বিচার পেলেন সুজেট, স্মৃতি হাতড়াল পার্কস্ট্রিট

Last Updated:

প্রতিবাদী কণ্ঠ অবশেষে পেল বিচারের ভাষা ৷ মৃত্যুর প্রায় ৯ মাস পর সুবিচার পেলেন সুজেট জর্ডন ৷ ১০ ডিসেম্বর ঘোষণা হল পার্কস্ট্রিট ধর্ষণকাণ্ডের রায় ৷ আইনের চোখে দোষী সাব্যস্ত হলেন ধৃত তিনজন ৷ শুক্রবার দুপুর দুটোয় দোষীদের সাজা শোনাবে নগর দায়রা আদালত ৷

#কলকাতা:   প্রতিবাদী কণ্ঠ অবশেষে পেল বিচারের ভাষা ৷ মৃত্যুর প্রায় ৯ মাস পর সুবিচার পেলেন সুজেট জর্ডন ৷ ১০ ডিসেম্বর ঘোষণা হল পার্কস্ট্রিট ধর্ষণকাণ্ডের রায় ৷ আইনের চোখে দোষী সাব্যস্ত হলেন ধৃত তিনজন ৷ শুক্রবার দুপুর দুটোয় দোষীদের সাজা শোনাবে নগর দায়রা আদালত ৷
বহু প্রতীক্ষার পর অবশেষে জয় হল এক নারীর সোচ্চার কণ্ঠের ৷ যে কণ্ঠ সমাজের সামনে দাঁড়িয়ে সরবে বলেছিল, ‘ আমি ভিক্টিম ৷ আমি কোনও অপরাধী নই ৷ তাহলে আমাকে মুখ লুকোতে হবে কেন! মুখ লুকোবে ওরা, যারা আমাকে ধর্ষণ করেছে ৷ ’ ভারতবর্ষে প্রথম কোনও মহিলা সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন- ‘আপনারা পার্কস্ট্রিট ধর্ষিতা’ বলে আমাকে উল্লেখ না করে আমার নাম-পরিচয় ব্যবহার করুন৷’ শুধু বলেই থেমে থাকেননি সংবাদমাধ্যমে কোনও আড়াল ছাড়াই নিজের কথা তিনি নিজেই তুলে ধরেছিলেন ৷ যে দেশে প্রতি ১৩ সেকেণ্ডে একজন করে নারী-মহিলা-কন্যাসন্তান ধর্ষিতা হন ৷ যে দেশে নারীর চরিত্র বিচার হয় সতীচ্ছদের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি দিয়ে, সেই দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে এই কথাগুলো বলার জন্য একজন নারীর মেরুদণ্ডে কতটা শক্তি দরকার তা আন্দাজ করা খুব একটা কঠিন নয় ৷
advertisement
৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২, পাল্টে দিয়েছিল দুই কন্যাসন্তানের মা ডিভোর্সী সুজেট জর্ডনের জীবন ৷ নাইটক্লাব থেকে বাড়ি ফেরার সময় পার্কস্ট্রিট থেকে গাড়িতে জোর করে তুলে ধর্ষণ করা হয়েছিল তাঁকে ৷ ধর্ষণের পর ‘একেবারে শেষ’ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল সুজেটকে ৷ ভীত সন্ত্রস্ত সুজেট মেয়েদের কথা ভেবে প্রথমে চুপ করে থাকবেন ভেবেছিলেন, কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত নেন পুলিশে অভিযোগ করার ৷ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২, পুলিশে অভিযোগ করতে গিয়ে যে হেনস্তা তাঁকে হতে হয়েছিল তা অবর্ণনীয় ৷ পুলিশ থেকে প্রশাসন কেউ বিশ্বাস করেনি ধর্ষণের কথা ৷ প্রশ্ন তোলা হয় তাঁর চরিত্র নিয়ে, জীবনযাপন নিয়ে ৷ ‘একজন ডিভোর্সী অত রাতে নাইটক্লাবে যাবেন, মদ খাবেন আর তাকে ধর্ষণ করা হবে না সেটাই তো আশ্চর্যের!’৷ ভেসে এসেছিল এরকম কটূক্তি ৷ কারোর আবার মনে হয়েছিল ওটা ধর্ষণের ঘটনা নয়, শুধুমাত্র একজন দেহব্যবসায়ী ও তাঁর খদ্দের মধ্যেকার ঝামেলা ৷ এত শ্লেষে বিদ্ধ হয়েও দমেননি সুজেট ৷ বরং পরিস্থিতি আরও জেদি, প্রতিবাদী করে তুলেছিল তাঁকে ৷ বৃহস্পতিবার আদালত সিলমোহর দিল সুজেটের সেই দাবিতে ৷ মান্যতা দিল তাঁর প্রতিবাদকে৷  ‘সেদিন সত্যিই আমাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল আর ধর্ষণ করেছিল এই পাঁচজন ৷’ এই কথাগুলো যে কতবার চিৎকার করে বলতে হয়েছে সুজেটকে তার হিসেব নেই ৷
advertisement
advertisement
পার্কস্ট্রিটের সে রাতের ঘটনা চিরতরে বদলে দিয়েছিল সুজেটকে ৷ নাম-পরিচয় প্রকাশ পাওয়ার পর প্রতিবাদের পুরস্কার হিসেবে হারিয়েছিলেন নিজের চাকরি ৷ কলকাতার জনপ্রিয় অভিজাত হোটেলে ‘ধর্ষিতা’ হওয়ার অপরাধে ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাঁকে ৷ পরে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় সঙ্গে যুক্ত হন দুই সন্তানের জননী৷ তাঁকে দেখে প্রতিবাদের জন্য সাহস যুগিয়েছেন বহু নিগৃহীতা ৷ নির্যাতিতাদের পাশে দাঁড়াতে সবসময় ছুটে গিয়েছেন সুজেট ৷  তাঁর অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে তাঁর লড়াইয়ের কাহিনী একটি সর্বভারতীয় টেলিভিশন শো-তেও তুলে ধরা হয়৷  উপস্থাপক আমির খান স্বয়ং কুর্নিশ জানিয়েছিলেন সুজেটকে৷ ধর্ষণকাণ্ডের চার্জশিট জমা পড়ার পর থেকে সুবিচারের আশায় বুক বেঁধেছিল সাহসিনী সুজেট ৷ কিন্তু তাঁর লড়াই হার মানল ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়ার কাছে ৷ রায় শোনার পর হয়ত এদিন কী বলতেন সেই বক্তব্য অধরাই রয়ে গেল৷
বাংলা খবর/ খবর/Uncategorized/
বিচার পেলেন সুজেট, স্মৃতি হাতড়াল পার্কস্ট্রিট
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement