লা বৈশাখে হালখাতা করার রীতি এখনও বহাল তবিয়তেই চলছে।
বাঙালি আজ মহাসমরহে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছে। বিভিন্ন জায়গা উৎসব অনুষ্ঠান হচ্ছে। বিকেল থেকেই দোকানে দোকানে শুরু হয়ে যাবে হালখাতার অনুষ্ঠান। কিন্তু লাল রঙের খেরোর খাতা যারা বিক্রি করেন সেই ব্যবসায়ীদের মুখ ভার। এই বছর এই খেরোর খাতার বিক্রি প্রায় অর্ধেক কমে গিয়েছে। এই ছবি কলকাতা শহরের যেমন তেমনই জঙ্গলমহলেরও। সর্বত্রই ইন্টারনেট ও স্মার্টফোনের হাত ধরে ডিজিটাল যুগের রমরমা শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে ব্যবসার হিসেবপত্র রাখার পদ্ধতিও বদলাতে বাধ্য হয়েছেন বাঙালি ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: নববর্ষের সকালে দর্শনার্থীদের লম্বা লাইন কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে
ল্যাপটপ বা ডেক্সটপে অত্যাধুনিক সফটওয়্যারের পাশাপাশি বর্তমানে স্মার্টফোনে বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করেও ব্যবসার আয়-ব্যয়ের হিসেব রাখা যায়। তাতে চটজলদি যে কোনও তথ্য খুঁজে পাওয়া সম্ভব। স্বাভাবিকভাবেই কষ্ট করে খাতায় হাতে-কলমে হিসেব রাখার ঝামেলার মধ্যে আর যেতে চাইছেন না ব্যবসায়ীরা। তার ধাক্কাতেই হালখাতার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে থাকা হিরোর খাতার বিদায় একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সমাজ বিশ্লেষকদের মতে, অতীতে যে কারণে হালখাতা হত বর্তমান পরিস্থিতিতে তার প্রয়োজন ফুরিয়েছে। কিন্তু পুরনো ঐতিহ্য এবং ঈশ্বরের কাছে ব্যবসার সমৃদ্ধি কামনা করে আজও বাঙালি ব্যবসায়ীরা প্রতিবছর পয়লা বৈশাখে হালখাতা করে থাকেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হালখাতা করার পদ্ধতিও আরও স্মার্ট হয়ে উঠবে বলে অনেক বিশেষজ্ঞের ধারণা।
রঞ্জন চন্দ
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Digital, Halkhata, Mobile app, Poila Baisakh, West Medinipur News