দোহাঃ ভাস্কো দা গামার দেশ চায়নি সুইস দখলের লড়াইয়ে শুরু থেকে মাঠে থাকুন তাঁদের নয়নের মণি। রোনাল্ডোর বদলি হয়ে যিনি নামলেন, তিনি এভাবে যে মন জিতে নেবেন তা ভেবেছিল কি লিসবন। CR7-এর সঙ্গে তাই লিসবনের অলিগলিতে এখন চর্চায় আরও একটা নাম GR26। গনজালো রামোস। তোমার হল শুরু, আমার হলো সারা। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো থেকে গনসালো রামোস। দোহারে এক মায়াবী রাতেই পর্তুগিজ ফুটবলতরীর স্টিয়ারিংয়ের হাত বদল।
সুপারস্টারকে বেঞ্চে বসিয়ে নয়া তারার আর্বিভাব দেখল গোটা ফুটবল বিশ্ব। ৩৭-এর সিআর সেভেনের থেকে ক্যামেরার লেন্স ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে ২১-র তরুণের মুখে। পর্তুগালের কোয়ার্টারে ওঠার রাতে গুগল সার্চের শীর্ষে গনজালো রামোসের নাম। কে এই নায়ক। অভিষেকেই বিশ্বকাপের মঞ্চে হ্য্যাটট্রিক করে বসলেন। ছুঁয়ে ফেললেন ফুটবল সম্রাট পেলের অনন্য নজির। তথ্য বলছে, হ্যাটট্রিকের আগের রাতেও রামোসকে চিনতেন হাতে গোনা কিছু কট্টর বেনফিকার ফ্যান। যদিও এর আগে ক্লাব ও বয়সভিত্তিক জাতীয় দলের হয়ে হ্যাটট্রিক আছে গনজালোর ঝুলিতে। তবে সুইস চকোলেটে কামড় দেওয়ার পর রামোস এখন চর্চার স্পটলাইটে।
২০০১ সালের ২০ জুন জন্ম। ছোট থেকেই ফুটবলের প্রতি ভাললাগা। ২০১৩ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে বেনফিকার ইউথ সিস্টেমে যোগদান করেন রামোস। তবে শুরুতে নাকি রামোস স্ট্রাইকারই ছিলেন না। কিন্তু তাঁর স্ট্রাইকার হওয়া এবং সুইস ম্যাচে বিশ্বকাপে নামার মধ্যে একটা মিল রয়েছে। হেডস্যার স্যান্টোসের সিদ্ধান্তে সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর জায়গায় প্রথম একাদশে জায়গা করে নিয়েছিলেন রামোস। একাডেমিতেও ঘটেছিল এরকমই একই ঘটনা। অসুস্থ স্ট্রাইকারের জায়গায় খেলতে নামিয়েছিলেন কোচ। আর সেখানেও নেমে দু’গোল করেন রামোস। তার পর থেকে পাকাপাকি স্ট্রাইকার।
আরও পড়ুনঃ মারাত্মক কৌশল নিচ্ছে নেদারল্যান্ডস, ফাঁদে পা দিলেই স্বপ্নভঙ্গ হতে পারে আর্জেন্টিনারপেশাদার ফুটবলে তাঁর আত্মপ্রকাশ বেনফিকার রিজার্ভ দলের হয়ে ২০১৯ সালে। এরপর ২০২০ সালের জুলাই মাসে বেনফিকার প্রথম দলে সুযোগ। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। দেশের হয়ে অনুর্ধ্ব ১৭ দলে প্রথম সুযোগ পান। এরপর পর্তুগালের সব বয়স ভিত্তিক দলে তিনি খেলেছেন। ২০১৯ সালে অনুর্ধ্ব-১৯ ইউরো কাপে পর্তুগালের ফাইনালে ওঠার অন্যতম কারিগর। ৫ ম্যাচে ৪ গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়েছিলেন। বর্তমান ক্লাব বেনফিকার হয়ে ৪৫ ম্যাচে করেছেন ২০ গোল। পর্তুগালের হয়ে তাঁর অভিষেক হয় এই বছরের ১৭ নভেম্বর। নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে একটি ফ্রেন্ডলি ম্যাচে খেলেন তিনি। সেই ম্যাচে একটা গোল ও একটা অ্যাসিস্ট করেন রামোস।
চলতি বিশ্বকাপে ঘানা এবং উরুগুয়ে ম্যাচে দুই মিনিট এবং আট মিনিট খেলার সুযোগ পান। তবে প্রথম একাদশে অনুপ্রবেশ সুইৎজারল্যান্ড ম্যাচে রোনাল্ডোকে বেঞ্চে পাঠিয়ে। বািকটা রূপকথা। রামোসের উত্থানের মাঝেই একটা প্রশ্নে ফুটবল জগৎ তোলপাড়। ম্যান ইউ-এর বিদায়ের পর ক্লাবহীন রোনাল্ডো কি জাতীয় দলেও ব্রাত্য হয়ে গেলেন? সিআর সেভেনের জামানা কি শেষ। লিসবন তো নতুন রাজা চেয়েছিল। নতুন সূর্যোদয়ের দিনে হয়তো দেওয়াল লিখন পড়তে পারছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। নতুন রাজা এসেছে, এবার বোধহয় রাজমুকুট ছাড়ার সময় হলো...
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।