Bangla News: এও এক যশোদা! নিজের সন্তান রেখে ৯৮৫ গ্রাম ওজনের শিশুকে বাঁচালেন সাথী
- Published by:Shubhagata Dey
- news18 bangla
- Reported by:NAYAN GHOSH
Last Updated:
Bangla News: সন্তানের বয়স এখন আড়াই মাস। মাতৃদুগ্ধের অভাবে একটি শিশুর এমন অসুস্থতার কথা শুনে তিনি আর চুপ থাকতে পারেন নি। তাই এগিয়ে গিয়েছেন যশোদার ভূমিকায়।
দুর্গাপুর: এই কাহিনী অনেকটা দেবকী আর যশোদার মতো। মাতৃত্বের এক বিরল উদাহরণ। জন্ম দিলেন একজন। আর অপর জন সেই সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ পান করিয়ে সুস্থ করে তুললেন। নিজের সন্তানের মতো অন্যের সন্তানকেও দিলেন জীবন। নিজের সদ্যোজাত সন্তানকে পরিবারের কাছে রেখে নিয়মিত যাওয়া আসা করলেন হাসপাতালে।
কাহিনীর সূত্রপাত কয়েকদিন আগে। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন বীরভূমের দুবরাজপুরের বাসিন্দা তনুশ্রী দত্ত দে। যিনি মাত্র সাড়ে সাত মাসের গর্ভাবস্থায় সন্তানের জন্ম দেন। প্রিম্যাচিওর সন্তানের ওজন হয় মাত্র ৯৭৫ গ্রাম। ওই প্রিম্যাচিউর সদ্যোজাতকে বড় করে তুলতে অবশ্যম্ভাবী ছিল মাতৃদুগ্ধ পান করানো। কিন্তু সেই শারীরিক অবস্থা তখনও তৈরি হয়নি মায়ের।
advertisement
আরও পড়ুনঃ শীত আসছে…গিজারে এই ৫ সমস্যার কোনওটা হচ্ছে? কী করবেন জেনে নিন
তনুশ্রীর প্রিম্যাচিওর সন্তানকে বড় করে তুলতে চিকিৎসকরা প্রথমে ভেবেছিলেন অন্য কথা। স্যালাইনের মাধ্যমে মাতৃদুগ্ধের বিকল্প হিসেবে প্রোটিন এবং ফ্যাট দেওয়া হবে। কিন্তু এত ছোট শিশুর ক্ষেত্রে সেলাইনের চ্যানেল করা যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ, তাছাড়াও স্যালাইনের সঙ্গে যে প্রোটিন এবং ফ্যাট দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল, তা মাতৃদুগ্ধের সমকক্ষ নয়। তাই প্রয়োজন পড়ে ব্রেস্ট মিল্ক ডোনারের। এমন অবস্থাতেই এগিয়ে আসেন যশোদা।
advertisement
advertisement
এই যশোদার নাম সাথী ক্ষেত্রপাল। তিনি দুর্গাপুরের মামরা বাজার এলাকার বাসিন্দা। কিন্তু কীভাবে খবর পেলেন সাথী দেবী? কেনই বা এগিয়ে এলেন? প্রসঙ্গত, তনুশ্রী দেবীর সন্তানের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং ডোনার চেয়ে তার পরিবার যোগাযোগ করে দুর্গাপুর ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে।এই সূত্রেই খবর পান সাথী ক্ষেত্রপাল। তিনি সদ্য মা হয়েছেন। তার সন্তানের বয়স এখন আড়াই মাস। মাতৃদুগ্ধের অভাবে একটি শিশুর এমন অসুস্থতার কথা শুনে তিনি আর চুপ থাকতে পারেননি। এগিয়ে গিয়েছেন যশোদার ভূমিকায়।
advertisement
আরও পড়ুনঃ বাড়িতে থাকুক এই গাছ, ক্যানসার-টিউমর কাছে ঘেঁষবে না, কীভাবে ব্যবহার করবেন পাতা?
নিজের সন্তানকে যেমন ভাবে বড় করে তুলছেন, তেমনভাবেই তনুশ্রী দেবীর সন্তানকেও মাতৃদুগ্ধ পান করিয়েছেন তিনি। নিয়মিত তিন সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে গিয়ে তনুশ্রী দেবীর সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ পান করিয়েছেন সাথী। এ প্রসঙ্গে সাথী ক্ষেত্রপাল জানিয়েছেন, বাচ্চাটির অসুস্থতার কথা শুনে তিনি আর চুপ থাকতে পারেননি। তাই এই খবর পাওয়া মাত্রই তিনি ব্রেস্ট ফিডিং ডোনার হতে রাজি হয়ে যান। সাথী ক্ষেত্রপালের এই সিদ্ধান্তে তাঁর পাশে ছিল পরিবারও। তাই তিনি দুর্গাপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে নিয়মিত যাতায়াত করেছেন। প্রি-ম্যাচিওর হয়ে জন্ম নেওয়া ওই শিশুকে ব্রেস্ট মিল্ক খাইয়ে সুস্থ রেখেছেন।
advertisement
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ৯৭৫ গ্রাম ওজনের জন্ম নেওয়া ওই শিশুটি এখন অনেকটাই সুস্থ। মাতৃদুগ্ধের যে প্রয়োজনীয়তা ওই শিশুটির ছিল, তা সে পেয়েছে সাথী দেবীর কল্যাণে। সুস্থ রয়েছে সাথীর আড়াই মাসের সন্তানটিও। সাথীর রূপ দেখে ধন্যবাদ দিয়েছেন তনুশ্রীর দাদা। তিনি বলেছেন, আমার বোন সন্তানের জন্ম দিয়েছে। কিন্তু ওই সন্তানকে বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাথী ক্ষেত্রপাল। তার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। একইসঙ্গে তিনি ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদেরও ধন্যবাদ দিয়েছেন।
advertisement
প্রসঙ্গত, আগেও একইভাবে বেস্ট মিল্ক ডোনারের ব্যবস্থা করেছিল দুর্গাপুরের ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এই নিয়ে দু’বার তারা সদ্যোজাত সন্তানের মুখে মাতৃদুগ্ধ তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন। উল্লেখ্য, প্রি-ম্যাচিওর অবস্থায় জন্ম নেওয়া শিশুদের প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে মুম্বইয়ে প্রথম ব্রেস্টমিল্ক ব্যাঙ্ক তৈরি করা হয়। আমাদের রাজ্যেও এসএসকেএম হাসপাতালে ব্রেস্টমিল্ক ব্যাঙ্ক রয়েছে। তবে দুর্গাপুরের শিশুটির জন্য যেভাবে নিজের সন্তানকে রেখে সাথী এগিয়ে গিয়েছেন, তার এমন মাতৃত্বকে স্যালুট জানিয়েছেন মানুষ।
advertisement
Nayan Ghosh
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
October 31, 2023 5:57 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
Bangla News: এও এক যশোদা! নিজের সন্তান রেখে ৯৮৫ গ্রাম ওজনের শিশুকে বাঁচালেন সাথী