আসানসোল : ক্যালেন্ডারের হিসাব বলছে দুর্গা পুজোর আগে আর তিন মাস বাকি । গত দু'বছর করোনার দাপটে দুর্গাপুজো অনেকখানি ফিকে হয়ে গিয়েছিল । দুর্গাপুজোর আনন্দে যেমন ভাটা পড়েছিল, তেমন ভাবেই দুর্দশার শিকার হয়েছিলেন কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীরা । তবে চলতি বছর সংক্রমণ এখনও আয়ত্তে রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা আশার আলো দেখছেন মৃৎশিল্পীরা । তাঁদের আশা, এবছর দেবী দুর্গার আগমনে তাঁদের দুর্দশা কাটবে । সেই আশা সঙ্গী করেই আসানসোলের মহিশীলার কুমোরপাড়ায় দুর্গা মূর্তি তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে । মূর্তি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মৃৎশিল্পীরা ।
আসানসোল জেলা হাসপাতাল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে মহিশীলার পালপাড়া । এই পালপাড়াতেই মূর্তি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে বেশ কয়েকটি পরিবার । বিশেষ করে দুর্গা, কালী, লক্ষ্মী, সরস্বতী, মনসা, জগদ্ধাত্রী - ইত্যাদি প্রতিমা তৈরি করে তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ হয় ।
তবে বিগত দুবছর করোনার কারণে মৃৎশিল্পীদের এক প্রকার অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনযাপন করতে হয়েছে । আকস্মিকভাবে প্রথম লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর এই মৃৎশিল্পীদের অর্ধনির্মিত দুর্গা মূর্তি তাদের কর্মশালায় পড়ে পড়ে নষ্ট হয়েছে । লকডাউনের কারণে বায়না করে যাওয়া পুজো উদ্যোক্তারাও মাতৃপ্রতিমা নিতে আসেননি, বা লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর তাঁরা তাঁদের বায়না বাতিল করেছিলেন।
আরও পড়ুন : চোখে ঘুম এলেই গলায় শুকনো কাশি? সহজ ঘরোয়া টোটকা আপনার জন্য
ফলে সেই সময় দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে সামান্য মুনাফা লাভের আশায় মহাজনের কাছে যে টাকা তাঁরা ধার করেছিলেন, সে টাকাও তাঁরা শোধ করতে পারেননি । পরের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালেও সেই অর্থে লাভের মুখ দেখতে পাননি তাঁরা।
তবে এই বছর দুর্গাপুজোর আগে করোনা পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক । ফলে তারা আশার আলো দেখছেন । ইতিমধ্যেই আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন বারোয়ারি থেকে শুরু করে বনেদি বাড়ির দুর্গা মূর্তির অগ্রিম বায়না ।
আরও পড়ুন : আলু, লেবু, বেদানা-তরকারি ও ফলের খোসা ফেলে দেন? হারাচ্ছেন সুন্দরী হওয়ার উপায়
মহিশিলা পালপাড়ার মৃৎশিল্পী রঞ্জিত পাল, বাসুদেব পালরা বলছেন, প্রথম লকডাউন ঘোষণা হওয়ার আগে তাঁরা যথারীতি অন্য বছরের মতো সেই বছরের মূর্তি তৈরির প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন । শুধু তাই নয়, মূর্তি তৈরির জন্য প্রত্যেক বছরের মতো তাঁদের এই কর্মশালায় ভিন জেলা থেকে অতিরিক্ত শিল্পীরাও চলে এসেছিলেন । পাশাপাশি ভিন জেলা থেকে আসা মৃৎ শিল্পীদের চুক্তি বাবদ অগ্রিম পারিশ্রমিক দেওয়া হয়েছিল ।
আরও পড়ুন : অফিসের কাজের চাপে বিপর্যস্ত দাম্পত্য? স্ট্রেস পেরিয়ে বাঁচিয়ে তুলুন বিয়েকে
সেই সময় মূর্তি তৈরির জন্য ভিন জেলা থেকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে মাটি আমদানি করতে হয়েছিল । সঙ্গে ছিল বেড়ে চলা বাঁশ, সুতলি, খড় ও মূর্তি সাজানোর জিনিসপত্রের দামের বোঝাও । সেইসব সহ্য করেও, লকডাউন ঘোষণার ফলে প্রায় সব মূর্তি তাদের কর্মশালাতে থেকে যায় ।
উল্লেখ্য, এই মহিশিলা এলাকার স্বনামধন্য মৃৎশিল্পী কৃষ্ণচন্দ্র পাল বলেন, ‘‘ অনেক নিরাশার পর করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক । আবার এ বছর সমস্ত বারোয়ারি এবং বনেদি ঘরের দুর্গা প্রতিমার বায়না আসতে শুরু করেছে । ফলে কিছুটা হলেও বিগত বছরগুলিতে যে লোকসান হয়েছে, তা কিছুটা হলেও সামলে নিতে পারব বলে আশা করছি ।’’
(Nayan Ghosh)নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Durga Puja 2022