#চন্দননগর: মহালয়ার আগেরদিন বাপেরবাড়ি আসে উমা। মহালয়া কাটে পরিবারের সঙ্গে। পরেরদিন চণ্ডীপাঠ। পুজোও শুরু সেদিন থেকেই। দুশো সত্তর বছরের ঐতিহ্যের পুজো ইছাপুরের নবাবগঞ্জের ভট্টাচার্য পরিবারে। ওপারে হুগলির চন্দননগর..... এপারে উত্তর চব্বিশ পরগনার ইছাপুর নবাবগঞ্জ। ওপারে ঐতিহ্যের আলো.. এপারে ঐতিহ্যের সাত পুরুষের পুজো। জমিদারি দম্ভে নয়....টোল পণ্ডিতের মধ্যবিত্ত আবেগে আজও পুজো হচ্ছে উত্তর চব্বিশ পরগনার নবাবগঞ্জের ভট্টাচার্য পরিবারে। দলিল বলছে, পুজোর বয়স দুশো সত্তর। গঙ্গার তীরে নবাবগঞ্জে ভট্টাচার্য পরিবারে পুজো শুরু করেন রামচন্দ্র তর্কালঙ্কার......সালটা ১৭৪৮.......মেদিনীপুর থেকে টোল খুলতে নবাবগঞ্জে আসেন পণ্ডিতমশাই...নতুন জায়গা...ধীরে ধীরে জমে ওঠে টোল... একদিকে টোলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে । অন্যদিকে শিক্ষক হিসেবে প্রভাব বাড়ছে তর্কালঙ্কারের। হয়তো এই সময়েই প্রস্তাব ভট্টাচার্যদের। তাঁদের জমিতে দুর্গাপুজার। অস্থায়ী হোগলা ঘরে হয় প্রথম পুজো...রামচন্দ্র তর্কালঙ্কারের কথা আজ আর কেউ বলে না। কিন্তু তাঁর উমা আজও মেয়েরূপে পুজো পান ভট্টাচার্য দালানে। প্রথমে হোগলা পাতার ঘর। পরে তা পাকা হয়...মজবুত হয় ভিত। এরপর ভালোয়-মন্দে ভট্টাচার্যদের সাতপুরুষ কেটে গেছে । বর্ধিষ্ণু পরিবার আজ ক্ষয়িষ্ণু.....ভাঙছে ঘর....ভাঙছে পরিবার.....তবু উমা এলেই আগল ভাঙে আবেগের.....মহালয়ার আগের দিন ঘরে আসে মেয়ে.....দালানে মহালয়া কাটে পরিবারের সঙ্গে...তারপর শুরু হয় চণ্ডীপাঠ...সোনার গয়নায় সেজে ওঠে উমা......অন্নভোগে শুরু হয়ে যায় পুজো............ সপ্তমী থেকে নবমী, পাঁঠা বলি। দশমীতে ফল বলি। তবে এখনও ভট্টাচার্যদের প্রতিমা বিসর্জনের পরই এলাকার অন্য প্রতিমা নিরঞ্জনের নিয়ম। হাল নেহাতই বেহাল......বাড়ির গায়ে জমা শ্যাওলায় অবিরাম রক্তক্ষরণ...নীরবে....কে জানে আর কতদিন? তবু হাল ছাড়তে নারাজ ভট্টাচার্যরা... পুজো চালাতে লিজ নেওয়া হয়েছে তিনটি পুকুর....মেয়ে আবার আসছে....বাপের বাড়ি সাজছে সাধ্যমত.....এবারও চোখের জল লুকিয়ে দিলদরিয়া নবাবগঞ্জের ভট্টাচায্যিরা ।।।।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bhattacharya family, Chandan Nagar, Durga Puja 2018, Traditional Durga Puja