Durga Puaj 2021: Tamluk: তমলুকের প্রাচীন রাজপরিবারের দুর্গোৎসব রীতি মেনে এখনও আয়োজিত হয় বহিচবেড়িয়া গড়ে

Last Updated:

Durga Puaj 2021: Tamluk: কথিত আছে তাম্রলিপ্ত নগরীর রাজা তাঁর পরিবার ও সপারিষদ দুর্গা ষষ্ঠীর দিন এই রাজ গড়ে এসে পৌঁছতেন। তারপর শুরু হতো পুজো।

তমলুক: অধুনা পূর্ব মেদিনীপুরের সবচেয়ে প্রাচীন নগরী তাম্রলিপ্ত বা তমলুক (Tamluk)। দেবী বর্গভীমা তমলুকের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এক সময় দেবী বর্গভীমা ছাড়া তমলুকে অন্য দেবীর পুজো হত না। এমনকি দেবী দুর্গার আরাধনাও হত না এই তাম্রলিপ্ত নগর বা তমলুক শহরের। তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ির পুজো হত তাম্রলিপ্ত রাজার গড় বহিচবেড়িয়ায়। কথিত আছে তাম্রলিপ্ত নগরীর রাজা তাঁর পরিবার ও সপারিষদ দুর্গা ষষ্ঠীর দিন এই রাজ গড়ে এসে পৌঁছতেন। তারপর শুরু হতো পুজো। একাদশীর দিন আবার গড় থেকে ফিরে যেতেন তমলুক বা নগরের রাজবাড়ীতে। সেই পুজো এখনও হয়ে আসছে প্রাচীন রীতিনীতি অনুসারে।
বর্তমানে তমলুক মহকুমার নন্দকুমার থানার অন্তর্গত এই বহিচবেড়িয়া। বহিচবেড়িয়া গ্রামে এখনও তাম্রলিপ্ত রাজ পরিবারের পুজো হয় (Durga Puja 2021)। সময়ের কাল দণ্ডি বেয়ে এই পুজো হারিয়েছে জৌলুস। কিন্তু এখনও প্রাচীন রীতিনীতি বর্তমান। প্রাচীন রীতি অনুসারে পঞ্চঘটে দেবী দুর্গার আরাধনা হয়। পঞ্চঘটে দুর্গাপুজো আর কোথাও হয় না। বহিচবেড়িয়া রাজগড়ের ইতিহাস ঘাঁটলে উঠে আসে নানান চমকপ্রদ তথ্য। একসময় শুধু তাম্রলিপ্ত রাজার সৈন্য-সামন্ত হাতি ঘোড়া থাকত এই গড়ে। এই রাজ গড়ে আনুমানিক বয়স কত তা আজও নির্ণয় করা যায়নি। অনেক পরে তাম্রলিপ্ত রাজপরিবারের সদস্য এখানে বসবাস শুরু করে। সেই থেকে এখানে রাজপরিবারের বাস।
advertisement
মায়ের আরাধনার প্রথম ঘট স্থাপিত প্রায় এক মাস আগে চপেটি ষষ্ঠী বা লুন্ঠন ষষ্ঠীর দিন। দ্বিতীয় ঘট স্থাপিত হয় দুর্গা ষষ্ঠীর এক সপ্তাহ আগে কৃষ্ণা নবমীর দিন। বাকি তিনটি ঘটের মধ্যে দুটি স্থাপিত হয় ষষ্ঠী অধিবাসের দিন। এবং বাকি ঘটটি স্থাপিত হয় মহা সপ্তমীতে। প্রাচীন তাম্রলিপ্ত বা তমলুক পরগনার এই পুজোর বয়স কত তা নির্ণয় করা যায়নি। এই গড় রাজবাড়ীর প্রবীণ সদস্য শোভন নারায়ন রায় জানান, ‘‘ বহু প্রাচীন এই পুজো। রাজবাড়ীর এই পুজো ঘিরে সেই সময়কার মানুষের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো। ষষ্ঠীর দিন কামান দাগা হত। সেই তোপধ্বনির আওয়াজ শুনে তমলুকের অন্যান্য বনেদী বাড়ির দেবী পূজার ঘট স্থাপন শুরু হত৷’’
advertisement
advertisement
এক মাস আগে থেকে ঘট স্থাপিত হলেও, মূল পূজা শুরু ষষ্ঠীর দিন থেকেই। ওই দিন দেবী প্রতিমার চক্ষুদান করা হত। নিয়ম মেনে এখনো ষষ্ঠীর দিন দেবীর চক্ষুদান করা হয়। ষষ্ঠীর দিনে ঘট স্থাপনের সময় কামান দাগা বন্ধ হয় প্রায় দেড়শো বছর আগে। একবার ষষ্ঠীর দিনে কামান দাগার জন্য কামানে গোলা বারুদ ভরার সময় ভুল হয়। ফলে অগ্নি সংযোগ করার সঙ্গে সঙ্গে কামান ফেটে মারা যান সিপাহিরা। সেই থেকে বন্ধ হয় কামান দাগা। তাম্রলিপ্ত রাজার এই রাজ গড়ে অনেক কামান ছিল। কিন্তু একটা সময় পর ব্রিটিশরা সেগুলি মেদিনীপুরে নিয়ে চলে যায়।
advertisement
আরও পড়ুন : বিপ্লবের গন্ধ মেখে মাতৃ আরাধনা নেতাজির ভিটেবাড়িতে
তাম্রলিপ্ত রাজার গড়ের দুর্গাপুজো তাম্রলিপ্ত বা তমলুক পরগনার সবচেয়ে প্রাচীন পুজো। প্রায় ছশো বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসছে। পুজো ঘিরে চারদিন চলতো মহোৎসব। মায়ের ভোগের প্রসাদ বিতরণ। শোভন নারায়ন রায় জানান, ‘‘ একসময় পুজোয় মায়ের ভোগ রান্না হতো মণ মণ চালের। ষষ্ঠীতে রান্না করা হতো ছয় মণ চালের অন্নভোগ সঙ্গে বহু পদ ব্যঞ্জন। সপ্তমীতে সাত মণ চালের অন্নভোগ সঙ্গে বহু পদ ব্যঞ্জন। অষ্টমীতে আট মণ চালের। নবমীতে নয় মণ চালের এবং দশমীতে দশ মণ চালের অন্নভোগ সঙ্গে বহু পদ ব্যঞ্জন রান্না করা হত। সঙ্গে ছিল ফল ও মিষ্টান্নের নৈবেদ্য।  কমতে কমতে বর্তমানে পুজোর চারদিন পাঁচ সের চালের অন্নভোগ প্রতিদিন রান্না হয়।’’ নিয়ম মেনে সন্ধিপুজো হয়। এই প্রাচীন রাজবাড়ির পুজোতে কখনওই পশু বলি বা কুমড়ো আখ বলি কোনওটাই হয় না।
advertisement
আরও পড়ুন : কয়েকশো বছর ধরে এই সাবেক দুর্গোৎসবের নবমীতে করা হয় মহামারি পুজো
প্রাচীন এই পুজোর জৌলুস কমেছে। ভাটা পড়েছে উন্মাদনায়। পুজো আজ পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। পুজোর দালানে নেই মানুষের সেই চেনা ভিড়। প্রাচীন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে প্রতি বছর চলে দেবী দুর্গার আরাধনা। গৌরবের ইতিহাসে জমে যাচ্ছে ধুলোবালি। তবুও প্রতি বছর ঢাকে কাঠি পড়ার অপেক্ষায় থাকেন রাজ পরিবারের বর্তমান সদস্যরা।
advertisement
(প্রতিবেদন-সৈকত শী)
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Durga Puaj 2021: Tamluk: তমলুকের প্রাচীন রাজপরিবারের দুর্গোৎসব রীতি মেনে এখনও আয়োজিত হয় বহিচবেড়িয়া গড়ে
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement