বাংলার ক্রিকেট, বাঙালি নেই! আম্পায়ারদের এখন হিন্দি শেখার হিড়িক, চাঞ্চল্যকর ঘটনা

Last Updated:

Bengal Cricket- সম্মতি সূচক মাথা নেড়ে দ্বিতীয় আম্পায়ারের উত্তর, "প্রত্যেকটা ম্যাচে গিয়ে এখন মাঠে দেখি বাংলাতে কেউ কথাই বলে না। প্রত্যেক দলের ক্রিকেটাররা নিজেদের মধ্যে হিন্দিতে কথা বলছে।''

News18
News18
কলকাতা: বছরের শুরুতে এক পড়ন্ত বিকেলে সিএবি পরিচালিত ক্লাব ক্রিকেটের ম্যাচ খেলিয়ে ইডেনের পথে ফিরছেন দুই আম্পায়ার।‌ ম্যাচের শেষে যাবতীয় রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এর মধ্যেই ম্যাচ নিয়ে দুই আম্পায়ারের কথোপকথন চলছে। মাঝ রাস্তায় নিউজ18 বাংলার বাংলার ক্রীড়া সাংবাদিকের সঙ্গে দেখা দুজনের।
ক্রীড়া সাংবাদিকতা করার সূত্রে প্রত্যেকেই প্রত্যেকের পরিচিত। সাংবাদিক হিসেবে ম্যাচের খোঁজ নিতে শুরু সাংবাদিকের। কথায় কথায় ম্যাচের বিভিন্ন মুহূর্ত উঠে আসার পাশাপাশি উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।‌ যে তথ্য শুনলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য।
কী ছিল সেই আলোচনায়? ম্যাচে কে জিতেছে এবং কে কেমন খেলল, সেই নিয়ে আলোচনা চলছিল। তখনই একজন আম্পায়ার আরেকজনকে বলে বসেন, “বুঝলে দাদা আজকাল ম্যাচ খেলানো খুব কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ভাষা সমস্যায় জর্জরিত হচ্ছি। নিজের মাতৃভাষাটাই ভুলতে বসেছি খেলানোর সময়।”
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন- সন্তোষ ট্রফি জয়ের কারিগর রবি হাঁসদাকে ব্রান্ড অ্যাম্বাসাডর করতে চায় জেলা পুলিশ
সম্মতি সূচক মাথা নেড়ে দ্বিতীয় আম্পায়ারের উত্তর, “প্রত্যেকটা ম্যাচে গিয়ে এখন মাঠে দেখি বাংলাতে কেউ কথাই বলে না। প্রত্যেক দলের ক্রিকেটাররা নিজেদের মধ্যে হিন্দিতে কথা বলছে। এমনকী খেলার শুরুতে কিংবা আউটের আবেদনের পর কিংবা সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের সঙ্গে যখন কথা বলতে আসছে তখন হিন্দিতেই কথা বলছে। মাঝেমধ্যেই মনে হয় আমরা বাংলায় ম্যাচ খেলাচ্ছি তো? নাকি অন্য কোন রাজ্যে! হিন্দিতেই কথোপকথন চালাতে হচ্ছে। কারণ বেশিরভাগ দলের ক্রিকেটাররাই ভিন রাজ্যের। এদের মাতৃভাষা বাংলা নয়।”
advertisement
প্রথম আম্পায়ার যোগ করলেন, “এবার থেকে হিন্দি বলাটা শিখতে হবে। না হলে বোঝাতেই পারছি না।” বাংলা ক্রিকেটে বাংলায় কথা বলাখেলোয়ারদের সংখ্যা নেই বললেই চলে। এটাই তো খবর। এই কথোপকথন শোনার পর সাংবাদিক প্রশ্ন, “সিএবির নিয়ম অনুযায়ী প্রথম ডিভিশনের ক্লাব ভিন রাজ্যের চারজন খেলোয়াড় রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে, আর ম্যাচ খেলতে পারবে তিনজন। সে ক্ষেত্রে ১১ জন ক্রিকেটার কেন হিন্দিতে বলবে? বাংলাতে কথা বলার লোক অবশ্যই থাকবে।”
advertisement
প্রশ্ন শুনে এক আম্পায়ারের মৃদু হাসি। অন্যজন যোগ করলেন একটি নির্দিষ্ট তথ্য। তবে অনুরোধ নাম লেখা বা বলা যাবে না কোথাও। প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর দুই আম্পায়ার-ই বললেন, “ভিন রাজ্যের খেলোয়াড়ের সংখ্যা অফিসিয়ালি তিন হলেও বেশিরভাগ খেলোয়াড় নিজেদের আধার কার্ড পরিবর্তন করে স্থানীয় ক্রিকেটার হয়ে সিএবি লিগে খেলে যাচ্ছে। ছত্তিশগঢ়, উত্তর প্রদেশ, বিহার-সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে ক্রিকেটাররা কলকাতায় চলে এসে আধার কার্ডের ঠিকানা বদলে স্থানীয় বাসিন্দা হয়ে যাচ্ছে।
advertisement
আরও পড়ুন- মহম্মদ শামির ভবিষ্যৎ কী? আর কি খেলবেন টিম ইন্ডিয়ায়? বড় আপডেট
সিএবিতে সেই ভিত্তিতেই রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে। ‌ফলে ভূমিপুত্র কার্যত উধাও। কয়েকজন আছে অবশ্যই। তবে দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড় যদি হিন্দিতে কথা বলে তখন স্থানীয়রাও তাদের সঙ্গে হিন্দিতেই কথা বলছে। প্রশ্ন, “এ খবর তো নতুন নয়। তবে বঙ্গ ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা কড়া হাতে দমন করার বিষয়টি দেখবে বলেছিল। তার পরও কোনও সুফল পাওয়া যাচ্ছে না?”
advertisement
আম্পায়ারদের স্পষ্ট জবাব, “আগের থেকে আরও বাড়ছে। সিএবির পক্ষে আটকানো সম্ভব নয়, তার কারণ পরিচয় পত্র কী হচ্ছে, সেটা ক্রস ভেরিফিকেশন করে কে দেখবে! তাছাড়া সিএবি জানা সত্ত্বেও কিছু করতে পারছে না। আসলে সর্ষের মধ্যেই তো ভূত। কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত ক্লাব কর্তাদের নির্দেশেই এইভাবে ভিন রাজ্যের খেলোয়াড়রা বাংলার হয়ে খেলে যাচ্ছে। সিএবি আর কী করবে!”
advertisement
এর বেশি কিছু আর বলতে নারাজ দুই আম্পায়ার। তা সত্ত্বেও শেষ একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হলেন দুজনে। ঠিক কোন কোন ক্লাবে এরকমভাবে খেলোয়াড় রয়েছে? আম্পায়ারদের জবাব, “কাকে ছেড়ে কার নাম বলব! খোঁজ নিয়ে দেখুন, প্রথম সারির ক্লাব থেকে দ্বিতীয় ডিভিশনের ক্লাব, সবেতেই রয়েছে এই দুর্নীতি। শেষ কথা বলি, এটা খুঁজতে গেলে ঠক বাছতে গা‌ উজার হবে।‌ বেশি চিন্তা করে লাভ নেই। হিন্দি বলাটাই প্র্যাকটিস করি।”
এই বলে ইডেনে ঢুকে গেলেন দুই আম্পায়ার। এরপর খবরের সত্যতার জন্য সিএবির দু-তিনজন কর্তাকে ফোন করা হল। বেশিরভাগ কর্তাই বিষয়টি জানেন, মেনেও নিলেন খানিকটা। তবে এই নিয়ে কিছু মন্তব্য করতে নারাজ। তবে তাঁদের মধ্যে থেকেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্তা বললেন, “শুধু কি প্রথম ডিভিশন? নিয়ম অনুযায়ী দ্বিতীয় ডিভিশনের বাইরের প্লেয়ার খেলানোই যাবে না। গিয়ে দেখুন সেখানেও প্রচুর ভিনরাজ্যের ক্রিকেটার। অন্যান্য রাজ্যের থেকে বাংলায় ক্রিকেট বেশি। অনেক ক্রিকেটারই তাই এই শীতকালে চলে আসে। সিএবির সঙ্গে জড়িত স্থানীয় বেশ কিছু লোক রয়েছে, যারা এখানে স্থানীয় ঠিকানা জোগাড় করে ক্রিকেটারদের আধার বানিয়ে দেন। তার ফলের সবাই পশ্চিমবঙ্গের খেলোয়াড়। ক্লাব কর্তারাও অনেক কম টাকায় ক্রিকেটারদের দলে পেয়ে যান। আসলে সবাই নিজেদের ভালটাই দেখে। বাংলা ক্রিকেটের স্বার্থের চিন্তা কজনের! “
পাশাপাশি একটা গুরুত্বপূর্ণ কথাও জানালেন সেই কর্তা। বললেন, “বাংলার ক্রিকেট এখন ভিন রাজ্যের খেলোয়াড়দের হাতেই। তারাই চালাবে। সবাই সবকিছু জানবে, কিন্তু কিছু করার নেই। ভোট বড় বালাই।”
view comments
বাংলা খবর/ খবর/খেলা/
বাংলার ক্রিকেট, বাঙালি নেই! আম্পায়ারদের এখন হিন্দি শেখার হিড়িক, চাঞ্চল্যকর ঘটনা
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement