#কলকাতা: হকিতে ভারতের পুরনো ঐতিহ্য ফিরছে। আর ততই ধুঁকছে বাংলার হকি। অলিম্পিকে দেশ সাফল্য নিয়ে এসেছে। হকির পুরনো ইতিহাস ফিরেছে। ৪১ বছর পর অলিম্পিক হকিতে পডিয়াম ফিনিশ করেছে ভারত। পদক না জিতলেও দেশবাসীর মনের মনিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছে মহিলা হকি দল। দেশজুড়ে যখন হকি বন্দনা চলছে বাংলার তখন ধুঁকছে। রেড রোডের ধারে রাস্তায় বিপজ্জনকভাবে চলছে হকির অনুশীলন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনুশীলন করে চলেছেন ভবিষ্যতের শ্রীজেশ, গুরজিতরা।
বছরের পর বছর চলে গেলেও একটা অ্যাস্ট্রোটার্ফ তৈরি করতে পারেনি এই রাজ্যের হকি প্রশাসনে থাকা কর্তারা। অলিম্পিক হকিতে একডজন পদক জেতা হয়ে গেল ভারতের। আগের ১১টি অলিম্পিক পদকজয়ী ভারতীয় দলে ছিলেন বাংলার কোনও না কোনও খেলোয়াড়। এমন অনেকে ছিলেন যাঁদের জন্ম-কর্ম সবই বাংলায়। পরিকাঠামো ও খেলাধুলোর পরিবেশ ভালো থাকায় কেউ কেউ হকি খেলার জন্য এখানে এসে হয়ে উঠেছিলেন বাংলার বাসিন্দা। কয়েকজন খেলার জন্য সাময়িকভাবে এখানে এসে পরে ফিরে গিয়েছেন নিজেদের রাজ্যে। তবে এবার সব শূন্য। ব্রোঞ্জ জেতা ছেলেদের দলে কিংবা চতুর্থ হওয়া মেয়েদের দলে বাংলার কোন খেলোয়ার নেই। কেন নেই এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করতে বঙ্গ হকির অন্দরে খোঁজ নিল নিউজ১৮ বাংলা।
১৯৮০ সালে অলিম্পিকে শেষবার সোনার পদক যেতে ভারতীয় হকি দল। সেই দলে গোলকিপার ছিলেন শিলিগুড়ির বীরবাহাদুর ছেত্রী। আজ তার গলায় শুধু আক্ষেপের সুর। হকিতে পদকজয়ী গুরবক্স সিংও দায়ী করলেন কর্তাদের। বাংলার এই ব্যর্থতার কারণ দুজনের মতেই একটিও অ্যাস্ট্রোটার্ফ না থাকা। আর কর্তাদের উদাসীনতা। আধুনিক হকিতে যখন অ্যাস্ট্রোটার্ফ বাধ্যতামূলক তখন বাংলায় হকি মাঠ বলতে শুধুমাত্র একটি। তাও ঘাসের। বেঙ্গল হকির রেড রোডের ধারের মাঠে বর্ষাকালে জল জমে থাকে। তাই রাস্তার ধারে ভবিষ্যতের তারকাদের নিয়ে চলে অনুশীলন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভবিষ্যতের মনপ্রীত, রানী রামপাল হওয়ার স্বপ্ন দেখে বাংলার ছোট ছোট প্রতিভারা। প্রায় পঞ্চাশ বছর হতে চলল আধুনিক হকিতে অ্যাস্ট্রোটার্ফ বাধ্যতামূলক।
তবু এতদিনে বাংলায় একটি কৃত্রিম মাঠ তৈরি করা সম্ভব হলো না। সাইয়ের একটি অ্যাস্ট্রোটার্ফ আছে বটে। বেটন কাপ করার সময় সেটি ভাড়া নেন কর্তারা। বাকি সবই কোনরকমে ঘাসের মাঠে চলে। জেলাতেও একই হাল। অ্যাস্ট্রোটার্ফ তৈরি করতে না পারার জন্য কর্তারা আঙুল তুলছেন বিগত থেকে বর্তমান সব সরকারের দিকে। সব মিলিয়ে প্রতিশ্রুতি পর প্রতিশ্রুতি প্রত্যেকবারই। তবুও অ্যাস্ট্রোটার্ফ হয় না বাংলায়। সরকারি লাল ফিতে আটকে রয়েছে সব পরিকল্পনা। আর চোখে আঙ্গুল দিয়ে পাশের রাজ্য ওড়িশা দেখিয়ে দিচ্ছে কিভাবে গড়ে তুলতে হয় হকির পরিকাঠামো। ওড়িশার সরকার শুধু হকি দলকে স্পনন্সরই করছে না, তৈরি করেছে একাধিক একাডেমি। আধুনিক স্টেডিয়াম। আর অসংখ্য অ্যাস্ট্রোটার্ফ। পড়শী রাজ্য থেকে কবে শিখবেন বাংলার হকির কর্তারা। উত্তর অজানা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Hockey, Tokyo Olympics 2020